দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ঠাকুরনগরগামী মতুয়াদের গাড়ি আটকে মারধরের অভিযোগ উঠল। আহত হয়েছেন দু’জন। এই ঘটনার পরেই কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের দ্বারস্থ হন মতুয়ারা। সবকিছু জানার পরেই শান্তনু ঠাকুর ঘোষণা করেন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা না নিলে মতুয়ারা বুঝে নেবে।

ঠাকুর বাড়িতে যাওয়ার পথে মতুয়া পুণ্যার্থীদের বাসে দুষ্কৃতী হামলার অভিযোগ। গত ৩০ তারিখে ঠাকুরবাড়িতে যাচ্ছিলেন কয়েকজন পুণ্যার্থী। তাঁরা একটি বাসে যাচ্ছিলেন ঠাকুরনগরে। অভিযোগ, বারাসত-যশোররোডে ৩০ জন দুষ্কৃতী বাস আটকে হামলা চালায়। পুণ্যার্থীদের মারধর করে, বাসে ভাঙচুর চালায় বলেও অভিযোগ। স্থানীয়রাই আহতদের উদ্ধার করেন। আহতরা সোনারপুরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি। বারাসত থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এখনও পর্যন্ত চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ, শুক্রবার মতুয়া মেলায় যাচ্ছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তার আগেই এই ধরনের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

মতুয়াদের প্রতিনিধিদের অভিযোগ, দক্ষিণ ২৪ পরগনার গড়িয়া নরেন্দ্রপুর থেকে ২৯ তারিখ রাতে ঠাকুরনগরের উদ্দেশে বাসে করে রওনা হয় মতুয়াদের একটি দল। গভীর রাতে বারাসত কাজিপাড়া এলাকায় কিছু যুবক ওই বাস আটকায়। মহিলাদের উদ্দেশ্যে কটূক্তি করতে থাকে।


প্রতিবাদ করতে গেলে সুমন হালদার ও দলপতি বিধান হালদারকে গাড়ি থেকে নামিয়ে ব্যাপক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। সুমন হালদারকে গুরুতর আহত অবস্থায় কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দলপতি বিধান হালদারকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার রাতে মতুয়া দলের প্রতিনিধিরা এসে ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়ির শান্তনু ঠাকুরের দ্বারস্থ হন। শান্তনু ঠাকুরের বক্তব্য ওই এলাকায় বরাবরই দুষ্কৃতীদের এমন তাণ্ডব চলে। কিন্তু পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয় না। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা না নিলে মতুয়ারা মতুয়াদের মতো দেখে নেবে। তার জন্য দায়ী থাকবে প্রশাসন।

কিন্তু কী কারণে এই হামলা? প্রাথমিকভাবে তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, পুণ্যার্থীদের বাসের সঙ্গে একটি গাড়ির ধাক্কা লাগে। তখনই দু’পক্ষের মধ্যে বচসা শুরু হয়। ওই গাড়িতে থাকা বেশ কয়েকজন তখন ওই বাসে উঠে হামলা চালায় বলে অভিযোগ।

আক্রান্ত এক পুণ্যার্থী বলেন, “প্রথমে বাইরে থেকেই চিৎকার, গালিগালাজ করছিল। তারপর যখন দেখল বাস থেকে কেউ নামছি না আমরা। তখন বাইরে থেকে বড় বড় ইট নিয়ে বাসে ছুড়তে থাকে। আমাদের দলপতিকে নামিয়ে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়। বাস থেকে টেনে দূরে নিয়ে গিয়ে মারধর করা হয়েছে।”

সব হামলাকারীদের চিহ্নিত করা যায়নি। এলাকার সিসিটিভি, আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলে অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে বারাসাত থানার পুলিশ। এই ঘটনায় আপাতত বারাসত থানার পুলিশ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে। শুক্রবার তাদের বারাসত আদালতে পেশ করা হবে । ধৃতদের প্রত্যেতেক বাড়ি বারাসতের কাজীপাড়া এলাকায়।

ঘটনার প্রতিবাদে আবার শুক্রবার সকালে হাবড়া স্টেশনে রেল অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা। ট্রেন আটকে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। বেশ কিছুক্ষণের জন্য শিয়ালদা-বনগাঁ শাখার ডাউন লাইনে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। পরে হাবড়া থানার পুলিশ ও রেল পুলিশ গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলে অবরোধ তুলে দেয়। দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here