দেশেরসময় ওয়েবডেস্কঃ সুমন বিতর্কে এবার ময়দানে নামলেন কুণাল ঘোষ। সোশ্যাল মিডিয়া তোলপাড়। পক্ষে, বিপক্ষের যুক্তি, পাল্টা যুক্তিতে সরগরম বাম, অবাম, তৃণমূল, বিজেপি, প্রগতিশীলদের ফেসবুক ওয়াল। একটি কণ্ঠস্বর নিয়েই তুলকালাম বেঁধেছে। দাবি, সেটি নাকি কবীর সুমনের। যে কণ্ঠস্বর একজন সাংবাদিককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছে। সেই ভাষা, বলার ভঙ্গিমা শুনে অনেকেই সুমন স্বাভাবিক অবস্থায় ছিলেন কি না তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন। যদিও ভাইরাল হওয়া ওই অডিও ক্লিপের সত্যতা দেশের সময় অনলাইন যাচাই করেনি। এদিন সেই বিতর্ককে নতুন মাত্রা দিলেন কুণাল।

টুইটে তৃণমূলের মুখপাত্র লিখেছেন, ‘যে অডিওটি ঘুরছে, সেটি যদি কবীর সুমনেরই হয়, তাহলে তা অতি আপত্তিকর এবং তীব্র প্রতিবাদযোগ্য। এর জন্য ক্ষমা চাওয়া উচিত, না চাইলে ব্যবস্থা হওয়া উচিত।’
এখানেই থামেননি কুণাল ঘোষ। তাঁর কথায়, ‘জনপ্রিয় গায়ক বা প্রতিভাধর বুদ্ধিজীবী হলেই এসব বলা যাবে, এটা হতে পারে না।’

কিন্তু সুমন কী বলছেন?
এ ব্যাপারে একটি ফেসবুক পোস্ট করেছেন। সেটা আবার তাঁর প্রোফাইল থেকে ওনলি ফ্রেন্ডস অপশন সিলেক্ট করে করা হয়েছে। অর্থাৎ পাবলিক নয়। যাঁরা তাঁর বন্ধুতালিকায় রয়েছেন তাঁরাই কেবল ওই পোস্ট দেখতে পাবেন। তাতে তিনি লিখেছেন, ফোনে ওই সাংবাদিককে যা তিনি বলেছেন তা বলে ঠিক করেছেন। ভবিষ্যতে আবারও একই কাজ করবেন। এ ব্যাপারে তিনি আব্রাহাম লিঙ্কনকে উদ্ধৃত করে বলেছেন, কোনও কাজের সম্পর্কে যুক্তি দেওয়ার প্রয়োজন নেই। কারণ বন্ধুদের কাছে তার দরকার পরে না আর শত্রুরা তা বিশ্বাস করে না।

কী ছিল ওই ফোনালাপে, যা নিয়ে এত বিতর্ক?
ভাইরাল হওয়া ওই ফোনালাপে ছাপার অযোগ্য বিভিন্ন কটূক্তি ছিল। সেই কণ্ঠ সংশ্লিষ্ট সাংবাদিককে বলেছিল, যেন ওই কথা ‘ব্রডকাস্ট’ করা হয়। এমন অভিযোগও ছিল যে, ওই চ্যানেল (অথবা আপাতদৃষ্টিতে তাদের কর্তারা, ওই কণ্ঠের অভিযোগ, আরএসএস) প্রবীণ গায়িকা
সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে মেরে ফেলছে!

যে অভিযোগ সুমন-সহ কয়েকজন বিশিষ্ট নাগরিক সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছিলেন। তাঁদের বক্তব্য ছিল সন্ধ্যার মতো প্রবীণ গায়িকাকে ‘পদ্মশ্রী’ খেতাব দিতে চেয়ে কেন্দ্রীয় সরকার অন্যায় করেছে। নবতিপর গায়িকা মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন। ঘটনাচক্রে, তার পরেই সন্ধ্যা কোভিডে আক্রান্ত হন। তিনি আপাতত শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

যে অডিওটি ভাইরাল হয়েছে তাতে শোনা যাচ্ছে সাংবাদিকের নাম ও প্রতিষ্ঠানের নাম শুনেই অশ্রাব্য ভাষা বলতে শুরু করে দিয়েছে ওই পুরুষ কণ্ঠস্বর। সাংবাদিককে একপ্রকার প্রশ্ন করার সুযোগ না দিয়েই ওইসব বলতে থাকে ওই পুরুষ কণ্ঠস্বর। যে গলার স্বর ও ভঙ্গিমার সঙ্গে অনেকেই সুমনের মিল খুঁজে পেয়েছেন।
এমনিতে সুমনের বিরুদ্ধে অশ্রাব্য ভাষা বলা, মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ বহু পুরনো। তাঁর অনেক পরিচিত ঘনিষ্ঠরাও এ ব্যাপারে ঘরোয়া আলোচনায় তাঁর সমালোচনা করেন। নতুন বিতর্ক সামনে আসতে সেইসব পুরনো কাসুন্দিও ঘেঁটে যাচ্ছে।

তৃণমূল সাংসদ থাকার সময়ে তাঁর সঙ্গে দলের দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। মাঝে কয়েক বছর প্রায় যোগাযোগই ছিল না। তারপর আবার আস্তে আস্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সুমনের সখ্য গড়ে ওঠে। কয়েক বছর আগে একুশে জুলাইয়ের মঞ্চে উঠে সুমন বলেছিলেন, আজ থেকে তিনশো বছর পরে মমতার নামে মন্দির হবে।
সে যাক। কিন্তু এই অডিও কাণ্ড নিয়ে এবার প্রবীণ গায়কের বিরুদ্ধে ফোঁস করলেন কুণালও। তাঁর দাবি, সত্যি সুমনের গলা হলে হয় তিনি ক্ষমা চান নয় ব্যবস্থা হোক। তিনি প্রতিভাধর বলে সাতখুন মাফ হতে পারে না!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here