দেশের সময়, আশ্বিনের মেঘলা আকাশে পেটকাটি, চাঁদিয়াল, মোমবাতি, বগ্গা আর মুখপোড়াদের লড়াই। আজ বিশ্বকর্মা পুজো। বাঙালি মেতেছে ঘুড়ির উৎসবে। এ ছাদ থেকে ও ছাদ সারাদিন গলা ফাঁটিয়েছে ভোকাট্টা বলে। আজ বিশ্বকর্মা পুজো ৷ এই পুজোর হাত ধরেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবের সূচনা।

ফুল দিয়ে সাজানো ট্রেনের কামরা। ট্রেন তখন ছুটছে পরের স্টেশনের দিকে। চলন্ত ট্রেনের মধ্যেই হচ্ছে মন্ত্রপাঠ।

এবারও রীতি মেনে বিশ্বকর্মা পুজোর আয়োজন করেছে নিত্য যাত্রীরা৷ট্রেন ছাড়তেই পুজোর তোড়জোড় শুরু।
চলন্ত ট্রেনে বিশ্বকর্মা পুজো। তাও আবার রীতিমতো মূর্তি এনে, পুরোহিত দিয়ে কাঁসর ঘণ্টা বাজিয়ে।

পুজো হল কাটোয়া হাওড়া ডাউন ৩৭৯১৪ লোকালের পর পর দুটি বগিতে। কাটোয়া থেকে ট্রেনটি পাঁচটা চল্লিশে ছেড়ে হাওড়ায় পৌঁছয় আটটা পঁয়তাল্লিশে। গত ৩০ বছর ধরে নিত্য যাত্রীদের উদ্যোগে ওই ট্রেনের চার নম্বর কামরার হয়ে আসছে বিশ্বকর্মা পুজো। মূর্তি এনে ট্রেনের কামরার ভিতরই ধুমধাম করে হয় পুজো।

তবে করোনা কালে ট্রেন বন্ধ থাকায় দু’‌বছর বন্ধ ছিল পুজো। এবছর আবার সেই পুজো ফিরে পেয়েছে পুরোনো আড়ম্বর। রীতিমতো ঢাকঢোল কাঁসর বাজিয়ে পুরোহিতদের মন্ত্রোচ্চারণের মধ্য দিয়ে সম্পূর্ণ হল যন্ত্রের দেবতার আরাধনা।

অন্যদিকে ১৬ বছরের রীতিতে ছেদ পড়ল না এবারও। বিশ্বকর্মা পুজোতে এমন ছবি দেখা গেল নদিয়ার শান্তিপুরেও ৷

কেন এই আয়োজন? উদ্যোক্তাদের বক্তব্য, প্রতিদিন সঠিক সময় গন্তব্যে পৌঁছে দেয় এই ট্রেন। তাই এই বিশেষ দিনে বিশ্বকর্মার আরাধনা করা।

নিত্যযাত্রী ও পুজো উদ্যোক্তারা জানান , ১৬ বছর আগে কয়েকজন মিলে এই পুজো করা শুরু করি। ট্রেনই হল আমাদের লাইফলাইন। আমাদের রুটিরুজি নির্ভর করে এই ট্রেনের উপর।ট্রেনের জন্যই গন্তব্যে পৌঁছতে পারি।’’

আগের তুলনায় বেড়েছে সদস্য সংখ্যাও ৩৫ মিনিট সময়ের মধ্যে পুজোর সব আয়োজন করে ফেলতে হয় বলে জানাচ্ছেন উদ্যোক্তারা।

পুজো শেষে প্রসাদ বিতরণও হল দুই লোকাল ট্রেনের কামরায়। মিষ্টির প্যাকেট তুলে দেওয়া হল সব যাত্রীদের হাতে। এক নিত্যযাত্রীর কথায় ‘‌দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে ওই একই কামরায় বিশ্বকর্মা পুজো হয়। পুজো হয় ওই কামরার যাত্রীদের সম্মিলিত উদ্যোগে।’‌

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here