দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ মানুষ যখন রাস্তায় থাকেন, তখন পাহারাদার হিসেবে পাহারায় থাকেন তিনি, শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের  পুজো উদ্বোধনে এসে এই বার্তাই দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সুজিত বসুর পুজো উদ্বোধন করেছেন ঠিকই, কিন্তু পষ্টাপষ্টি জানিয়ে দিয়েছেন, পুজোর জন্য রাস্তা বন্ধ করলে চলবে না। শ্রীভূমির পুজোর জন্য লেক টাউন ও সংলগ্ন রাস্তায় গাড়ি সরে না। কিন্তু এ বার যেন তা না হয় সে ব্যাপারে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

তবে কালীঘাটের ঘনিষ্ঠ সূত্রে বলা হচ্ছে, দিদি কেবল সুজিতকে সতর্ক করেছেন ভাবলে ভুল হবে। কলকাতার কম বেশি সব পুজোই এখন তৃণমূলের নেতা মন্ত্রীদের পুজোয় পর্যবসিত হয়েছে। তা ত্রিধারা সম্মিলনী হোক বা চেতলা অগ্রণী কিংবা সুরুচি সঙ্ঘের মতো পুজো। এমনকি ছোটখাটো পুজোও স্থানীয় অধিকাংশ জায়গায় তৃণমূলের নেতারাই নিয়ন্ত্রণ করেন। মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দিয়েছেন, পুজোয় আনন্দ, উৎসব হোক। কিন্তু সাধারণ মানুষকে যেন তার জন্য দুর্ভোগ পোহাতে না হয়।

সঙ্গেই তিনি জনগণের উদ্দেশে বলেন, তিনি পুজোর সময়েও নজর রাখেন সবদিকে। কেউ যেন না ভাবেন তিনি পুজোতে ছুটি নিয়ে বসে আছেন। পুজোতে প্রত্যেক মুহূর্তের খবরাখবর তাঁর নজরে থাকে ৷

অনেকের মতে, সল্টলেকে পুজো উদ্বোধন করতে গিয়ে ভ্যাটের দুর্গন্ধ নিয়ে যে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী, সেই বার্তাও শুধু সল্টলেকের জন্যই সীমিত নয়। সমস্ত পুরসভাকেই এই বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। উৎসবের সময়ে যেন পুর পরিষেবায় ঘাটতি না হয়।

শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতিকাণ্ডে পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতারের পর সামগ্রিক ভাবে সরকারের বিরুদ্ধে একটা হাওয়া তৈরি হয়েছে। পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, যে ভাবে পার্থর বান্ধবীর ফ্ল্যাট থেকে টাকা উদ্ধার হতে দেখা গেছে, তাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও নিশ্চয়ই অস্বস্তি হয়েছে। তিনিও হয়তো বুঝতে পারছেন মানুষ ক্ষুব্ধ। ফলে সামগ্রিক ভাবে দল ও সরকারের ভাবমূর্তি উদ্ধারের চেষ্টা তাঁরও রয়েছে। সুজিতকে প্রকাশ্যেই হুঁশিয়ার করাকে সেই প্রেক্ষাপটে দেখা যেতে পারে।

এর আগে দেশপ্রিয় পার্কের পুজো একবার বন্ধ করে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৮৮ ফুটের দুর্গা দেখতে যা ভিড় হয়েছিল তাতে রাসবিহারী অ্যাভেনিউ বন্ধ করে দিতে হয়। ফলে সেই পুজোর নেপথ্যে দক্ষিণ কলকাতার এক নেতা থাকলেও রেয়াত করেননি মমতা। সে বছরের জন্য ঠাকুরের মূর্তি ঢেকে দিয়ে পুজোই বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি।

গত বছর শ্রীভূমিতে দমকল মন্ত্রী সুজিত বসুর দুর্গা পুজো নিয়েও কম অস্বস্তিতে পড়তে হয়নি রাজ্য প্রশাসনকে। দমকল মন্ত্রীর পুজোই দমকলের নিয়ম না মেনে সুউচ্চ প্যান্ডেল গড়েছিল। তা নিয়ে কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ চিঠি দিয়েছিল সরকারকে। তা ছাড়া বিমানবন্দর যাওয়ার রাস্তায় তীব্র যানজট তৈরি হয়েছিল। তাতে বহু মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এবার মুখ্যমন্ত্রী সতর্ক করার পর পরিস্থিতি কেমন থাকে এখন সেটাই দেখার।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here