অর্পিতা বনিক, বনগাঁ: অন্ধকারের মধ্যেও আলোর রেখার যে দেখা মেলে তা আবারও প্রমাণ পাওয়া গেল সীমান্ত শহর বনগাঁয় ৷
এই শহরের স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির মহিলারা কচুরিপানা দিয়ে তৈরি করছেন রাখী। সেই রাখী পাঠানো হল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে,পাশাপাশি ভারতের রাষ্ট্রপতি, এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় -সহ পাঁচ দেশের রাষ্ট্রপ্রধানকে। বুধবার দুপুরে পুর সভার চেয়ারম্যান গোপাল শেঠ সহ পুরসভার প্রতিনিধি বনগাঁ ছয়ঘরিয়া প্রধান প্রসেনজিৎ ঘোষ এবং পঞ্চায়েত সদস্য পরিতোষ বিশ্বাস৷ এদিন পেট্রাপোল সীমান্তের নোম্যান্সল্যান্ডে গিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য কচুরিপানার রাখীর সম্ভার ও মিষ্টি তুলে দিলেন সে দেশের প্রতিনিধিদের হাতে । সেখানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের যশোরের শার্শা উপজেলার সাংসদ শেখ আফিল উদ্দিন ৷ দেখুন ভিডিও
বনগাঁয় ইছামতী তার নাব্যতা হারিয়ে মৃতপ্রায় এখন ৷ তার গতিপথে দীর্ঘদিনের বাধা হয়েছে দাঁড়িয়ে আছে পলি। আর তার বুক বছরভরই ভরে থাকে কচুরিপানায়৷। স্থানীয় বাসিন্দারা বহুবার কচুরিপানা পরিষ্কারের দাবি জানিয়েছিল সরকারের দুয়ারে৷
যদিও এলাকার মানুষের দাবিতে বনগাঁ পুরসভা ও সেচ দফতর মাঝেমধ্যে সে কাজও করেছে বেশ কয়েকবার। তবুও অযত্নে কে জানে ইছামতীতে জলের বদলে দেখা মেলে শুধুই কচুরিপানার। অথচ এই ইছামতীর নামেই নতুন জেলা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
কেন এই ইছামতীর এমন করুণ ছবি? এ প্রশ্ন অন্য বিষয় ভিন্ন আলোচনার ৷ দীর্ঘ সমস্যায় জর্জরিত ইছামতী তার বুকে জন্ম নেওয়া কচুরিপানা নতুন দিশা দেখাচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদেরকে৷
বনগাঁর স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা দিন রাত এক করে এই রাখী তৈরি করছেন। শুধু বাংলা বাজারই নয়, আন্তর্জাতিক বাজারেও এই রাখী নজর কাড়বে, বলে আশাবাদী বনগাঁর পুরপ্রধান ৷
পুরপ্রধান গোপাল শেঠের কথায়, “২২ শ্রাবণকে অন্যমাত্রা দিতে আমরা এই শ্রদ্ধা জানালাম। রবীঠাকুরও রাখী বন্ধনের মাধ্যমেই সৌভ্রাতৃত্বের বার্তা দিয়েছিলেন। আমাদের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা এই বিশেষ রাখী তৈরি করেছেন। আমরা এই হস্তশিল্পকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারছি। আমাদের স্বনির্ভর গোষ্ঠী প্রায় ১২০০ মতো। সেখানে ১২ হাজার মহিলা আছেন। যাঁরা কাজ করতে চায় তাঁদেরকেউ কাজ দেওয়া হবে৷ বাইরে এই ধরনের হস্তশিল্পের দারুণ চাহিদা আছে। সেই দেশগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। বনগাঁ পুরসভা চাইবে বিশ্বময় এই কাজটা ছড়িয়ে দিতে।