দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ প্রিয়ঙ্কা গান্ধীকে সরকারি বাংলো ছাড়ার নোটিস ধরাল কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকার। কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রক বুধবার এ ব্যাপারে নোটিস জারি করে জানিয়েছে, ১ অগস্টের মধ্যে সরকারি বাংলো ছাড়তে হবে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢড়াকে।

কয়েক মাস আগে গান্ধী পরিবারের নিরাপত্তার দায়িত্ব থেকে এসপিজি তথা স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রুপকে সরিয়ে দিয়েছিল সরকার। পরিবর্তে শুধু কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। তার পরই এই পদক্ষেপ করল কেন্দ্র।

কেন্দ্রে বাজপেয়ী জমানা থেকেই নয়াদিল্লির লোধি এস্টেটের একটি বাংলোতে থাকেন প্রিয়ঙ্কা। প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর মৃত্যুর পর থেকেই রাহুল, প্রিয়ঙ্কা এবং প্রিয়ঙ্কার পরিবার তথা তাঁর স্বামী রবার্ট বঢড়াও এসপিজি নিরাপত্তা পেতেন। সেই কারণেই সরকারি বাংলো দেওয়া হয়েছিল প্রিয়ঙ্কাকে। কিন্তু এখন আর যে হেতু সেই নিরাপত্তা প্রিয়ঙ্কা পান না তাই তাঁর বাংলোও তাঁকে ছেড়ে দিতে বলা হল।

তবে প্রিয়ঙ্কাকে বাংলো ছাড়তে হলেও সনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধীর সরকারি বাংলো থাকবে। লোকসভার পাঁচ বারের সাংসদ সনিয়া গান্ধী। তা ছাড়া তিনি বৃহত্তম বিরোধী দলের সভানেত্রী। ফলে লুটিয়েন দিল্লিতে এমনিতেই তাঁর টাইপ এইট বাংলো পাওয়ার কথা। রাহুল গান্ধীও চার বারের সাংসদ। তুঘলক লেনে তিনি যে সরকারি বাসভবনে থাকেন তা সাংসদ হিসাবেই পাওয়ার যোগ্য তিনি। কিন্তু প্রিয়ঙ্কা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি নন। 

তাঁর কেবল সাংগঠনিক পদ রয়েছে। সর্বভারতীয় কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ও ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য তিনি। ফলে সরকারি বাংলো তাঁর পাওয়ার কথা নয়।

পর্যবেক্ষকদের মতে, নিয়ম অনুযায়ী সরকারি যে নোটিস ইস্যু করেছে তাতে কোনও ভুল নেই। কিন্তু এও ঠিক, নয়াদিল্লির রাজনৈতিক ইতিহাসে এ ধরনের সংকীর্ণতা অতীতে ছিল না। বাজপেয়ী জমানায় কংগ্রেসের নেতারা সংসদের সদস্য না হওয়া সত্ত্বেও সরকারি বাংলোতে থাকার সুযোগ পেয়েছেন। আবার কংগ্রেস জমানায় বিজেপির প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরাও সরকারি বাংলোতে থেকেছেন। এমনকি এও ঘটেছে যে নোটিস ধরানোর পরেও বাংলো ছাড়তে চাননি।

জানিয়ে রাখা ভাল, সংসদের সদস্য না হয়েও লুটিয়েন দিল্লিতে সরকারি বাংলোতে থাকা যায়। তবে সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় পূর্ত দফতরকে ভাড়া দিতে হয়। যেমন, ২০০৯ সালের লোকসভা ভোটে রামবিলাস পাসোয়ান জিততে পারেননি। অথচ তার আগের মেয়াদে তিনি সাংসদ ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন। সনিয়া গান্ধীর ১০ জনপথ লাগোয়া বিশাল সরকারি বাংলোয় তিনি থাকতেন। সেটা টাইপ এইট বাংলো অর্থাৎ সব থেকে বড় বাংলোর শ্রেণির মধ্যেই পড়ে। ভোটে হেরে যাওয়ার পর স্বাভাবিক ভাবেই তাঁকে সেই বাংলো ছাড়তে বলা হয়। 

কিন্তু রামবিলাস ছাড়তে রাজি হননি। ছোট বাংলোতেও সরে যেতে চাননি। বরং ভাড়া দিয়ে পাঁচ বছর ওই বাংলোতেই ছিলেন। পরে আবার ২০১৪ ও ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে জয়ী হয়ে ফের মন্ত্রী হয়েছেন রামবিলাস। ফলে ১২ নম্বর জনপথ রোডের বাংলোতে এখনও রয়ে গিয়েছেন তিনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here