দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ “অতিথি দেব ভব”- এই মন্ত্রেই বিশ্বাসী ভারতীয়রা। অতিথিদের যেমন ঈশ্বরের সমতুল্য মনে করা হয় ভারতীয় সংস্কৃতিতে, তেমনই আবার খালি হাতেও কারোর বাড়িতে যাওয়া হয় না। প্রধানমন্ত্রী মোদীও সেই রীতি বজায় রাখলেন।”

তিন দিনের মার্কিন সফরকালে বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁকে স্বাগত জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও মার্কিন ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন। রাষ্ট্রীয় সফরের এই সাক্ষাতে এদিন দুই রাষ্ট্রপ্রধান পরস্পর পরস্পরকে উপহারে ভরিয়ে দিয়েছেন। ষা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উষ্ণতার বার্তা দিচ্ছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মধ্যে গাঢ় বন্ধুত্বের সম্পর্ক। বন্ধুর পছন্দের কথাও জানেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সেই কারণেই প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে উপহার দিলেন “দ্য টেন প্রিন্সিপাল উপনিষদ”। তবে এই উপহারের পিছনেও রয়েছে কাহিনি। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রায় সময়ই উল্লেখ করেছেন, তিনি আইরিশ কবি উইলিয়াম বাটলার ইটসের ভক্ত। নিজের বক্তব্যেও মাঝে-মধ্যেই ইটসের কবিতার লাইন উদ্ধৃত করেছেন তিনি।

‘দ্য টেন প্রিন্সিপালস অফ উপনিষদ’ নামে ওই বইটি লন্ডনের ফেবার অ্যান্ড ফেবার প্রথম মুদ্রণে প্রকাশিত। বইটি ছাপা হয়েছিল গ্লাসগো ইউনিভার্সিটি প্রেসে। ১৯৩৭ সালের ডব্লিউবি ইটস ভারতীয় উপনিষদের এই ইংরেজি অনুবাদ করেছিলেন। তাঁর সঙ্গে বইটি লিখেছিলেন শ্রী পুরোহিত স্বামী।

আইরিশ কবি আবার ভারতীয় সংস্কৃতি ও আধ্যাত্মিকতায় ব্যাপক প্রভাবিত ছিলেন। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্বও সর্বজনবিদিত। এই আইরিশ কবির হাত ধরেই পশ্চিমী দুনিয়ায় জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা গীতাঞ্জলী। ১৯৩৭ সালে ইটস ভারতীয় উপনিষদের ইংরেজি সংস্করণ প্রকাশ করেন শ্রী পুরোহিত স্বামীর সাহায্য নিয়ে। এটিকে ইটসের শেষ কাজ বলেই মনে করা হয়। “দ্য টেন প্রিন্সিপাল উপনিষদ” নামক ওই বইয়ের প্রথম সংস্করণই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে উপহার দিলেন।

https://twitter.com/ANI/status/1671697199145832448?t=UKWMtfkDnGBfDR-khPODgw&s=19

এরই সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে একটি নকশা করা চন্দন কাঠের বাক্স উপহার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই চন্দনকাঠ সংগ্রহ করা হয়েছে কর্নাটক থেকে। তাতে নকশা করেছেন জয়পুরের শিল্পীরা। ওই বাক্সের মধ্যে আবার রয়েছে ‘দশ দান’। সহস্র পূর্ণচন্দ্র উদযাপনের সময়ে দশ দান দেওয়া ভারতীয় সংস্কৃতি ও শাস্ত্রীয় রীতি। পূর্ব ভারতে এই রীতি বিশেষ দেখা যায় না। উত্তর ভারতে সহস্ত্র পূর্ণচন্দ্র উদযাপন বড় ব্যাপার। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর জন্য সহস্র পূর্ণচন্দ্র অনুষ্ঠান উদযাপন করেছিলেন প্রমোদ মহাজন। জীবদ্দশায় কোনও ব্যক্তি এক হাজার তম পূর্ণিমার চাঁদ দেখতে পেলে এই অনুষ্ঠান করা হয়। যে দশ দান করা হয় তা হল, গো-দান, ভূ-দান, তিল দান, হীরণ্যদান, অহ্যদান, ধান্যদান, বস্ত্র দান, গুড়দান, রৌপ্যদান এবং লবণ দান।

গো-দানের স্মারক হিসাবে বাইডেনকে যে রূপোর নারকেল উপহার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী, তা বাংলার স্বর্ণ শিল্পীদের নকশা করা। ভূ-দান হিসাবে মহীশূরের এক টুকরো চন্দন কাঠ দেওয়া হয়েছে, তামিলনাড়ু থেকে আনা হয়েছে তিল, রাজস্থানের শিল্পীরা নকশা করে দিয়েছেন একটি রূপোর মুদ্রায়। সেই সঙ্গে গুজরাত থেকে আনা হয়েছে লবণ।

https://twitter.com/ANI/status/1671698306542764034?t=HWMzCr2nC_DeEzj-uEVWXQ&s=19

এ ছাড়া ওই বাক্সের মধ্যে রয়েছে একটি গণেশ মূর্তি ও একটি রূপোর প্রদীপ। গণেশ বিঘ্ন নাশক, সিদ্ধি বিনায়ক। গণেশের মূর্তি ও প্রদীপটি তৈরি করেছেন কলকাতার এক স্বর্ণকার। পাঁচ প্রজন্ম ধরে তাঁরা স্বর্ণশিল্পীর কাজ করছেন।

https://twitter.com/ANI/status/1671698579491262465?t=stmjalWGKsR2XquGMSuEGg&s=19

https://twitter.com/ANI/status/1671700321771601921?t=2cLZ9MIsVZWVdsahK7xY1Q&s=19

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here