পিয়ালী মুখার্জি , কলকাতা: দুই বছর ভার্চুয়াল একুশে জুলাইয়ের পর ফের একবার লাখো মানুষের ভিড়ের জন্য তৈরি ধর্মতলা। তৃণমূলের ‘শহিদ স্মরণের’ দিন। রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রদর্শনের দিনও বটে। সকাল থেকে শহরের এ-প্রান্ত থেকে ও-প্রান্ত ছুটে বেরাচ্ছেন অভিষেক। একুশের সভামঞ্চ ঘুরে গিয়েছেন দুপুরে। আর এবার একুশে জুলাইয়ের প্রস্তুতি নিজে এসে ঘুরে দেখে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।

আগামিকাল এই মঞ্চ থেকেই দলের আগামীর দিকনির্দেশ করবেন তিনি। তৈরি হবে দলের আগামীর পথ চলার নীল নকশা। ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিশেষ করে দূরবর্তী জেলাগুলি থেকে দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা পৌঁছে গিয়েছেন কলকাতার বিভিন্ন অস্থায়ী শিবিরগুলিতে। আগামিকাল ভিড় আরও বাড়বে শহর কলকাতায়। তৃণমূলের একুশে জুলাইয়ের সভার জন্য সাধারণ নাগরিকদের যে সমস্যা হতে পারে, তা মেনে নিয়ে এদিন শহরবাসীর কাছে আগাম ক্ষমা চেয়ে নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেখুন ভিডিও

কোভিড পরবর্তী সময়ে, এবং একুশের নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ের পর শহিদ দিবসের সমাবেশ ঘিরে উন্মাদনা তুঙ্গে তৃণমূলের কর্মী, সমর্থকদের মধ্যে। ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ কলকাতায় পৌঁছে গেছেন। প্রস্তুতির শেষলগ্নে সকল সমর্থকদের উদ্দেশে বার্তা দিলেন দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷

অভিভাবকের মতোই সমাবেশে যোগদানের আগে কর্মী, সমর্থকদের সতর্ক করলেন মমতা। নিজের বাড়িতে দাঁড়িয়ে ভিডিওবার্তায় মুখ্যমন্ত্রী বললেন, ‘আগামিকাল ২১ জুলাই। দিনটি আমাদের কাছে ঐতিহাসিক, স্মরণীয়। এই দিনটির সঙ্গে আমাদের অনেক আবেগ জড়িয়ে। জড়িয়ে শহিদ তর্পন। মা-মাটি-মানুষের আবেগ জড়িয়ে। এই সময়টা আবহাওয়া ভাল থাকে না।

প্রচণ্ড ঝড়-জল-বৃষ্টি হয়। তারমধ্যেও আমাদের লাখ-লাখ কর্মীরা নিজেদের চেষ্টায় সভাস্থলে আসেন। সভায় যোগ দেন। যাঁরা আসতে পারবেন, তাঁরা সশরীরের এসে সভায় যোগ দেবেন। যাঁরা পারবেন না, তাঁরা ভার্চুয়ালি সভায় অংশ নেবেন।’ দলীয় কর্মীদের পাশাপাশি সমস্ত রাজনৈতিক নেতাদের এবং শিল্পীদেরও যোগদানের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। 

চলতি বছরের সমাবেশে রেকর্ড ভিড় জমার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আগাম সতর্কবার্তা দিয়েছেন মমতা। তাঁর বক্তব্য, ‘অযথা তাড়াহুড়ো করবেন না। সামান্য হুড়োহুড়িতে দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।’ প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতার আর্জিও জানিয়েছেন তিনি। 

ভিডিওবার্তার শেষে মমতা বলেছেন, ‘২১ জুলাই সমাবেশ, ২১ মানেই আন্দোলন, ২১ মানেই ভাষা, ২১ মানেই পথের স্বপ্ন, ২১ মানেই দিশা। ২১ আনে নতুন ভোর, ২১ আমাদের মনের জোর। ২১ ফিরে আসুক বারবার। আসুন আবার ২১ জুলাইকে ফিরে দেখি আবার।’ 

এদিন একুশে জুলাইয়ের সভাস্থলের প্রস্তুতি ঘুরে দেখতে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বললেন, “রাস্তা দিয়ে যখন গাড়ি যাবে (দলীয় কর্মী-সমর্থকদের গাড়ি), কেউ বেশি জোরে গাড়ি চালাবেন না। আস্তে আস্তে গাড়ি চালাবেন এবং সাবধানে কর্মীদের বাড়িতে পৌঁছে দেবেন। একাধিক জেলার উপর দিয়ে গাড়িগুলি আসবে। জেলার নেতাদের অনুরোধ করব, অন্য জেলার কোনও গাড়ি রাস্তায় খারাপ হয়ে গেলে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে বিষয়ে যেন দেখে নেওয়া হয়।”

এর পাশাপাশি রাস্তা ভিড় হওয়ার জন্যও আমজনতার কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন মমতা। বললেন, “কাল একটু ভিড় হবে। রাস্তাতেও যানজট হবে। আপনার প্লিজ় একদিনের জন্য… দুই বছর বাদে এই কর্মসূচি হচ্ছে। কোভিডের জন্য আমরা এই কর্মসূচি করতে পারিনি।

মানুষের জন্যই এই কর্মসূচি। শহিদদের জন্য এই কর্মসূচি। কেন্দ্রের যে স্বেচ্ছাচারিতা চলছে, তার বিরুদ্ধে আমাদের এই কর্মসূচি।” উল্লেখ্য, মমতার একুশে জুলাইয়ের সভামঞ্চ পরিদর্শনের আগেই সেখানে ঘুরে গিয়েছেন দলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here