দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ: নারদ কাণ্ডে দুই মন্ত্রী ও দুই প্রাক্তন মন্ত্রীকে গ্রেফতারের ঘটনায় উত্তাল নিজাম প্যালেস চত্বর। তার মধ্যেই ব্যাঙ্কশাল কোর্টে ভার্চুয়ালি শুনানি চলল। নিজাম প্যালেসের বাইরে ধুন্ধুমারের কারণে যে হেতু ধৃত সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়কে আদালতে পেশ করা যায়নি, তাই তাঁদের ভার্চুয়ালি পেশ করা হয়।
মামলার শুনানির সময়ে সিবিআইয়ের আইনজীবিরা বলেছেন, ধৃত চারজনই প্রভাবশালী ব্যক্তি। তাই তাঁদের বাইরে রাখলে তাঁরা মামলাকে প্রভাবিত করতে পারেন। সেই কারণে তাঁদের জেল হেফাজতে পাঠানো হোক।
বিপরীতে গোটা প্রক্রিয়াই অবৈধ বলে সওয়াল করেছেন তৃণমূলের আইনজীবিরা। তাঁদের বক্তব্য, বিধানসভার স্পিকারের অনুমতি ছাড়াই চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এটা বেআইনি। তা ছাড়া তদন্তের পর চার্জশিট পেশ হয়ে গিয়েছে। অভিযুক্তদের এখন তদন্তের জন্য প্রয়োজন নেই। এ বার চার্জশিটের ভিত্তিতে আদালতে মামলা চলবে। সুতরাং তাঁদের গ্রেফতার করা হল কেন? ধৃত চারজনকেই জামিনে মুক্ত করতে হবে।
দুই পক্ষের মতামত শুনে বিচারক আপাতত রায় দান স্থগিত রেখেছেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই তা ঘোষণা করা হবে।

প্রসঙ্গত, নারদ মামলায় চাঞ্চল্যকর মোড়। চার হেভিওয়েটকে গ্রেফতার করল সিবিআই। সোমবার সকালে প্রথমে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে পৌঁছন সিবিআই গোয়েন্দারা। বাড়ির বাইরে মোতায়েন করা হয় প্রচুর সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী। এরপরই তাঁকে বাইরে নিয়ে আসা হন। তিনি নিজে জানান, নারদা কাণ্ডে তাঁকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। একইসঙ্গে নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে নিয়ে আসা হয় বিধায়ক মদনমিত্র ,প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়কেও। নিয়ে আসা হয় মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কেও। এরপরই তাঁদের চারজনকে গ্রেফতার করে সিবিআই৷

তদন্তকারী সংস্থার দাবি, আইনে একটা সংস্থান রয়েছে যে, রাজ্যপালের কাছ থেকেও অনুমতি নেওয়া যেতে পারে। ফলে, আইনের পরিধির মধ্যে থেকেই কাজ করেছে সিবিআই বলে দাবি গোয়েন্দাদের।

দিল্লির সদর দফতরে পাঠানো হল সমস্ত খুঁটিনাটি তথ্য। লিখিতভাবে গোটা মামলার অগ্রগতি জানালেন সিবিআই আধিকারিকরা।
ভার্চুয়াল মাধ্যমে শুনানি চলছে ব্যাঙ্কশাল আদালতে। চারজনেরই জামিনের আবেদন দাখিল হয়েছে আদালতে।


* সিবিআই দফতর থেকে বেড়িয়ে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷

রাজভবনের সামনেও বিক্ষোভ তৃণমূলের, গেট ভেঙে ঢোকার চেষ্টা:

নারদ কাণ্ডে সিবিআই রাজ্যের দুই মন্ত্রী এবং দুই বিধায়ককে গ্রেফতার করার পর থেকেই নিজাম প্যালেসের বাইরে চলছিল বিক্ষোভ। উত্তেজিত তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে রীতিমতো খণ্ডযুদ্ধ বাঁধে মোতায়েন কেন্দ্রীয় বাহিনীর। এর পরেই রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের পরপর তিনটে টুইটে বিক্ষোভ যেন আরও উস্কে যায়। রাজভবনে পৌঁছে যায়বিক্ষোভকারীদের একটি দল।
অভিযোগ এই পরিস্থিতিতে কার্যত আগুনে ঘি ঢালার কাজ করেছেন রাজ্যপাল। তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, অশান্তির পরিবেশে আরও উস্কানি দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তিনি। এর জেরে রাজভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা। রাজভবনের সব গেটের সামনেই চলছে এই বিক্ষোভ।

জানা গেছে, রাজভবনের একদম গেটের সামনে বসে পড়েন তাঁরা। স্লোগানও দিতে থাকেন।রাজভবনের গেট টপকে ঢোকারও চেষ্টা করছেন তাঁরা। ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা জানান, যতক্ষণ না পর্যন্ত অভিযুক্তদের ছাড়া হবে ততক্ষণ তাঁরা সেখান থেকে সরবেন না।

টুইট করেছেন রাজ্যপাল?

টুইট করে রাজ্যপাল বলেছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে বলছি, সাংবিধানিক নিয়ম ও আইন মেনে চলুন। রাজ্য পুলিশ, কলকাতা পুলিশ ও স্বরাষ্ট্র দফতরকেও বলছি আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখুন”। রাজ্যপাল এও বলেছেন, “পুরোপুরি অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পুলিশ ও প্রশাসন নীরব। আশা করি এভাবে সাংবিধানিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়া এবং অরাজক পরিস্থিতির পরিণাম কী হতে পারে তা আপনি বুঝতে পারছেন। প্রতি মিনিটে পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। সিবিআই দফতরের দিকে ইট ছোড়া হচ্ছে। তা এখনই নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।”

রাজ্যপাল যখন এই টুইট করেন, তখন রাজ্যের দুই মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও ফিরহাদ হাকিম এবং মদন মিত্রকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে নিজাম প্যালেসে এক প্রকার যখন ধর্ণায় বসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাইরে রীতিমতো ধুন্ধুমার পরিস্থিতি। পুরোদস্তুর ইট, বোতল বৃষ্টি চলছে। তা ঠেকাতে মোতায়েন রয়েছে বিশাল কেন্দ্রীয় বাহিনী।
গ্রেফতারি নিয়ে পাল্টা প্রশ্নও তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি সিবিআইকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করে বলেছেন, তাঁকেও গ্রেফতার করতে হবে। নইলে নিজাম প্যালেস ছেড়ে যাবেন না। স্বাভাবিক ভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন এমনই রাজনৈতিক কঠোর অবস্থান নেন, তখন সিবিআই ও কেন্দ্রের সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভের জ্বালামুখ খুলে যায় তৃণমূলের কর্মী সমর্থকদেরও। তার প্রতিফলনই দেখা যায় নিজাম প্যালেসের গেটের বাইরে থেকে রাজভবন পর্যন্ত। পরিস্থিতি এখন কোন দিকে যায় সেটাই দেখার।

নিজাম প্যালেসের বাইরে বিশৃঙ্খলা, অভিষেক বললেন, ‘লকডাউন ভাঙবেন না, আমরা আইনি লড়াই করব’:


রাজ্যের দুই মন্ত্রী ও দুই প্রাক্তন মন্ত্রীকে কেন্দ্র করে যখন নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরের বাইরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তখন শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানালেন যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

টুইট করে তিনি বলেছেন, “আমি সকলের কাছে আবেদন জানাচ্ছি যে আইন মেনে চলুন, বাংলা ও রাজ্যবাসীর স্বার্থের কথা মাথায় রাখুন। এমন কিছু করবেন না, যাতে লকডাউনের নিয়ম ভঙ্গ হয়। বিচারব্যবস্থার উপর আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে, আমরা আইনি পথেই লড়াই করব।”

নারদ কাণ্ড প্রথম ফাঁস হয়েছিল ২০১৬ সালের ১৪ মার্চ। তার পর পরই তদন্ত শুরু হয়। কিন্তু এখন এতদিন পর লকডাউনের মধ্যেই সিবিআই ধরপাকড় শুরু করায় সমালোচনা শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে বর্তমান ও প্রাক্তন মন্ত্রীদের গ্রেফতার করা হলেও এই কাণ্ডে অভিযুক্ত সাংসদদের বিরুদ্ধে কেন পদক্ষেপ করা হয়নি তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে ধর্ণায় বসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

স্বাভাবিক ভাবেই আন্দোলিত হয়ে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেছেন তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। কিন্তু এই বিক্ষোভের কারণে আবার সংক্রমণ ছড়াতে পারে বলেও আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

সার্বিক এই পরিস্থিতিতে পরিণত রাজনীতিকের মতোই আবেদন জানিয়েছেন অভিষেক। সেই সঙ্গে নিজাম প্যালেসের বাইরে পৌঁছে গিয়েছেন কলকাতা পুলিশের পদস্থ অফিসাররাও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা শুরু হয়েছে।

ভার্চুয়ালি আদালতে পেশ ৪ নেতা-মন্ত্রীকে, জেল হেফাজতের আবেদন:

বেআইনি গ্রেফিতারি, সিবিআই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিন:লালবাজারে অভিযোগ তৃণমূলের:


কলকাতার পুলিশ কমিশনারের কাছে সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করল তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের তরফে রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এই অভিযোগ দায়ের করেছেন। দু’পাতার অভিযোগ পত্রে সিবিআইয়ের পাশাপাশি রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিরুদ্ধেও অভিযোগের আঙুল তুলেছে তৃণমূল।

এদিন সকালেই নারদ মামলায় রাজ্যের দুই মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র এবং কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা প্রাক্তন মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। তবে তৃণমূলের চিঠিতে তিন জনের গ্রেফতারি নিয়ে অভিযোগ জানানো হয়েছে। সেখানে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের নাম নেই। যদিও নিজাম প্যালেসে পৌঁছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, চার জনকে বেআইনি ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তৃণমূলের তরফে যে অভিযোগপত্র লালবাজারকে দেওয়া হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, বিনা অ্যারেস্ট ওয়ারেন্টে এঁদের গ্রেফতারি নিয়ে সিবিআই আধিকারিকদের বিরুদ্ধে যেন কলকাতা পুলিশ পদক্ষেপ করে।

শাসকদলের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে যখন রাজ্যের মানুষ কোভিড মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াই করছে তখন এই গ্রেফতারি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এও বলেছেন, রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের মদতে সিবিআই রাজ্যের মন্ত্রী, বিধায়কদের গ্রেফতার করেছে। রাজ্যপাল এই কাজ কী ভাবে করতে পারেন তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে।

মুকুল রায় ও শুভেন্দু অধিকারীর গ্রেফতার না হওয়া নিয়ে তৃণমূল ওই চিঠিতে লিখেছে, এই সবটাই পিছন থেকে দু’জন নিয়ন্ত্রণ করছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সিবিআই একটি স্বাধীন সংস্থা। কিন্তু তারা কাজ করছে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে।

বিজেপি যদিও এখনও পর্যন্ত ছোট্ট প্রতিক্রিয়া দিয়েছে। গেরুয়া শিবির শুধু বলেছে, আইন যে পথে এগোনোর সেই পথেই এগোবে।

*রাজভবনের সামনে তৃণমূল কংগ্রেসের বিক্ষোভ
*বাহিনীর সঙ্গে তৃণমূল কর্মীদের ধ্বস্তাধ্বস্তি
*নিজাম প্যালেস লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি
*ব্যারিকেড ভেঙে ফেললেন তৃণমূলকর্মীরা
*রণক্ষেত্র পরিস্থিতি সিবিআই প্যালেসের বাইরে

কোভিড পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে অভিযুক্ত চারজনকে আদালতে সশরীরে নাও পেশ করা হতে পারে। পেপার প্রোডাকশন হতে পারে তাঁদের।
*নিজাম প্যালেস চত্বরে পৌঁছলেন ফিরহাদ হাকিমের মেয়ে।

*নিজাম প্যালেসে পৌঁছলেন রাজ্যসভা সাংসদ শান্তনু সেন, সাংসদ মালা রায়, পৌঁছলেন বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়, মন্ত্রী জাভেদ খান।


* গত আধঘণ্টা ধরে নিজাম প্যালেসের ১৫ তলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কথা বলছেন সিবিআই-এর ডিজি-র সঙ্গে।
*ব্যাঙ্কশাল কোর্টে পৌঁছলেন মন্ত্রী মলয় ঘটক।
*ব্যাঙ্কশাল কোর্টে পৌঁছল সিবিআই-র তদন্তকারী দল।
*বেআইনিভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে তৃণমূল নেতাদের। দাবি আইনজীবী অনিন্দ্য রাউতের।
*নিজাম প্যালেসের বাইরে বিক্ষোভ তৃণমূলের।
*সকাল ১০টা ৪৭ মিনিটে সিবিআই দফতর নিজাম প্যালেসে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী।


*এই গ্রেফতারি প্রক্রিয়ার আইনি গ্রহণযোগ্য়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
*তৃণমূলের প্রশ্ন, গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়ার ফলেই কি মুকুল-শুভেন্দুকে গ্রেফতার করা হল না?
* এই চারজনের পাশাপাশি, নারদকাণ্ডে আরেক অভিযুক্ত সাসপেন্ডেড আইপিএসঅফিসার এসএমএইচ মির্জার বিরুদ্ধেও আদালতে চার্জশিট পেশ করবে সিবিআই। খবর সূত্রের।

রাজ্যপালের কাছ থেকে অনুমতি মেলার পর নারদকাণ্ডে চার অভিযুক্ত নেতা-মন্ত্রীর বিরুদ্ধে সোমবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে চার্জশিট পেশ করবে সিবিআই৷
* নিজাম প্যালেসে নিয়ে গিয়ে অ্যারেস্ট মেমোতে সই করানো হয় চার নেতা-মন্ত্রীকে।
* নারদ মামলায় একসঙ্গে তৃণমূলের তিন মন্ত্রীকে গ্রেফতার করল সিবিআই। গ্রেফতার করা হল কলকাতার প্রাক্তন মেয়রকেও।

নারদ কাণ্ডে রাজ্যের দুই মন্ত্রীকে সিবিআই গ্রেফতার করার পর নিজাম প্যালেসে পৌঁছে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রতিবেদন যখন লেখা হচ্ছে, অর্থাৎ সকাল সওয়া ১১ টাতেও নিজাম প্যালেসের ১৫ তলায় সিবিআই দফতরের ভিজিটরস রুমে বসে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

তিনি যখন উপরে বসে তখন তৃণমূল নেতা তথা আইনজীবি অনিন্দ্য রাউত জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী সিবিআইকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করেছেন। তিনি বলেছেন, বেআইনি ভাবে মন্ত্রীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়কে কিছু জানানো হয়নি। এই গ্রেফতারি বেআইনি। সিবিআই এরকমই প্রতিহিংসামূলক আচরণ করলে তাঁকেও গ্রেফতার করুক। নইলে তিনি সিবিআই দফতর ছেড়ে যাবেন না।


অর্থাৎ সিবিআই দফতরে এক প্রকার ধর্ণায় বসেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ ঘটনা যে গোটা তৃণমূল দলকে আন্দোলিত করে তুলতে পারে তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই। সম্ভবত সেই কারণে নিজাম প্যালেসকে কার্যত দুর্গে পরিণত করেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। বিপুল সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান মোতায়েন করা হয়েছে নিজাম প্যালেসের ভিতরে ও বাইরে।


অনিন্দ্য রাউত বা সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের আইনজীবিদের বক্তব্য, সিবিআই সুপরিকল্পিত ভাবে এটা করেছে। চার্জশিট পেশ করার আগেই গ্রেফতার করা হয়েছে চার জনকে। এ ভাবে গ্রেফতার করা যায় না।

অন্যদিকে সুব্রত-ফিরহাদদের গ্রেফতারির প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি বলেছেন, বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “নারদ মামলায় চার্জশিট দেওয়ার ব্যাপারে কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআইয়ের কাছে জানতে চেয়েছিল, বিধানসভার স্পিকারের কাছে অনুমতি নেওয়া হয়েছে কিনা। কিন্তু তার পরেও সিবিআই আমার কাছে অনুমতি নেয়নি, কোনও চিঠিও দেয়নি। তাঁরা রাজ্যপালের অনুমতি নিয়েছে। এটা সম্পূর্ণ বেআইনি। বেআইনি ভাবে অনুমতি নিয়ে বেআইনি ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। আদালত এ ব্যাপারে কী নির্দেশ দেবে জানি না। তবে আইনজীবি হিসাবে আমি এটা বলতে পারি।

রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের অবশ্য বক্তব্য, এই ঘটনার বিভ্রান্তিকর ব্যাখ্যা হচ্ছে। অনেকে বলছে, কেন বিধানসভার স্পিকারের অনুমোদন না নিয়ে রাজ্যপালের অনুমোদন নেওয়া হল। কারণ, নারদ কাণ্ডের সময়ে এঁরা মন্ত্রী ছিলেন। রাজ্যের মন্ত্রীরা সাংবিধানিক ভাবে রাজ্যপালের কাছে দায়বদ্ধ। রাজ্যপালের থেকে তাঁরা শপথ গ্রহণ করেন। তাই রাজভবনই অনুমতি দিয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here