দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ কুয়াশা নয় কালো ধোঁয়াশায় ঢেকেছে দিল্লি ও তার আশপাশের এলাকা। বাড়ি থেকে বেরোলেই চোখ জ্বলছে। জল পড়ছে। সঙ্গে বেদম কাশি, হাঁচি। অনেকেরই শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। রাজধানী দিল্লির হাওয়া খারাপ, তাতে নতুনত্ব কিছু নেই। কিন্তু নতুন হল, হাওয়া যে এতটা খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছে, তা প্রথমবার হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন রাজধানীর বাসিন্দারা। 

রাজধানী ও তার আশপাশের শহরগুলিতে সব স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে অনির্দিষ্টকালের জন্য। কমিশন ফর এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট জানিয়েছে, ফের নোটিশ না দেওয়া পর্যন্ত অনলাইনে পড়াশোনা চলবে। দিল্লি, হরিয়ানা, রাজস্থান ও উত্তরপ্রদেশে বিভিন্ন অফিসের ৫০ শতাংশ কর্মী বাড়ি থেকে কাজ করবেন। আগামী ২১ নভেম্বর পর্যন্ত এই ব্যবস্থা চালু থাকবে।

বর্তমানে দিল্লি ও তার আশপাশে ১১ টি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মধ্যে কাজ করছে কেবল পাঁচটি। দিল্লিতে আপাতত ট্রাক ঢোকা বন্ধ করা হয়েছে। কেবল যে ট্রাকগুলি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য বহন করে, তাদেরই ছাড় দেওয়া হচ্ছে। পেট্রল চালিত গাড়ির বয়স ১৫ বছর হলে এবং ডিজেল চালিত গাড়ির বয়স ১০ বছর হলে বাতিল করে দিতে বলা হয়েছে। কোনও গাড়ির চালক যদি যথাযথ এমিসন কন্ট্রোল সার্টিফিকেট দেখাতে না পারেন, তাঁকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ড জানিয়েছে, দিল্লি ও জাতীয় রাজধানী এলাকায় বেসরকারি অফিসগুলিকে বলা হয়েছে, তারা যেন ৫০ শতাংশ কর্মীকে বাড়ি থেকে কাজ করার অনুমতি দেয়। একইসঙ্গে জানানো হয়েছে, কেউ যদি রাস্তার ওপরে বাড়ি তৈরির জিনিসপত্র জমা করে রাখে, তাহলে কড়া শাস্তি দেওয়া হবে। ২১ নভেম্বর অবধি রাজধানী ও তার আশপাশের এলাকায় বাড়ি ভাঙা বা যে কোনও নির্মাণ বন্ধ রাখতে হবে। তবে রেলের বিভিন্ন কাজ, মেট্রো পরিষেবা, বিমান বন্দর, বাস টার্মিনাল, এবং প্রতিরক্ষার প্রকল্পগুলিকে ছাড় দেওয়া হয়েছে।

রাজধানীতে দূষণ নিয়ে গত সোমবার সুপ্রিম কোর্টের তিরস্কারের মুখে পড়ে দিল্লি সরকার। মঙ্গলবার দূষণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে জরুরি বৈঠক ডাকে কেন্দ্রীয় সরকার। সেখানে দিল্লি সরকারের অফিসাররাও উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা প্রস্তাব দেন, প্রতি সপ্তাহের শেষে লকডাউন করা হোক। আগামী এক সপ্তাহে অফিসগুলিতে ওয়ার্ক ফ্রম হোম চলুক। একইসঙ্গে শহরে নির্মাণকাজ ও কলকারখানা বন্ধ রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়।

সুপ্রিম কোর্টে দিল্লি সরকার বলেছিল, রাজধানীর আশপাশে মড়িপোড়া অর্থাৎ শস্যক্ষেতে ফসলের অবশিষ্টাংশ পুড়িয়ে ফেলার জন্যই বাতাস দূষিত হচ্ছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার জানায়, দিল্লির দূষণের জন্য মড়িপোড়া মাত্র ১০ শতাংশ দায়ী।

দিল্লির পরিবেশমন্ত্রী গোপাল রাই বলেন, “আমরা প্রস্তাব দিয়েছি, প্রতি সপ্তাহের শেষে লকডাউন করা হোক। এরপর কোর্ট যা সিদ্ধান্ত নেবে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here