দেশের সময় : একশো দিনের কাজ সহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে টাকা পাঠিয়েছে কেন্দ্র সরকার। আর সেই টাকায় তোলাবাজদের পকেট ভরেছে বাংলার তৃণমূল সরকার। শনিবার বিকেলে শিলিগুড়ির কাওয়াখালির সভা থেকে এভাবেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

বাংলার সরকারকে গরিব বিরোধী আখ্যা দিয়ে মোদী তোপ, একশো দিনের কাজ করা গরিব শ্রমিকরা যাতে মজুরি পান, সেজন্য টাকা পাঠিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু সেই টাকায় তোলাবাজদের পকেট ভরতে বাংলার সরকার ২৫ লক্ষ ভুয়ো জবকার্ড বানিয়েছিল। রেশন দুর্নীতি নিয়েও শিলিগুড়ির সভা থেকে কড়া ভাষায় তৃণমূলকে আক্রমণ করেছেন মোদী। বলেন, কাউকে যাতে খালি পেটে ঘুমোতে যেতে না হয়, সেজন্য আরও পাঁচ বছর বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার।

কিন্তু কংগ্রেস, তৃণমূল ও সিপিএম মিলে ফ্রি রেশনের বিরোধিতা করছে। গরিব মানুষের জন্য বাংলায় যে রেশন এসেছে, তা লুট হয়েছে। দুর্নীতি হয়েছে।

রেশন দুর্নীতিতে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রী জেলে। কেন্দ্র সরকার আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প চালু করেছে। এর মাধ্যমে গরিব মানুষ বিনা পয়সায় পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার সুযোগ পাবেন। কিন্তু বাংলার তৃণমূল সরকার এ রাজ্যে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প চালু করতে দেয়নি বলে অভিযোগ করেন মোদী।

একইসঙ্গে তাঁর অভিযোগ, গরিব মানুষের জন্য ভর্তুকিতে উজ্জ্বলা যোজনায় রান্নায় গ্যাসের সংযোগ দিচ্ছে কেন্দ্র। কিন্তু বাংলায় ১৪ লক্ষেরও বেশি আবেদন আটকে রেখেছে তৃণমূল সরকার। ফলে গরিব মানুষ এর সুবিধা পাচ্ছেন না। আসলে মানুষের সমস্যা নিয়ে তৃণমূলের কোনও মাথাব্যথা নেই। তারা শুধু নিজেদের আখের গোছাতেই ব্যস্ত।

পরিবারতন্ত্র নিয়ে কংগ্রেসকে নিশানা করেন মোদী। বলেছেন, ইন্ডিয়া জোটের শরিকরা বিভেদের রাজনীতি করছে। আমাদের লক্ষ্য, বিকশিত ভারত। দেশের সকলে তাই এখন বলছে, আমি মোদী পরিবার।

২০১৪ সালে লোকসভা ভোটের আগে এসে পাহাড়ে গোর্খাদের স্বপ্নপূরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু আজও তা পূরণ হয়নি। এরই জেরে বিজেপির পাশ থেকে সরে দাঁড়িয়েছে এককালের শরিক মোর্চার একটি বড় অংশ। আবারও ভোটের মুখে গোর্খাদের দাবিপূরণের আশ্বাস শোনা গেল প্রধানমন্ত্রীর মুখে। বললেন, পাহাড়ের মানুষকে তৃণমূল সরকার কখনওই গুরুত্ব দেয়নি। তারা শুধু জমি দখলেই ব্যস্ত থেকেছে। কিন্তু গোর্খাদের সমস্যা নিয়ে আমরা সংবেদনশীল।

গোর্খাদের সমস্যা সমাধানের কাছে পৌঁছে গিয়েছি আমরা। শিলিগুড়িতেও মোদীর ভাষণে উঠে এসেছে সন্দেশখালি প্রসঙ্গ। বলেছেন, সন্দেশখালিতে মা-বোনেদের উপর যে অত্যাচার হয়েছে, দেশজুড়ে আজ তা চর্চা হচ্ছে। তবে বন্ধ চা বাগান নিয়ে কিংবা রুগ্ণ চা বাগান নিয়ে মোদীর মুখে তেমন কিছু শোনা যায়নি। এর আগে কেন্দ্রের তরফে বন্ধ চা বাগান অধিগ্রহণের কথা বলা হলেও তা কেন হল না, তা নিয়ে টুঁ শব্দ করেননি প্রধানমন্ত্রী।

তবে ক্ষুদ্র চা চাষিদের জন্য যে কিষাণ ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হয়েছে, তা মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি।

সরকারি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, গত দশ বছরে উত্তরবঙ্গ তথা বাংলার উন্নয়নে বিশেষ জোর দিয়েছে মোদী সরকার। উত্তরবঙ্গে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রীর দাবি, এতে বাংলাদেশের সঙ্গেও যোগাযোগ অনেক ভালো হবে। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here