দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বিজেপি সরকার ক্ষমতায় এলে চব্বিশের পর ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হবে, ‘গ্যারান্টি’ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ৷

দিল্লিতে বসতে চলেছে জি-২০ বৈঠক। গোটা বিশ্বের অধিকাংশ দেশের তাবড় প্রতিনিধিরা উপস্থিত হয়েছেন রাজধানী শহরে। তার আগে নতুন ভাবে গড়ে ওঠা প্রগতি ময়দানের আইটিপিও (ITPO) কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

সেখানে জনতার উদ্দেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২৪-এ ফের NDA এন ডি এ জোট ক্ষমতায় আসবে বলে আগেই দাবি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী । এবার তাঁর তৃতীয়বারের শাসনকালে আমেরিকা-চিনের পরেই ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিলেন তিনি।

বুধবার প্রগতি ময়দানে আইটিপিও (ITPO) কমপ্লেক্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের প্রথম পর্বের শাসনকালে ভারত বিশ্বের অর্থনীতিতে দশম স্থানে উঠে এসেছে। আমার দ্বিতীয় পর্বের শাসনকালে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হয়েছে ভারত। এই ট্র্যাক রেকর্ড অনুসারে আমি দেশবাসীকে বিশ্বাস করিয়ে দেব, আমার তৃতীয় পর্বের শাসনকালে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশের মধ্যে থাকবে ভারত।”

এদিন অত্যাধুনিক মানের ইন্টারন্যাশনাল এক্সিবিশন-কাম-কনভেশন সেন্টার ‘ভারত মণ্ডপম’-এর উদ্বোধন করে ভারতের পরিকাঠামোর আমূল বদল হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর জমানার উন্নয়নের পরিসংখ্যান দিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “পূর্ব থেকে পশ্চিম, উত্তর থেকে দক্ষিণ, ভারতের পরিকাঠামো বদলে গিয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের সর্বোচ্চ রেলব্রিজ ভারতে, সর্বোচ্চ উচ্চতায় দীর্ঘতম টানেল ভারতে, মোটর চলার সর্বোচ্চ রোড, দীর্ঘতম স্টেডিয়াম, দীর্ঘতম স্ট্যাচু- সবই ভারতে রয়েছে।”

পূর্বতন সরকারের উন্নয়নের সঙ্গে তাঁর সরকারের উন্নয়নের তুলনা টেনে প্রধানমন্ত্রী মোদী জানান, বিগত ৬০ বছরে দেশের মাত্র ২০ হাজার কিলোমিটার রেললাইনে বৈদ্যুতিকরণ করা হয়েছে। আর তাঁর জমানায় গত ৯ বছরে ৪০ হাজার কিলোমিটার রেললাইনে বৈদ্যুতিকরণ হয়েছে। এছাড়া প্রতি মাসে ৬ কিলোমিটার মেট্রো লাইন, ২০১৪ সাল থেকে ৪ লক্ষের কম গ্রামীণ রাস্তা নির্মাণ, দিল্লি বিমানবন্দরের ধারণ ক্ষমতা ৫ কোটি থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ৭ কোটি করা হয়েছে বলেও জানান নমো।

 ভারতের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশের অর্থনীতির এই তড়িৎ গতির উত্থান কীভাবে হবে সে প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিনিয়োগের পরিমাণ বাড়াতে সরকারি স্তরে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করেছে ভারত। তা ছাড়াও ভারতের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী, ডিজিটাল প্রযুক্তির উপর জোরও দেশের অর্থনীতিকে আরও মজবুত করবে।

আইটিওপি সেন্টারের নবনির্মাণ প্রসঙ্গে নাম না করে বিরোধীদের তোপ দেগে প্রধানমন্ত্রীর তোপ, ‘ভারত মণ্ডপম’-এর মতো সেন্টার দেশের মানকে বিশ্বের দরবারে বাড়াবে এবং নেতিবাচক মানসিকতার মানুষেরা এই কাজ বন্ধ করতে চেয়েছিলেন।

বস্তুত, আমেরিকান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্ক গোল্ডম্যান স্যাকস একটি রিপোর্ট দিয়েছিল বহু আগে। তারা দাবি করেছিল, আগামী কয়েক দশকের মধ্যে ভারত যে শুধুমাত্র জার্মান ও জাপানকেই হারিয়ে দেবে তা নয়, একইসঙ্গে ভারত আমেরিকাকেও অতিক্রম করে চলে যাবে। এমনকী তারাও এও বলেছিল, আজ থেকে প্রায় ৫০ বছর পর অর্থাৎ ২০৭৫ সালের মধ্যে, ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে। 

আইএমএফ-এর রিপোর্ট অনুসারে, ২০২৭ সালের মধ্যে ভারত, জাপান ও জার্মানিকে পিছনে ফেলে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২৭ সালে জাপানের অর্থনীতি হবে ৫.২ ট্রিলিয়ন ডলার। জার্মানির অর্থনীতি হবে ৪.৯ ট্রিলিয়ন ডলার।

একইসঙ্গে ভারত ততদিনে ৫.৪ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত হবে। অর্থাৎ ২০২৭ সালে ভারতের চেয়ে এগিয়ে থাকবে শুধুমাত্র আমেরিকা ও চিন। এখন মোদীজির আশ্বাস কতটা সত্যি হয় সেটাই দেখার।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here