দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কোভিডের সেকেন্ড ওয়েভের সময়েও প্রতিদিনে তিন থেকে চার লাখ নতুন সংক্রমণ ধরা পড়ছিল। থার্ড ওয়েভের শীর্ষে পৌঁছেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। গত আট মাসে প্রথমবার দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা তিন লাখ পার করে ফেলেছে।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সর্বশেষ দৈনিক পরিসংখ্যান বলছে,গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন তিন লক্ষ ১৭ হাজার ৫৩২ জন। আগের দিন যা ছিল দু’লক্ষ ৮২ হাজার ৯৭০। 

পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দৈনিক সংক্রমণের হারও। বুধবার দৈনিক সংক্রমণের হার ছিল ১৫.১৩ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় তা বেড়ে হয়েছে ১৬.৪১ শতাংশ। বেড়েছে মৃত্যুর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৪৯১ জনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার মৃত্যু হয়েছিল ৪৪১ জনের৷

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বুলেটিন বলছে, বৃহস্পতিবার গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছে ৩ লাখ ১৭ হাজার। ওমিক্রন রোগীর সংখ্যাও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। আজকের হিসেবে ওমিক্রন পজিটিভ রোগীর সংখ্যা ৯ হাজারের বেশি। গতকালের থেকে ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সংক্রমণের হার মারাত্মক পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে। দৈনিক কোভিড পজিটিভিটি রেট এখনই ১৬ শতাংশের বেশি। দিল্লি, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, পশ্চিমবঙ্গে করোনা সংক্রমণের হার সাঙ্ঘাতিকভাবে বেড়ে গেছে।

দিল্লিতে কোভিড পজিটিভিটি রেট ২৯.২১ শতাংশ। দিল্লিতে যাঁরা কোভিড টেস্ট করাচ্ছেন, তাঁদের প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন পজিটিভ হচ্ছেন। মুম্বইতে দিনে ১৬ হাজারের বেশি নতুন সংক্রমণ ধরা পড়ছে। পজিটিভিটি রেট ২৪ শতাংশের বেশি।

কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও বুধবার ভাল খবর শুনিয়েছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)। শীর্ষস্থানীয় এপিডেমোলজিস্ট ড. সমীরণ পাণ্ডা বলেছেন, ১ মার্চ থেকে করোনার দাপাদাপি কমবে। মানুষজন যদি কোভিড বিধি মেনে চলেন, মাস্ক আর সোশ্যাল ডিস্টেন্সিং মানেন, তাহলে মার্চ মাস থেকেই সংক্রমণের তেজ কমবে। ধীরে ধীরে এন্ডেমিক পর্যায়ে চলে যাবে দেশ।

কোভিডের নয়া প্রজাতি এলেও মিউটেশনের গতি একসময় কমে যাবে। ভাইরাল স্ট্রেনও দুর্বল হতে থাকবে। যদি মানুষের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বেড়ে থাকে এবং হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হয়, তাহলে নতুন করে কোভিড ওয়েভ আসার সম্ভাবনা নেই। ড. সমীরণের বক্তব্য, ঠিক যেমন করে সার্স ভাইরাসের মহামারী নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল তেমনভাবেই সার্স-কভ-২ শক্তিহীন হয়ে পড়বে।

করোনা তখনই হার মানবে যখন মানুষ সচেতন হবে, এমনটাই মত বিশেষজ্ঞের। তাঁর পরামর্শ, সংক্রমণের গতি কমবে এবং ভাইরাল স্ট্রেনও দুর্বল হবে, যদি ঠিকঠাক কোভিড বিধি মেনে চলা যায়। তিনটি শর্ত মানলেই করোনার তাণ্ডব কমবে। কী সেই শর্ত– কোনও রকম জমায়েত করা যাবে না, অনাবশ্যক ঘোরাঘুরি বা ভ্রমণ নয় এবং মাস্ক বাধ্যতামূলক। আগামী তিন মাস কঠোরভাবে এই নিয়ম মেনে চললেই করোনা বিদায় নেবে, এমনটাই মত বিশেষজ্ঞের।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here