দেশের সময়, উত্তর২৪পরগনা: রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তিনি, এলাকায় যাবেন বলে প্রস্তুতি গত কয়েকদিনে ছিল তুঙ্গে।

হিঙ্গলগঞ্জ সফরের দ্বিতীয়দিনে বুধবার ইছামতী ভ্রমণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । মঙ্গলবার প্রশাসনিক বৈঠকের পর বুধবার নৌকায় ইছামতী বক্ষে ঘোরেন মমতা। এদিন বেলা ১টা নাগাদ ইছামতীর ধারে যে গেস্ট হাউজ, সেখান থেকে বের হন। এরপর লঞ্চে নদী ভ্রমণ করেন তিনি। ইছামতির বুকে লঞ্চ চালিয়েছেন তিনি।

তারপর হাসনাবাদের একটি ঘাটে নামেন। সেখানকার মানুষের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। চলে যান এলাকার একটি প্রাথমিক স্কুলেও। সঙ্গে বেশ কিছু উপহার নিয়ে যান খুদেদের জন্য। একবার মুখ্যমন্ত্রীকে চাক্ষুষ করার জন্য এদিন বহু মানুষ ভিড় জমান নদীঘাটে।

ক’দিন আগে একটা ছবি ভাইরাল হয়েছিল। দেখা গিয়েছিল, জেলা সফরে গিয়ে চপের দোকানে গিয়ে চপ ভাজছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷

বুধবার দুপুরে আরও একটি নতুন ফ্রেম তৈরি হল উত্তর চব্বিশ পরগনার প্রত্যন্ত এলাকায়। টাকি থেকে বেরিয়ে এদিন মিনি সুন্দরবনের উদ্দেশে রওনা দেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রথমে একটি প্রাথমিক স্কুলে ঢুকে পড়ে ছাত্রদের ক্লাস নেন। তাদের জামাকাপড়, শীতের পোশাক বিতরণ করেন। তার পরই গ্রামের একটি বাড়িতে ঢুকে পড়েন।
বাঙালি বাড়িতে দুপুরে কেউ এলে তাঁকে খেতে বলাই রীতি। নইলে গেরস্তের অকল্যাণ হয় বলে ধারণা।

মুখ্যমন্ত্রী এদিন বৈদ্যপাড়ায় নমিতা মণ্ডল নামে এক মহিলার বাড়িতে পৌঁছনোর পর, তিনি আবদার করেন, দিদি এলেন যখন দু’মুঠো খেয়ে যান। ট্যাংরা মাছের ঝোল আর ভাত ৷ দেখুন ভিডিও

এমনিতে মুখ্যমন্ত্রী দুপুরে ভাত খান না। কিন্তু নমিতার আবদার তিনি এদিন ফেলেননি। উঠোনে বসে, স্টিলের থালায় ট্যাংরা মাছের ঝোল দিয়ে দু’মুঠো ভাত খান। তাঁরা ওল-আলুর তরকারিও দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীকে। সেটা থেকে শুধু একটা আলু তুলে নেন মুখ্যমন্ত্রী। খাওয়ার পরে মমতা বলেন, ‘একটু ঝাল হয়েছে, কিন্তু টেস্ট খুব ভাল হয়েছে।’

হাসনাবাদের খাঁ পুকুর গ্রামের বৈদ্যপাড়ায় বুধবার যেন ছিল অকাল উৎসব। সারা বছর ভাল-মন্দ মিশিয়ে কেটে যায়। কিন্তু এভাবে হঠাৎ মুখ্যমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে যাওয়া যেন বিস্ময়ের ঘোর কাটছে না অনেকেরই।

এই সব অঞ্চলে অনেকেই খেজুর পাতা দিয়ে মাদুর ইত্যাদি বোনেন। এদিন মুখ্যমন্ত্রীও তাঁদের পাশে বসে খেজুর পাতা বোনার চেষ্টা করেন। তার পর তাঁদের অভাব অভিযোগের কথা শোনেন। স্থানীয়দের অভিযোগ এলাকায় জলের সমস্যা রয়েছে। শুদ্ধ পানীয় জল ঠিকমতো পাওয়া যায় না। মুখ্যমন্ত্রী স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেন এক সপ্তাহের মধ্যে জলের সমস্যা মেটাতে হবে খাঁপুকুরে।

প্রশাসনের অনেকের ধারণা ছিল, মঙ্গলবার হিঙ্গলগঞ্চ সফরে গিয়ে সেদিনই তিনি ফিরে যাবেন কলকাতায়। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী করবেন তা বহু সময়েই আগাম আঁচ করা মুশকিল। দেখা গেল তিনি সত্যিই আনপ্রেডিক্টেবল। মঙ্গলবার রাতে টাকিতে রাত কাটান মুখ্যমন্ত্রী। তার পর বুধবার সকাল হতেই তিনি হাসনাবাদ ও সংলগ্ন এলাকা পরিদর্শনে বেরিয়ে পড়েন। আচমকা মুখ্যমন্ত্রীর এই ঝটিকা সফরে স্থানীয় প্রশাসন যেমন নড়েচড়ে বসেন, তেমনই হইহই পড়ে যায় গোটা এলাকাজুড়ে।

টাকি কলেজের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের জন্য বড়ো ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here