দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ জলপাইগুড়ি: মাল নদীতে প্রতিমা বিসর্জন দিতে এসেছিলেন অনেকেই। নদীতে নেমে মাকে বিদায় জানাচ্ছিলেন তাঁরা। হঠাৎই হড়পা বানে ভাসিয়ে নিয়ে যান অনেককেই। বাড়তে থাকে মৃতের সংখ্যা। সেই দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত অনেকে। এই দুর্ঘটনায় মৃত ও আহত পরিবারদের জন্য আর্থিক ক্ষতিপূরণের কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বিসর্জনে বিষাদের আবহাওয়া নেমে এসেছে জলপাইগুড়ির মালবাজারে। গতকাল রাতে প্রথমে দু’জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত উদ্ধারকার্যে বেড়েছে মৃতের সংখ্যা। জলপাইগুড়ির এই ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তিনি জানিয়েছেন, এই কঠিন সময়ে মৃতের পরিবারদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাই। মাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে ১৩ জনের। এখনও পর্যন্ত ৭০ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। মমতা আরও বলেন, মৃতদের পরিবারপিছু ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য করা হবে। আহতদের ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হবে।

https://twitter.com/MamataOfficial/status/1577901584843177985?t=0YurB3SfC76xcX1tHgCLmw&s=19 প্রশাসনের তরফ থেকে মৃত ব্যক্তিদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তাঁরা হলেন, তপন অধিকারী, বয়স ৭২, ঊর্মি সাহা, বয়স ১৩, রুমুর সাহা, বয়স ৪২, আনস পণ্ডিত বয়স ৮, বিভা দেবী, বয়স ২৮ , শুভাশিস রাহা, বয়স ৬৩, সুস্মিতা পোদ্দার, বয়স ২২ এবং শোভনদ্বীপ অধিকারী, বয়স ২০। আজ সকালেও উদ্ধারকার্য চলছে। 

প্রশাসনের তরফ থেকে মৃত ব্যক্তিদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তাঁরা হলেন, তপন অধিকারী, বয়স ৭২, ঊর্মি সাহা, বয়স ১৩, রুমুর সাহা, বয়স ৪২, আনস পণ্ডিত বয়স ৮, বিভা দেবী, বয়স ২৮ , শুভাশিস রাহা, বয়স ৬৩, সুস্মিতা পোদ্দার, বয়স ২২ এবং শোভনদ্বীপ অধিকারী, বয়স ২০। আজ সকালেও উদ্ধারকার্য চলছে। 

এদিকে গতকালের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর দফতর থেকে টুইট করে জানানো হয়েছে, ‘জলপাইগুড়িতে প্রতিমা নিরঞ্জনের সময় যে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে, তাতে আমি ক্ষুব্ধ। এই দুর্ঘটনায় যাঁরা এই দুর্ঘটনায় যাঁরা নিজেদের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন তাদের প্রতি সমবেদনা রইল।’ পাশাপাশি কেন্দ্রের তরফ থেকেও আর্থিক সাহায্যের কথা বলা হয়েছে। মৃতদের পরিবারপিছু ২ লাখ টাকা ও আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা জানান মোদী।

এই ঘটনার জেরে প্রশাসনিক গাফিলতির অভিযোগ উঠছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিমা নিরঞ্জনের সময় তেমন কোনও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা প্রশাসন নেয়নি। এমনকি সেখানে উপস্থিত সিভিল ডিফেন্স কর্মীদের সংখ্যা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যেখানে হাজার হাজার মানুষের সমগম হচ্ছে, সেখানে কেন মাত্র ৮ জন সিভিল ডিফেন্স কর্মী ছিলেন? যদি এমন না হত তাহলে দ্রুত উদ্ধারকাজ সম্ভব হত। বিরোধীরা এই ঘটনায় প্রশাসনিক ত্রুটির অভিযোগ তুলছে।

রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী থেকে সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম সকলেই একই প্রশ্ন তুলছেন। যদিও স্থানীয় প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, এটা দুর্ঘটনা। দ্রুতই উদ্ধারকার্য শুরু হয়েছে।

নদীর পাড়ে থাকা প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছিলেন, বুধবার সন্ধ্যায় দুর্গাপ্রতিমার ভাসান হচ্ছিল মাল নদীতে। সেইসময়েই আচমকা বিপর্যয়টি ঘটে। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই নদীর জলে ভেসে যান বহু মানুষ। মাঝ নদীতে গিয়ে আটকে পড়ে গাড়িও। খবর পেয়েই তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকল বাহিনী এবং পুলিশ। আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার করতে সেইসময় জেসিবি নামায় প্রশাসন।

গতকাল থেকেই এই ঘটনায় উত্তাল হয়েছে রাজ্য। সেখানের বাসিন্দাদের বক্তব্য, নদীর গতিপথ ঘোরানো হয়েছে, মানুষজন বিসর্জনের জন্য নদীর মাঝ বরাবর গিয়েছিলেন। অন্যদিকে প্রশ্ন উঠছে, অই নদীতে হড়পা বান আসে জানার পরেও কেন সেখানে বিসর্জনের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here