দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সোমবার পাটনায় লালুপ্রসাদ-রাবড়িদেবীর বাংলোয় শিব পুজোর আয়োজন হয়েছিল। বিহারের প্রাক্তন দুই মুখ্যমন্ত্রী দম্পতি ছোট ছেলে তেজস্বীর রাজনীতিতে মঙ্গলকামনা করতেই পুজোর বিশেষ আয়োজন করা হয়েছিল বলে খবর। বিহারে জেডিইউ-আরজেডি জোট সরকার গড়ার সম্ভাবনা দেখা দিতেই তেজস্বীকে এবার মুখ্যমন্ত্রীর আসনে দেখার বাসনা চাগাড় দিয়েছে বিহারী রাজনীতির যাদব পরিবারে।

এরই মধ্যে তাৎপর্যপূর্ণ ট্যুইট করেছেন লালুপ্রসাদের ছোট মেয়ে রোহিণী আর্য। সিঙ্গাপুর নিবাসী রোহিনী একটি জনপ্রিয় ভোজপুরি সঙ্গীতের লাইন টুইট করে বোঝাতে চেয়েছেন, বিহারে ফের যাদব-রাজ আসন্ন। অর্থাৎ বাবা লালুপ্রসাদ, মা রাবড়িদেবীর পর এবার দাদা তেজস্বী।

অবশ্য এতটা খোলসা করে বলেননি। কিন্তু গানের ভোজপুরি লাইনের মূল কথা হল ‘লালুপ্রসাদ ছাড়া বিহারের গতি নেই।’ সেই সঙ্গে অবশ্যই বিহারে রাজনৈতিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত করেছেন।

গানটি গেয়েছেন জনপ্রিয় ভোজপুরি গায়ক খেসারি লাল যাদব। সুরেলা গানটি আরজেডির সমর্থকদের মধ্যে খুবই জনপ্রিয়। দলের অনুষ্ঠানে ওই গান বাজিয়ে থাকেন তাঁরা। টুইটে একটি ভিডিও জুড়ে দিয়ে রোহিণী লিখেছেন, লণ্ঠনধারীর রাজ্যাভিষেক আসন্ন। বিহারে পরিবর্তনের প্রস্তুতি চলছে। লণ্ঠন হল, আরজেডির নির্বাচনী প্রতীক। এ বছরই লালুর দল ২৫ বছরে পা দিল।

খেসারি যাদবের গানটিতে বলা হয়েছে, বিহারে পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুতি নিতে হলে লালু প্রসাদ যাদবের সরকার ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব নয়। বলাইবাহুল্য আরজেডিতে লালুপ্রসাদ যাদব মানে এখন তেজস্বী।
রোহিণী হলেন, লালুপ্রসাদ-রাবড়ি দেবীর নয় সন্তানের মধ্যে অষ্টম। নানা সময়ে মিডিয়ার চর্চায় এসেছেন তিনি। সিঙ্গাপুরবাসী রোহিণী সোশ্যাল মিডিয়ায় খুবই সক্রিয়। বাবার মতো তিনিই বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবারের উপর খর্গহস্ত।

২০১৪-তে ভারত প্রকৃত স্বাধীনতা পেয়েছে বলে কয়েক বছর আগে বলিউড নায়িকা কঙ্গোনা রানাওয়াতের মন্তব্যের নিন্দা করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছিলেন রোহিণী। পেশায় চিকিৎসক রোহিণীর ২০০২ সালে আমেরিকা নিবাসী সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার সমরেশ সিংহের সঙ্গে বিয়ে হয়। বর্তমানে সিঙ্গাপুরে থাকেন। লালুপ্রসাদের সিঙ্গাপুরে মেয়ের বাড়িতে থেকে চিকিৎসা করানোর পরিকল্পনা চলছে।

বিহারের রাজ্যপাল ফাগু চৌহানের সঙ্গে দেখা করে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিলেন নীতীশ কুমার । বর্তমান সরকার ভেঙে দিলেন তিনি। সূত্রের খবর, এরই পাশাপাশি রাজ্যপালকে নীতীশ জানিয়েছেন, নতুন করে সরকার গঠনের জন্যও তিনি প্রস্তুত । তাঁর সঙ্গে সংখ্যাগরিষ্ঠ বিধায়কের সমর্থন রয়েছে। তাই এখনই বিধানসভা ভঙ্গ করে দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই।

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবেই এদিন রাজভবনে একা গিয়েছিলেন নীতীশ কুমার। আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব তাঁর সঙ্গে ছিলেন না। তার পর বেরিয়ে এসে নীতীশ বলেন, “দলের লোকসভা ও রাজ্যসভার সাংসদ এবং বিধায়কদের সবার দাবি ছিল এনডিএ ছেড়ে দেওয়া উচিত। সেই দাবি আমি মেনে নিয়েছি। তাই ইস্তফা দিয়েছি।”। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, বিজেপির সঙ্গে কী সমস্যা হচ্ছিল? নীতীশ সে প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘অনেক ধরনের সমস্যা ছিল’। এ কথা বলেই গাড়িতে উঠে পড়েন নীতীশ।

রাজনৈতিক সূত্রে জানা গিয়েছে, খুব শিগগির নীতীশ কুমার ও তেজস্বী যাদব একসঙ্গে রাজভবনে যাবেন। তার পর তাঁরা নতুন সরকার গঠনের কথা জানাবেন রাজ্যপালকে। সংখ্যাগরিষ্ঠ বিধায়ক যে তাঁদের সঙ্গে রয়েছেন সে ব্যাপারে লিখিত দেবেন রাজ্যপালকে।

জেডিইউ-র এক নেতার কথায়, মোটামুটি ভাবে আরজেডির সঙ্গে সমঝোতা হয়ে গিয়েছে। তেজস্বী যাদব আগেও উপ মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। এবারেও তাই হবেন। সেই সঙ্গে বিধানসভার স্পিকার নির্বাচিত করা হবে আরজেডি থেকে। এ ছাড়া কংগ্রেস থেকে চার জন মন্ত্রী হতে পারেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here