দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যুতে মাদক যোগের ঘটনায় রিয়া চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করল নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো। এনসিবি সূত্রে খবর, আজ বিকেলেই স্বাস্থ্য-পরীক্ষা হবে রিয়ার। তবে তার আগে বাকি তিনজন অর্থাৎ রিয়ার ভাই শৌভিক চক্রবর্তী, সুশান্তের বান্দ্রার ফ্ল্যাটের ম্যানেজার স্যামুয়েল মিরান্ডা এবং সুশান্তের রাঁধুনি দীপেশ সাওয়ান্তকে সঙ্গে সম্ভবত স্বাস্থ্য-পরীক্ষার আগেই রিয়াকে আদালতে পেশ করা হবে। তাঁকে হেফাজতে নেওয়ার জন্য নারকোটিক্স ব্যুরো আদালতে আর্জি জানাতে পারে বলে খবর।

এনসিবি সূত্রে খবর, গতকাল সোমবার রিয়া এবং তাঁর ভাই শৌভিককে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হয়েছে। সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ শুরু হয়েছিল জিজ্ঞাসাবাদ। নারকোটিক্স ব্যুরো সূত্রে খবর, রিয়া নাকি বলেছেন, “তিনি জা করেছেন সুশান্তের জন্য করেছেন।” অতীতে রিয়া তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা মাদক সেবন বা মাদক পাচারকারীদের সঙ্গে যোগাযোগের সমস্ত অভিযোগ নস্যাৎ করে জানিয়েছিলেন, তিনি জীবনে কোনওদিন ড্রাগ নেননি এবং যে কোনও সময় রক্ত পরীক্ষার জন্য তিনি প্রস্তুত।

গত রবিবার থেকে আজ নিয়ে তিনদিন ধরে রিয়া চক্রবর্তীকে জেরা করছিলেন এনসিবির তদন্তকারী আধিকারিকরা। প্রসঙ্গত, রবিবার সাতসকালে রিয়ার বাড়িতে সমন পাঠায় নারকোটিক্স ব্যুরো। সেদিন সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ এনসিবির দফতরে হাজিরা দেন রিয়া। সন্ধে পর্যন্ত চলে জিজ্ঞাসাবাদ। সোমবার ফের তাঁকে তলব করে এনসিবি। গতকালও দীর্ঘক্ষণ জেরা করা হয় প্রয়াত অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীকে। এরপর মঙ্গলবার তৃতীয়বারের জন্য এনসিবি দফতরে যান রিয়া। আজ সকাল থেকে জিজ্ঞাসাবাদের পর বেলা গড়ালে তাঁকে গ্রেফতার করে নারকোটিক্স ব্যুরো।

এর আগে গত শুক্রবার রিয়া-শৌভিকের বাড়িতে পৌঁছয় নারকোটিক্স ব্যুরোর সার্চ টিম। তল্লাশির পর শৌভিকের ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করা হয়। তল্লাশি অভিযান শেষে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শৌভিককে সঙ্গে করে নিয়েই এনসিবির দফতরে ফেরেন তান্তকারী আধিকারিকরা। দিনভর জেরার পর সন্ধ্যায় শৌভিক চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করে এনসিবি। শনিবার তাঁকে আদালতে পেশ করা হয়। আগামি ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাঁকে নারকোটিক্স ব্যুরোর হেফাজতে থাকার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

ওই একই দিনে গ্রেফতার করা হয় সুশান্তের বান্দ্রার ফ্ল্যাটের ম্যানেজার স্যামুয়েল মিরান্ডাকে। শৌভিকের মতোই একই ভাবে স্যামুয়েলের বাড়িতেও সাতসকালে পৌঁছয় এনসিবির টিম। তল্লাশির পর তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সঙ্গে করে এনসিবি দফতরে নিয়ে জান সার্চ টিমের আধিকারিকরা। সারাদিন জেরার পর সন্ধ্যায় গ্রেফতার করা হয় স্যামুয়েলকে। এরপর শনিবার জিজ্ঞাসাবাদ এবংবয়ান রেকর্ডের জন্য সুশান্তের রাঁধুনি দীপেশ সাওয়ান্তকে তলব করে নারকোটিক্স ব্যুরো। সন্ধে পর্যন্ত জেরার পর তাঁকেও গ্রেফতার করা হয়। স্যামুয়েল এবং দীপেশ এই দু’জনও ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এনসিবির হেফাজতেই থাকবেন।

এদিকে ছেলের গ্রেফতার প্রসঙ্গে শনিবার সন্ধ্যায় রিয়া-শৌভিকের বাবা অবসরপ্রাপ্ত সেনা আধিকারিক ইন্দ্রজিৎ চক্রবর্তী বলেন, “অভিনন্দন ভারতবর্ষ। আমার ছেলেকে গ্রেফতার হয়েছে। আমি নিশ্চিত তালিকায় এরপরেই রয়েছে আমার মেয়ে রিয়া। জানি না তারপরে কে রয়েছেন। একটি মধ্যবিত্ত পরিবারকে একদম ভেঙে-গুঁড়িয়ে দিয়েছ তোমরা। তবে ন্যায়বিচারের জন্য সবকিছুই যুক্তিযুক্ত। জয় হিন্দ।“

অন্যদিকে রবিবার রিয়ার আইনজীবী সতীশ মানশিন্ডে বলেছেন, পুলিশ, ইডি, সিবিআই এবং এনসিবি কারও ক্ষেত্রেই আগাম জামিনের আবেদন জানাননি তাঁর মক্কেল। তিনি আরও বলেছেন যে, “গ্রেফতার হওয়ার জন্য রিয়া প্রস্তুত। কাউকে ভালবাসা যদি অপরাধ হয় তাহলে নিজের ভালবাসার জন্য সবরকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে তৈরি তিনি।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here