অর্পিতা বনিক, বনগাঁ: প্রার্থীকে অপহরণ, বোমাবাজি, বিরোধীদের পথ অবরোধ! জেলায় জেলায় বিক্ষিপ্ত অশান্তির মধ্যেই মঙ্গলবার সকাল ৮টায় শুরু হয় ভোট গণনা ৷

এদিন উত্তর২৪পরগনার বনগাঁয় কাউন্টিং সেন্টার দীনবন্ধু মহাবিদ্যালয়ের ভিতরে মারামারি, বাইরে বোমাবাজি, মাথা ফাটল তৃণমূল নেতাদের ৷ এক কথায় রণক্ষেত্রের আকাকার ধারণ করে গোটা এলাকা৷

বনগাঁয় কাউন্টিং সেন্টারের ভেতরেই হাতাহাতিতে জড়ালো শাসক এবং বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা৷ আর এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ালো দীনবন্ধু মহাবিদ্যালয়ে। অভিযোগ, কাউন্টিং সেন্টারে বহিরাগতদের ঢোকাচ্ছে তৃণমূল। আর এই অভিযোগেই মারামারি শাসক বিরোধীর মধ্যে। এর ফলে মঙ্গলবার রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গণনা কেন্দ্র। 

সূত্রের খবর,এদিন বাঁশ হাতে দৌড়াদৌড়ি, মারপিট মাথা ফাটল তৃণমূল নেতা ও তৃণমূল প্রার্থীদের ৷ গণনা কেন্দ্রের ভিতরে বহিরাগতদের ঢোকাচ্ছে এই অভিযোগ তুলে গণনা কেন্দ্রের সামনে বিক্ষোভ দেখায় বিরোধীরা। 
বিরোধী দলের পক্ষ থেকে অভিযোগ, তৃণমূল কংগ্রেসের বহু বহিরাগত যারা কাউন্টিং সেন্টারের ভিতরে ঘোরাঘুরি করছে এবং বিরোধীদের হুমকি দিচ্ছে।  গণনা কেন্দ্রের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে বিরোধী দলের কাউন্টিং এজেন্টরা। দেখুন ভিডিও

পুলিশ ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ কয়েকজনকে গণনা কেন্দ্রের ভিতর থেকে বের করে দেয়। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ালো বনগাঁ দীনবন্ধু মহাবিদ্যালয় এর কাউন্টিং সেন্টারে।  এই ঘটনায় দুজন জখম হয়েছেন। তারা তৃণমূল কর্মী বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে স্বরুপ বিশ্বাস নামে একজন তৃণমূল প্রার্থী রয়েছেন।  বাড়ি সুটিয়া এলাকায়। দ্বিতীয়জন স্বপন বিশ্বাস একজন  তৃণমূল নেতা। তাদের মাথা ফেটে গেছে। ঘটনার পর দ্রুত তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।

এই ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
পাশাপাশি, বনগাঁ কলেজের কাউন্টিং সেন্টারের বাইরে ব্যপক বোমাবাজি হল এদিন৷ সূত্রের খবর, কাউন্টিং চলাকালীন সকাল ১১ টা নাগাদ কলেজের পেছন দিকে এনসিসি অফিসের কাছে পর পর বোমা পরতে শুরু করে। এই ঘটনায় ভোটকর্মীদের ভেতরে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।

এদিন বনগাঁতেও গণনা কেন্দ্রের বাইরে সকাল থেকেই হাজার হাজার কর্মী সমর্থকদের জমায়েত ছিল চোখে পড়ার মতো ৷

মঙ্গলবার দুপুর ২টোর আগেই গ্রাম পঞ্চায়েত আসনে ১০ হাজারের গণ্ডি টপকায় তৃণমূল, অনেকটাই পিছিয়ে পড়ে বিজেপি এবং বাম-কংগ্রেস জোট ৷

বাংলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে ‘প্রহসন’ হয়েছে বলে ভোটের দিন থেকেই সমালোচনা করছিলেন বিজেপি নেতারা। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ইতিমধ্যে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন।

ভোটে সরকারের ভূমিকার তীব্র নিন্দা করেছিলেন সিপিএম সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ সেলিম ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও।

কিন্তু তাঁদের কথামতো এই প্রহসনের পঞ্চায়েতে এখনও পর্যন্ত যা ট্রেন্ড তাতে বিজেপির চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বাম-কংগ্রেস । রাজ্যের সর্বত্র বাম-কংগ্রেসের মধ্যে সুসংহত জোট হয়নি। কোথাও তা হয়েছে, কোথাও দুই দলই প্রার্থী দিয়েছে।

অর্থাৎ বিজেপির তুলনায় বেশি আসনে এগিয়ে রয়েছে বাম-কংগ্রেস। তবে এটা একেবারেই প্রাথমিক ট্রেন্ড ছিল ৷ উত্তরবঙ্গের জেলাগুলি থেকে এখনও গ্রাম পঞ্চায়েতের ফলাফল ঠিকমতো আসেনি। সেখানে বিজেপির শক্তি বামকংগ্রেসের চেয়ে বেশি।

দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত হিসাব মোট ৬৩২২৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৬৩২১৯টি আসনে ভোট হয়েছে। দুপুর সাড়ে ১২টায় রাজ্য নির্বাচন কমিশন যে পরিসংখ্যান জানাচ্ছে তাতে দেখা যাচ্ছে, ৯৪২টি আসনে জিতে গিয়েছে শাসক দল। তৃণমূল এগিয়েছিল আরও ২৫৯০টি আসনে।

বিজেপি জিতে গিয়েছে ১০৩টি আসনে। তারা এগিয়ে রয়েছে ৬৬৪টি আসনে।
বামেরা জিতে গিয়েছে ৪৭টি আসনে। এগিয়ে রয়েছে ৫৫৮ আসনে। আর কংগ্রেস ২৬টি আসনে জিতে গিয়েছে। সেই সঙ্গে ১৬৭টি আসনে এগিয়ে রয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here