দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে দেখতে শহরে এসে পৌঁছলেন প্রবাদপ্রতিম চিকিৎসক বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ দেবী শেঠী। তাঁরই তত্ত্বাবধানে আজই অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি করে হার্টে বাকি দু’টি স্টেন্ট বসানোর সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে। চিকিতৎসকরা জানিয়েছেন, প্রথমে অ্যাঞ্জিওগ্রাম করে ধমনীগুলিতে ব্লকেজের পরিস্থিতি দেখা হবে। এর পরেই অ্যাঞ্জিওপ্ল্যাস্টির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। মুম্বই থেকে ডক্টর অশ্বিন মেহেতাও এসে পৌঁছবেন সৌরভকে দেখতে।


এদিন দেবী শেঠী এসে পৌঁছনোর পরে কলকাতার হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে প্রথমে বৈঠক করবেন তিনি। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ডক্টর সপ্তর্ষি বসু, ডক্টর সরোজ মণ্ডল ও ডক্টর আফতাব খান। সব রিপোর্ট ভাল করে খতিয়ে দেখে, তবেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে চূড়ান্ত। তার পরে ক্যাথ ল্য়াবে নিয়ে যাওয়া হবে সৌরভকে। করা হবে জরুরি সব পরীক্ষা।

হাসপাতাল সূত্রের খবর, এমনিতে স্থিতিশীল রয়েছেন সৌরভ। বুধবার রাতে ভালো ঘুম হয়েছে তাঁর। খাওয়াদাওয়াও করেছেন পরিমিত। চলছে কিছু ওষুধ। আজ সকালে তিনি খবরের কাগজও পড়েছেন। অস্বস্তি তেমন নেই। তবে যে ব্লকেজ দুটিতে স্টেন্ট বসানো হয়নি, সেগুলো ফেলে রাখা যাবে নাকি আজই করতে হবে, সেটাই এখন মূল বিষয়।


আজ সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। জানা গিয়েছে, সরাসরি মহারাজকেই ফোন করেন তিনি। তাঁর শরীরের খোঁজ নেন। আজ বিকেলে তাঁকে দেখতে হাসপাতালেও যেতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী।

গতকাল অর্থাৎ বুধবার বিকেলের দিকে সৌরভ ভর্তি হওয়ার পরে অ্যাপোলো হাসপাতালের তরফ থেকে একটি মেডিকেল বুলেটিন প্রকাশ করা হয়েছিল, তাতে বলা হয়, সৌরভের হৃদযন্ত্র স্বাভাবিক রয়েছে। তিনি যে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রুটিন চেকআপ করাতে এসেছেন, সেটিও উল্লেখ করা হয়। কিন্তু বিষয়টি যে এত লঘু নয়, সেটি বোঝা যায় কিছুক্ষণের মধ্যেই। কারণ উডল্যান্ডস হাসপাতাল সূত্রে একটি মেডিকেল বুলেটিন প্রকাশ করা হয় সঙ্গে সঙ্গেই। সেখানে তারা লেখে, সৌরভের বাকি দুটি স্টেন্ট বসবে বৃহস্পতিবার ডাঃ দেবী শেঠীর সামনেই। অবশ্য এর আগের বার যে তিন চিকিৎসক সৌরভের চিকিৎসা করিয়েছিলেন, সেই তিন জন এবারও থাকছেন স্টেন্ট বসানোর সময়।

একটা আশঙ্কা গতকাল দুপুর থেকে তৈরি হয়েছিল, যখন ফের গ্রিন করিডরে সৌরভকে সল্টলেকের হাসপাতালে ঝটিতি ভর্তি করতে হয়। কারণ রুটিন চেকআপ হলে সেটি এত দ্রুততার সঙ্গে কেন করা হবে, সেই নিয়ে একটা গুঞ্জন চলছিলই। তাই ডাঃ দেবী শেঠীর সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ করে মেডিকেল বোর্ড। তাঁরাই জানান, স্টেন্ট বসানোর ক্ষেত্রে এত দেরি করা ঠিক হবে না।
সব থেকে বড় বিষয়, গত ৭ জানুয়ারি আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতাল থেকে বোর্ড প্রেসিডেন্ট রিলিজ পাওয়ার পরে তাঁকে বলে দেওয়া হয়, দুই সপ্তাহের মধ্যে তাঁকে ফের হাসপাতালে এসে পরীক্ষা করতে হবে। এর মধ্যে তিনি থাকবেন পুরোপুরি বেড রেস্টে। কিন্তু তারপর সৌরভ অনিয়ম করেছেন কিনা, সেই প্রশ্নও চিকিৎসকমহলে উঠছে। এও দেখা হচ্ছে, গতবার যে ওষুধ দেওয়া হয়, তার কোনও প্রতিক্রিয়া ঘটল কিনা!
এও বলা হচ্ছে, সৌরভ হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার পরেও বোর্ডের কাজকর্ম ভালই চালিয়ে গিয়েছেন। তিনি ফোন করে নানা বিষয়ে কথা বলেছেন কখনও ক্রিকেটারদের সঙ্গে, আবার কখনও বা বোর্ডের বাকি কর্তাদের সঙ্গে। এই টেনশন নেওয়া ঠিক হয়েছে কিনা, সেটিও কথা প্রসঙ্গে উঠে এসেছে।

সে যাই হোক না কেন, হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ফেরার দিন কয়েকের মধ্যেই ফের বুকে অস্বস্তি বোধ করায় কোনও রকম ঝুঁকি না নিয়ে তড়িঘড়ি তাঁকে ভর্তি করা হয় বাইপাসের ধারে অ্যাপোলো হাসপাতালে। গতবারও তাঁর চিকিৎসার জন্য কলকাতায় এসেঠছিলেন ডক্টর দেবী শেঠি। তখন সৌরভ গাঙ্গুলির হার্টের একটি ব্লকেজে স্টেন্ট বসানো হয়। বাকি দুটি ব্লকেজে পরে স্টেন্ট বসানোর কথা জানান চিকিৎসকরা। তার পরই তিনি ছুটি পেয়ে বাড়ি যান।
সম্প্রতি বুকে সমস্যা নিয়ে উডল্যান্ডস হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন সৌরভের দাদা স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়ও। তাঁরও একটি স্টেন্ট বসানো হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here