দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ নিজাম প্যালেস নয়, গাড়ি ঘুরিয়ে অনুব্রত মণ্ডল গেলেন এসএসকেএম হাসপাতালে। উডবার্ন ওয়ার্ডে ভর্তি হলেন তিনি। এই নিয়ে পঞ্চমবার সিবিআই-এর হাজিরা এড়ালেন তিনি। সকাল থেকেই এই জল্পনাই ঘোরপাক খাচ্ছিল রাজনৈতিক মহলে।

মঙ্গলবার রাতে বীরভূম থেকে গাড়িতে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেন অনুব্রত। তখন থেকেই মনে করা হচ্ছিল, তিনি কি সিবিআই-এর মুখোমুখি হতে আসছেন? সিবিআই-ও প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল। কেষ্টর জন্য প্রশ্নপত্রও ঠিক করে রেখেছিলেন তদন্তকারীরা। এমনকি সকালে নিজাম প্যালেসে পৌঁছে যান সিবিআই-এর জয়েন্ট ডিরেক্টর পঙ্কজ শ্রীবাস্তব।

উল্লেখ্য, এই জল্পনা আরও গাঢ় হন মঙ্গলবারই অনুব্রত মণ্ডলের আইনজীবী জানিয়েছিলেন, তাঁর মক্কেল বুধবার যেতে পারেন নিজাম প্যালেসে। যেহেতু হাইকোর্টের দুটি বেঞ্চেই অনুব্রতর রক্ষাকবচের আর্জি খারিজ হয়ে যায়, তাই প্রশ্ন উঠছিল, তবে কি তিনি উচ্চতর আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন? অনুব্রতর আইনজীবী জানিয়ে দেন, এখনই তাঁরা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন না। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সিবিআই-এর মুখোমুখি হন অনুব্রতর দেহরক্ষী। আজ কেষ্টর হাজিরার কথা ছিল। 

সেই মোতাবেক সকাল থেকেই নিজাম প্যালেসের তৎপরতা ছিল তুঙ্গে। কিন্তু আজ সকাল থেকেই ধোঁয়াশায় রেখেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর আইনজীবী। তাঁর আইনজীবীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, আদৌ কি নিজাম প্যালেসে যাবেন অনুব্রত?  আইনজীবী উত্তরে বলেছিলেন, ‘দেখা যাক…’ অনুব্রত মণ্ডলের শারীরিক অবস্থা কেমন আছে? সেই প্রশ্নও করা হয়েছিল আইনজীবীকে। তখনও তাঁর উত্তর ছিল ‘দেখা যাক..’।

১১ টার সময়ে নিজাম প্যালেসে হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল অনুব্রত মণ্ডলের। তার কিছু সময় আগেই নিউটাউনের ফ্ল্যাট থেকে গাড়ি নিয়ে বের হন অনুব্রত। কালো গাড়িতে রওনা দেন তিনি। সংবাদমাধ্যমও অনুসরণ করতে থাকে তাঁর কনভয়। টান টান উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়। প্রশ্ন তখনও ছিল, তিনি কি আদৌ নিজাম প্যালেসে যাচ্ছেন? অনুব্রতর কনভয় মা ফ্লাইওভার ধরা পর্যন্তও সেই জল্পনা জিইয়ে ছিল। তারপরই আচমকাই পার্কসার্কাসের দিকে না গিয়ে কনভয় ঘুরিয়ে নেন অনুব্রত।

বেলা ১১.২৭ মিনিট। অনুব্রত মণ্ডলের কালো রঙা এক্সইউভি গাড়ি ঢোকে এসএসকেএম হাসপাতালে। সমস্ত জল্পনার যবনিকা পতন হয় সেখানেই। অর্থাৎ পঞ্চমবারও সিবিআই হাজিরা এড়ালেন অনুব্রত। নিজাম প্যালেস থেকে ঠিক ৬ মিনিটের দূরত্বে এসএসকেএম। দুটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানের চিত্র তখন ভিন্ন। সিবিআই দফতরে তখনও মোতায়েন ছিল সিআরপিএফ জওয়ান। অন্যদিকে, এসএসকেএম চত্বর মুহূর্তের মধ্যে কড়া নিরাপত্তায় ঘিরে ফেলা হয়। হাসপাতালে ঢোকার মুখেই লোহার রেলিং দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়।

এবার প্রশ্ন সিবিআই কী পদক্ষেপ করেন? সেক্ষেত্রে অনুব্রতর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করতে পারে সিবিআই। হাইকোর্টের কাছে গোটা বিষয়টি জানাতে পারেন তদন্তকারীরা। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হতে পারে। যেহেতু তিনি হেভিওয়েট নেতা, তাই সেক্ষেত্রে বেশ কিছু পদক্ষেপও করতে পারে সিবিআই।

এর আগে তিন বার হাজিরা এড়িয়েছেন অনুব্রত। কখনও ভোটের ব্যস্ততা তো কখনও শারীরিক অসুস্থতার কথা বলেছিলেন অনুব্রতবাবু। দু’দিন আগে আসানসোলে তাঁকে যখন প্রশ্ন করা হয়, সিবিআই তো আবার ডাকল। আপনি কি যাবেন? জবাবে অনুব্রত বলেছিলেন, দেখা যাবে। যেদিন সিবিআই তাঁকে তলব করে সেদিন সকালেই আবার বগটুই তদন্তে সিবিআইয়ের ভূমিকার প্রশংসা শোনা গিয়েছিল অনুব্রত মণ্ডলের গলায়। বলেছিলেন, “সিবিআই দারুণ কাজ করছে।” কিন্তু কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা এখনই অনুব্রত মণ্ডলকে জেরা করার সুযোগ পাচ্ছেন না। তাঁদের অপেক্ষা আরও বাড়ল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here