দেশের সময় ,বনগাঁ: ফের বেলাগাম মন্তব্য বিজেপি বিধায়কের। বনগাঁর বিজেপি-র এক কর্মসূচি থেকে ৷

পঞ্চায়েত নির্বাচনের দামামা বাজার আগেই উত্তপ্ত বাক্যবাণের রাজনীতি অব্যাহত বাংলায়। রাজ্যের কারা মন্ত্রী অখিল গিরির মন্তব্য নিয়ে কিছুদিন আগেই রাজ্য রাজনীতির উত্তাল হতে দেখা গিয়েছে। পালটা রাজ্যের বীরবাহা হাঁসদাকে নিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্য নিয়েও সমালোচনার সুর চড়িয়েছিল তৃণমূল। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে একাধিকবার বিরূপ মন্তব্য করতে দেখা গিয়েছে বিজেপি-র সর্ব ভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষকেও ৷

কয়েকদিন আগে বিডিও-র ঘরে প্রবেশ করে আঙুল উঁচিয়ে হুঁশিয়ারি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল বিজেপি বিধায়ক নীলাদ্রি শেখর দানার বিরুদ্ধে। আর এবার ফের ডেপুটেশন দিতে গিয়ে বিডিও-কে গণধোলাই দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়ার অভিযোগ উঠল আর এক বিজেপি বিধায়কের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি পুলিশকেও গাছে বাঁধার হুঁশিয়ারি দেওয়ার অভিযোগ বনগাঁ দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদারের বিরুদ্ধে।

সোমবার উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ ব্লক অফিসে আবাস যোজনা নিয়ে ডেপুটেশন দেওয়ার কর্মসূচি ছিল বিজেপির। সেই কর্মসূচির মধ্যে বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে বনগাঁ দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদার বিডিওকে আক্রমণ করে বলেন, ‘মানুষের কাজ সঠিকভাবে না করলে, গেট ভেঙে আপনার ঘরে গিয়ে গণধোলাই দেবে সাধারণ মানুষ। পুলিশের উদ্দেশে তিনি বলেন, মানুষের ট্যাক্সের টাকায় যদি আপনাদের না হয়, তাহলে তৃণমূলের দলদাসগিরি করুন। আগামীতে বিজেপি ক্ষমতায় এলে সাধারণ মানুষ গাছে বেঁধে রাখবে।’

বিধায়কের এই বক্তব্যে বেড়েছে বিতর্ক। তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘বনগাঁ সাংগঠনিক জেলায় বিজেপির পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গিয়েছে। ঠাকুরনগরের সভায় তৃণমূলের যে পরিমান সমর্থকের ভিড় হয়েছিল, তাতেই ওরা বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছে।’ তাঁর দাবি, পঞ্চায়েত নির্বাচন আসছে বলেই এই ধরনের কথা বলছে বিজেপি। তৃণমূল নেতা আরও বলেন, ‘বিজেপি উন্নয়নের ধারাকে স্তব্ধ করে দিতে চায়।’

তবে নিজের অবস্থানে অনড় রয়েছেন বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদার। তাঁর দাবি, তিনি কোনও হুঁশিয়ারি দেননি, সাধারণ মানুষের কথা বলেছেন। বিধায়কের কথায়, জনপ্রতিনিধি হিসেবে মানুষের কথা তুলে ধরা তাঁর কাজ। তিনি মনে করেন, কাজ না হলে বিডিও-র ঘরে প্রবেশও করতে পারে সাধারণ মানুষ। আর পুলিশের কথা? বিধায়কের দাবি, পুলিশ যা করছে, তাতে আগামিদিনে এমনটা হতে পারে, সে কথাই বলা হয়েছে।

তবে বিজেপি বিধায়কের এই হুঁশিয়ারি নিয়ে চরম সমালোচনা করেন বনগাঁর আরেক বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস। তিনি বলেন, ” এটাতে ওঁরা অভ্যস্ত। জানে না, বিধায়কের কাজ কী? জানে না, একজন বিধায়কের কী করা উচিত, কী বলা উচিত। এটা শিখতে ওঁদের একশো বছর সময় লাগবে।” নির্বাচনের আগে বনগাঁ সাংগঠনিক জেলায় বিজেপি-র পায়ের তোলার মাটি সরে গিয়েছে, সে কারণেই বিজেপি বিধায়ক এহেন মন্তব্য করছেন বলে দাবি করেন বিশ্বজিৎ দাস।

উল্লেখ্য, আবাস যোজনা নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছে বিজেপি। অযোগ্য লোককে ঘর দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here