দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃবিশ্বব্যাপী আবার ঊর্ধ্বমুখী করোনার গ্রাফ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জানাচ্ছে, ১১০টি দেশে নতুন করে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা।

করোনার ইতি হয়নি এখনও। প্যান্ডেমিক থেকে এন্ডেমিক পর্যায় এখনও এসে পৌঁছয়নি। করোনা নিয়ে ফের সতর্ক করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) । বিশ্বের ১১০টি দেশে নাকি ফের মাথাচাড়া দিয়েছে করোনা সংক্রমণ, এমনটাই দাবি হু প্রধান টেড্রস অ্যাডহানাম ঘেব্রেইসাসের। সংক্রমণের হারও চমকে দেওয়ার মতোই। কাজেই কোভিড বিদায় নিয়েছে, এ কথা জোর দিয়ে বলার সময় এখনও আসেনি।

ফের মাথাচাড়া দিচ্ছে করোনা। দেশে ঊর্ধ্বমুখী কোভিড গ্রাফ ইঙ্গিত দিচ্ছে আরও এক নতুন ঢেউয়ের। চতুর্থ ঢেউ আছড়ে পড়েছে কি না, কেন্দ্রের তরফে ঘোষণা না করলেও, করোনা ঘিরে ফের উদ্বেগ বাড়ছে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের। জুনের শুরু থেকেই ধীর গতিতে বাড়ছিল আক্রান্তের সংখ্যা। মাসের শেষে তা ১৯ হাজার ছুঁইছুঁই! 

বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৮ হাজার ৮১৯ জন। যা গতকালের তুলনায় ৪ হাজারের বেশি। একদিনে দেশে করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩৯ জন। গত কয়েক দিনের মধ্যে এটিই সর্বোচ্চ দৈনিক মৃত্যু। বর্তমানে দেশে করোনা সংক্রমণের হার ৪.১৬ শতাংশ। গত সপ্তাহের তুলনায় যা এক ধাক্কায় অনেকটাই বাড়ল। 

এদিন দেশে করোনায় সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১ লক্ষের গণ্ডি ছাড়িয়ে গেল। বর্তমানে দেশে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১ লক্ষ ৪ হাজার ৫৫৫ জন। কমেছে সুস্থতার হারও। বর্তমানে তা ৯৮.৫৫ শতাংশ। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ফের কড়াকড়ি করে কোভিডবিধি না মানলে এবং বুস্টার ডোজ না নিলে অক্টোবরের মধ্যে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে। 

বিশ্বের ১১০টি দেশে চোখ রাঙাচ্ছে ওমিক্রন, সতর্ক করলেন হু প্রধান ৷

করোনার চতুর্থ ঢেউ নিয়ে সতর্কতা জারি হয়েছে। প্রথম তিনটি ওয়েভের মতো প্রাণঘাতী না হলেও চতুর্থ ঢেউতে সংক্রমণ বাড়বে বলেই মনে করছেন ভাইরোলজিস্টরা। আশঙ্কা রয়েছে, যদি করোনা ফের তার জিনগত বদল ঘটিয়ে ফের নতুন প্রজাতি তৈরি করে ফেলে তাহলে সংক্রমণের হার আরও বাড়বে।
হু প্রধান টেড্রস বলছেন, ওমিক্রনের দুই উপপ্রজাতি বিএ৪ ও বিএ৫-এর কারণে আমেরিকা, ব্রিটেন সহ কয়েকটি দেশে সংক্রমণ নতুন করে বাড়ছে। সংক্রমণের হার বা পজিটিভিটি রেট ও মৃত্যুহারও ২০ শতাংশ বেড়েছে।

বিশেষজ্ঞ বলছেন, শুরুতে সার্স-কভ-২ ভাইরাসের যে স্ট্রেনগুলির জিনোম সিকুয়েন্স বা জিনগত বিন্যাস বের করে ভ্যাকসিনের ফর্মুলা বানিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা, তা এখন পুরোপুরি বদলে গেছে। কুড়ি সালের মার্চ মাসে করোনার যে প্রজাতি ছড়িয়েছিল তা এখন জিনের বিন্যাস বদলে ফেলেছে। এই বদল বা মিউটেশন এত ঘন ঘন হয়েছে যে শুরুতে কোন প্রজাতি ছিল এবং তার জিনের বিন্যাস কেমন ছিল তা এখন আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।

সার্স-কভ-২ আরএনএ ভাইরাস বারে বারেই জিনের গঠন বদলাচ্ছে (জেনেটিক মিউটেশন)। এর প্রতিটি স্ট্রেন একে অপরের থেকে আলাদা। তাই এই ভাইরাসের উৎসের খোঁজ এখনও মেলেনি। যেসব স্ট্রেন থেকে ভ্যাকসিন বানানো হচ্ছে তার বাইরেও করোনার একাধিক সংক্রামক স্ট্রেন রয়েছে যার সবকটির খোঁজ এখনও মেলেনি। তাই ভ্যাকসিন সাময়িকভাবে একটা পর্যায় অবধি সুরক্ষা দিতে পারবে, অনন্তকাল ধরে এর প্রভাব টিকবে না।  ভবিষ্যতে যদি এই ভাইরাস ফের তার চেহারা বদল করে ফিরে আসে, তাহলে তার মোকাবিলা এই ভ্যাকসিনে হবে কিনা সেটা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here