দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কলকাতা ও হাওড়া যখন বিজেপির নবান্ন অভিযান ঘিরে রণক্ষেত্র তখন মেদিনীপুরে দলের নেতাদের বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন, চিন্তা করার দরকার নেই। বিজেপির লোক হয়নি।

সূত্রের খবর, দুই মেদিনীপুরের নেতাদের বৈঠকে দিদি বলেছেন, ‘বিজেপির নবান্ন অভিযানে লোক হয়নি। বেলুন ফুটো হয়ে গেছে। গুরুত্ব দেওয়ার দরকার নেই।’

এ দিন বিজেপি-র নবান্ন অভিযান কর্মসূচি থাকলেও একদিন আগেই পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর সফরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এ দিন খড়্গপুরে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পরিষদের সভাধিপতি নির্বাচন হয়৷ সেই বৈঠকেই পূর্ব মেদিনীপুর জেলা নেতৃত্বের পাশাপাশি পশ্চিম মেদিনীপুরে জেলা নেতৃত্ব উপস্থিত ছিল। উপস্থিত ছিল পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের বিধায়করাও৷ ওই বৈঠক চলাকালীনই বিজেপি-র নবান্ন অভিযান নিয়ে সরব হন মমতা৷

চার দিনের মেদিনীপুর সফরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী। সাংগঠনিক কর্মসূচির পাশাপাশি সরকারি কর্মসূচিও রয়েছে মমতার। অনেকের মতে, সাম্প্রতিক একাধিক ঘটনা, তৃণমূল কর্মীদের মনোবলে আঘাত হেনেছে। তার উপর বিরোধী দল হিসেবে বিজেপির আগ্রাসী মেজাজ তৃণমূলকর্মীদের মধ্যে আরও হীনমন্যতা তৈরি করতে পারে।

অনেকের মতে, সার্বিক পরিস্থিতির কথা আঁচ করেই মমতা মনোবল জোগাতে চেয়েছেন।
নবান্ন অভিযান ফেরত বিজেপির মুখপাত্ররা অবশ্য কটাক্ষ করে বলেছেন, লোক হয়েছে কি হয়নি, কার বেলুন ফুস হয়ে গেছে তা আজকে দেখা গেছে। দিদিও বুঝতে পারছেন, তৃণমূলকর্মীরা রাস্তায় বেরোতে ভয় পাচ্ছেন। আজকে পুলিশ দিয়ে আটকেছেন। এরপর পুলিশও ঘরে ঢুকে যাবে।

এদিন দলের বৈঠকে তমলুকে আক্রান্ত তৃণমূল নেতার খোঁজ নিয়েছেন মমতা। নবান্ন অভিযানে আসার পথে তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত প্রধানকে বিজেপি কর্মীরা রাস্তায় ফেলে পিটিয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল। বৈঠকে সেই নেতা কেমন আছেন তা জানতে চান মমতা।  

তৃণমূলের অবশ্য বক্তব্য, লোক হয়নি বলেই বিজেপি তাণ্ডব করে অস্তিত্ব জানান দিতে চেয়েছে। কিন্তু মানুষ আজ দেখেছে, গুন্ডামি কারা করেছে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যখন চাকরি দিচ্ছি তখন বিজেপি নবান্ন অভিযান নিয়ে নজর অন দিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।আমরা চাকরি দেব।’

পরিকল্পনা মতোই এ দিন নবান্ন থেকে অনেক দূরে বিজেপি-র অভিযান আটকে দিতে পেরেছে পুলিশ৷ শুরুতেই আটক করা হয় শুভেন্দু অধিকারীকে৷ সেখানেই অনেকটা ধাক্কা খায় বিজেপি-র যাবতীয় পরিকল্পনা৷ দুপুরের মধ্যেই অভিযান শেষ করার কথা জানিয়ে দেন দিলীপ ঘোষ৷ শুধুমাত্র সাঁতরাগাছি এবং হাওড়া ব্রিজে নবান্ন অভিযানকে কেন্দ্র করে পুলিশ- বিজেপি সমর্থক সংঘর্ষে উত্তেজনা ছড়ায়৷ কিন্তু নবান্নের কাছে ঘেঁষতে পারেননি বিজেপি-র কেউ৷

স্বভাবতই পুলিশের ভূমিকায় খুশি মুখ্যমন্ত্রীও৷ পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিজেপি-কে যে খুব একটা গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন নেই, এ দিন তাও বুঝিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷

তবে এ দিন দলের বৈঠকে ফের একবার অভ্যন্তরীন দ্বন্দ্ব মিটিয়ে দলের নেতাদের মিলেমিশে কাজ করার বার্তা দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী৷

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here