দেশের সময়, কলকাতা : অভিষেক হতে চলেছে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। বিচারপতির পদ থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি এখন বিজেপি নেতা। আর বিজেপি নেতা হিসাবে শনিবার শিলিগুড়িতে প্রথম রাজনৈতিক সভায় যোগ দিতে চলেছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রীর সভাতেই তাঁর রাজনৈতিক মঞ্চে পা রাখা।

শনিবার শিলিগুড়িতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভায় যোগ দিতে যাওয়ার আগে সদ্য প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় দাবি করলেন, বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হওয়া উচিত।

এখন প্রশ্ন হল, প্রধানমন্ত্রীকে এই কথাটা বলতে পারবেন তো অভিজিৎ?

এদিন শিলিগুড়ির কাওয়াখালির মাঠে সভা করবেন প্রধানমন্ত্রী। আগামী সপ্তাহে লোকসভা ভোটের দিনক্ষণ শুরু হয়ে যাবে।

এদিকে লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার আগে বাংলায় তাঁর চতুর্থ সভা করতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সভা মঞ্চে অভিজিতের উজ্জ্বল উপস্থিতি দেখা যেতে পারে। 

কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী জমানায় দু’বার দুই রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে হাত পুড়েছে দিল্লির। সুপ্রিম কোর্টে জোরদার ধাক্কা খেতে হয়েছে। সদ্য প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সম্ভবত তা অজানা নয়। তার পরেও এদিন প্রধানমন্ত্রীর সভায় যোগ দিতে যাওয়ার আগে অভিজিৎ বলেন, বাংলায় আইনের শাসন নেই। সন্দেশখালিতে মহিলাদের উপর অত্যাচারের ঘটনা ঘটছে। এখানে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা উচিত। 

এদিনের অভিজিতের অভিব্যক্তিও ছিল নজিরবিহীন। বাগডোগরা বিমানবন্দরে নেমে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমার মধ্যে শিহরণ ঘটছে। এই প্রথম তাঁকে সামনে থেকে দেখতে পাব। কথা বলার চেষ্টা করব। বিজেপি আমাকে যেভাবে কাছে টেনে নিয়েছে তাতে আমি অভিভূত। ভারতে সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এই সাধারণ নির্বাচন। যে ভোটে গা ভাসাতে চলেছেন তিনিও।

আজ, শিলিগুড়িতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভা ঘিরে তৎপরতা। এই নিয়ে বাংলায় চার বার সভা করছেন প্রধানমন্ত্রী। আরামবাগ, কৃষ্ণনগরমঞ্চে  ও বারাসতের এবার পাহাড়বাসীর মন জয় করতে চান প্রধানমন্ত্রী। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আর সেই সভাতে প্রধানমন্ত্রীর পরই বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের উপস্থিতি।

ইতিমধ্যেই অভিজিতের নামে তমলুকে দেওয়াল লিখন শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রার্থীপদ ঘোষণা হওয়ার আগেই তমলুকের দেওয়ালে অভিজিৎ নাম নজর কাড়ছে রাজনৈতিক মহলে।

৪ মার্চ ঘোষণা করেছিলেন। ৫ মার্চ বিচারপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের সঙ্গে দেখা করেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ডাকযোগে রাষ্ট্রপতি দৌপদী মুর্মুর কাছে পদত্যাগপত্র পাঠান। পাশাপাশি কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকেও ইস্তফাপত্র পাঠান। ৭ মার্চ, বিজেপিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান করেন তিনি। রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও রাজ্য বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদারের কাছ থেকে দলীয় পতাকা তুলে নেন তিনি। এর মধ্যে তিনি কোনও রাজনৈতিক সভায় যোগ দেননি, এটাই তাঁর প্রথম রাজনৈতিক মঞ্চ।

পর্যবেক্ষকদের মতে, সদ্য প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় হল বিজেপির প্রাইজ ক্যাচ। বাংলায় বুদ্ধিজীবী শ্রেণি বরাবরই সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী এবং বিজেপি বিরোধী। তলে তলে কেউ কেউ বা বিজেপিকে সমর্থন করলেও মুখে লাজ রয়েছে অনেকেরই। অভিজিৎকে সামনে রেখে বিজেপি দেখাতে চাইছে, বাংলায় তথাকথিত বুদ্ধিজীবী মহলেও তাঁদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here