দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সঙ্গীতর সুরে যখন ডুবছিলেন সকলে, সেই সময়ই ইজরায়েলের উপর প্রথম আঘাত হানে হামাস বাহিনী।

শনিবার প্যালেস্তাইনের হামাস বাহিনীর হামলার পর ফের একবার যুদ্ধ শুরু হয়েছে। দুই পক্ষের মধ্যে লাগাতার গোলাগুলি চলছে। ইজরায়েলের উপরে হামাস বাহিনী যে প্রথম হামলা চালিয়েছিল, তার অন্য়তম নিশানা ছিল সে দেশে অনুষ্ঠিত হওয়া মিউজিক ফেস্টিভাল বা সঙ্গীত উৎসব। আচমকা রকেটের আঘাতে অনুষ্ঠান স্থল ছেড়ে পালানোর সুযোগ পাননি কেউই। প্রায় ২৫০ জনের মৃত্যু হয় ওই মিউজিক ফেস্টিভালে। যারা প্রাণে বেঁচেছেন কোনওমতে, তারাই এবার তুলে ধরলেন সেই ভয়ঙ্কর মুহূর্তগুলি।

গাজার কাছেই অবস্থিত কিববুটজ় রিউমে অনুষ্ঠিত হচ্ছিল নেচার পার্টি। হামাস বাহিনীর হামলার অন্যতম প্রধান নিশানা ছিল এই পার্টিই। মোটরবাইক, পিকআপ ট্রাক, এমনকী আকাশপথে প্যারাগ্লাইডারের মাধ্যমে ইজরায়েলে প্রবেশ করে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, মিউজিক ফেস্টিভালে হঠাৎ আছড়ে পড়ে গোলা, নিমেষে ছিটকে পড়েন অনুষ্ঠানে উপস্থিত কয়েকশো মানুষ। যারা সংঘর্ষ থেকে রক্ষা পান, তারা প্রাণ বাঁচাতে এ দিক-ওদিকে ছুটতে শুরু করেন।

লি সাসি নামক এক যুবতী, যিনি ওই সঙ্গীত উৎসবে গিয়েছিলেন, হামলা শুরুর পর সাত ঘণ্টা তিনি মৃতদেহের নীচেই চাপা পড়েছিলেন। এভাবেই তিনি হামাস বাহিনীর থেকে নিজের প্রাণ বাঁচিয়েছেন বলে জানান দ্য় নিউ ইয়র্ক টাইমসকে।

লি সাসি জানান, হঠাৎই হামাস বাহিনী হামলা শুরু করে। তিনি এবং আরও ৩৫ জন বম্ব শেল্টারে গিয়ে আশ্রয় নেন। কিন্তু সেখানেও ঢুকে পড়ে হামাস বাহিনী। নির্বিচারে গুলি করা শুরু করে। ৭ ঘণ্টা পরে যখন তাদের উদ্ধার করা হয়, তখন মাত্র ১০ জন বেঁচেছিলেন। 

কীভাবে হামাস বাহিনীর বন্দুকের নল থেকে রক্ষা পান, সে কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন লি। জানান, যাদের সঙ্গে বম্ব শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছিলেন, তাদের মৃতদেহের নীচেই লুকিয়েছিলেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। এক বন্ধুর ইন্সটাগ্রামের মাধ্যমে একাধিক ছবি ও ভিডিয়োও শেয়ার করেন তিনি, যেখানে দেখা যায়, বম্ব শেল্টারের ভিতরে মৃতদেহের স্তূপ হয়ে রয়েছে। একটির উপরে আরেকটি দেহ পড়ে রয়েছে।

ওই মিউজিক ফেস্টিভালে গিয়েই বেঁচে ফেরা আরেক যুবক, ২৩ বছরের জোহার মারিভ বলেন, “কী হচ্ছিল, বুঝতে পারছিলাম না। একটা সময়ে অচেনা লোকজনদের সঙ্গেই গাড়িতে উঠে পড়ি এবং গাড়ি চালাতে শুরু করি। কোথায় যাচ্ছিলাম, আমরা কেউ জানতাম না। গাড়িতে আগুন লেগে যাওয়ার পর আমরা পায়ে হেঁটে পালানোর চেষ্টা করি। অনেককে পিছন থেকে গুলি করে হত্যা করা হয়। আমরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা লুকিয়ে ছিলাম। পরে সেনা এসে উদ্ধার করে।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here