ত্রিপর্ণা নন্দী,চন্দননগর: কোথাও পুজোর থিম আলপনা, আবার কোথাও মন্ডপ তৈরি হয়েছে কেদারনাথের আদলে। কোথাও আবার থিমে উঠে এসেছে হারিয়ে যাওয়া মহেঞ্জোদারো সভ্যতা।

চন্দননগর৷ পুরনো এই শহরটা সেজে উঠেছে আলোয়। রবিবার ছিল ষষ্ঠী। আজ সোমবার সপ্তমী৷ গোটা চন্দননগর জুড়ে নানান আলোর রোশনাইতে মানুষের ভিড় চোখে পড়ার মতো। পুজো উদ্যোক্তারা মনে করছেন আগামী দিনগুলোতে ভিড় আরও অনেক বেশি বাড়বে চন্দননগরে। প্রতিমা দর্শন করতে আসা দর্শনার্থীদের বক্তব্য চোখ ধাঁধানো মন্ডপ কলকাতাতেও হয়। কিন্তু সাবেকি প্রতিমা এবং তাঁর সজ্জা কোথাও দেখতে পাওয়া যাবে না। আর তাই প্রতি বছরই জগদ্ধাত্রী পুজোতে চন্দননগরে দর্শকদের ভিড় নজর কাড়ে।এ বছরও তার অন্যথা হয়নি।

নতুন নতুন থিম আলোর জাদু দেখা গেলেও এখানকার প্রতিমা এখনো সেই সাবেকিই। মা দুর্গার মত এখানে জগদ্ধাত্রী প্রতিমাতে লাগেনি থিমের ছোঁয়া। আর এই বিষয়ই আলাদা করে রাখে চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোকে। এখানে দেবী জগদ্ধাত্রী সনাতনী রূপেই পূজিত হন।

এখানকার পুজো উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন আগের মত কাপড়ের প্যান্ডেল করলে দর্শক আসবে না, আর প্রতিযোগিতা যে রয়েছে সেটাও সত্যি। তাই দর্শক ধরে রাখতে এক দশক ধরে চন্দননগরে প্রবেশ করেছে থিম। জগদ্ধাত্রী পুজো-এর জন্য প্রসিদ্ধ যেহেতু এই শহর তাই আলোর বৈচিত্র থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বৈচিত্র থাকে না দেবী জগদ্ধাত্রীর মূর্তিতে।

এখানে দেবীর রূপ সনাতনী। চন্দননগরের সব থেকে বড় পুজোর মধ্যে নজর কাড়ে তেমাথা, বাগবাজার, লালবাগানের পুজো। প্রতিমায় বৈচিত্র না থাকলেও, বৈচিত্র রয়েছে প্রতিমার সাজে। কোথাও ডাকের সাজ কোথাও বা শোলার সাজ।

বাইরের শিল্পীরা নয়, চন্দননগরের স্থানীয় শিল্পীরাই এখানকার প্রতিমা গুলি বানান। বিসর্জন এবং প্রতিমার উচ্চতার কথা মাথায় রেখে প্রতিমা তৈরি হয় লোহার কাঠামোর উপর। সাবেকী প্রতিমা গুলির উচ্চতা হয় ২৫ থেকে ২৬ ফুট মতো। সাজসজ্জা চালচিত্র দিয়ে প্রতিমার উচ্চতা দাঁড়ায় প্রায় ৩০ ফিট।

বোড়াইচণ্ডীতলা সর্বজনীনের সহকারী সম্পাদক তন্ময় বোস জানাচ্ছেন, “এখনকার পুজোয় থিমের ছোঁয়া লাগলেও প্রতিমা সেই সাবেকি। আধুনিকতার পাশাপাশি ঐতিহ্যকে ধরে রাখাই চন্দননগরের রীতি।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here