দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পকে এ বার সার্বজনীন করার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজ্যে স্বাস্থ্য প্রকল্প শুরু হয়েছে অনেক দিন। তবে সেই প্রকল্পের সুবিধা সব পরিবার পেত না। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন ওই প্রকল্প এবার সার্বজনীন করা হল। রাজ্যের সাড়ে সাত কোটি পরিবারকে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের আওতায় আনার লক্ষ্য ছিল সরকারের। আরও আড়াই কোটি মানুষকে এই প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। যাঁরা কোনওরকম স্বাস্থ্য বিমার সুযোগ পান না তাঁরা সবাই এই প্রকল্পের আওতায় ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিমার সুযোগ পাবেন। গৃহকর্ত্রীর নামে সেই কার্ড ইস্যু করবে সরকার। তবে পরিবারের সবাই সেই সুবিধার আওতায় থাকবে।

এখানে বোঝার বিষয় হল, মাথা পিছু ৫ লক্ষ টাকা বিমা নয়। পরিবার পিছু ৫ লক্ষ টাকা বিমা। তবে পরিবারের কোনও এক সদস্যের জন্য পুরো বিমার টাকা অর্থাৎ ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার সুবিধা নেওয়া যাবে।

মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানিয়েছেন, সবটাই হবে ক্যাশলেস প্রক্রিয়ায়। সরকারি হাসপাতাল ছাড়াও দেড় হাজার বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমকে এর আওতায় এম প্যানেল করা হয়েছে।


প্রশ্ন হল কারা এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন?

মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এতদিনে বহু পরিবার স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন। এ বার বাকি সবাই পাবেন, যাঁরা কোনওরকম স্বাস্থ্য বিমার সুবিধা পান না। তাঁর কথায়, “এই ধরুন আমার রিকশাওয়ালারা, আমার টোটোওয়ালারা, আমার ইটভাটা কর্মীরা, আমার ড্রাইভাররা… সবাই পাবেন।”
মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ১ ডিসেম্বর থেকে অভিযান শুরু হবে। ‘দুয়ারে দুয়ারে সরকার’ ক্যাম্পেনিং হবে। সেখানে গিয়ে আবেদন করা যাবে। তার পর কার্ড যথাসময়ে পৌঁছে যাবে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, বিশ্বের ইতিহাসে এই প্রকল্প দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। অন্য রাজ্যগুলো পরে চাইলে অনুসরণ করতে পারে। তিনি এও জানিয়েছেন, এ জন্য সরকারের বছরে অতিরিক্ত আরও ২ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে।

বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় অবশ্য বলেছেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার মিথ্যাচারের এভারেস্টে পৌঁছে গিয়েছে। বাস্তব হল, কেন্দ্রীয় সরকারের আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের আওতায় সার্বজনীন স্বাস্থ্য বিমার সুবিধা দু’বছর আগে শুরু হয়েছে। স্রেফ রাজনীতি করার জন্য বাংলায় এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন করেননি মমতাজি। তাতে বাংলার মানুষ এতোদিন ধরে বঞ্চিত হয়েছেন। উনি দাবি করতেন, রাজ্যের সবাই নাকি স্বাস্থ্য সাথীর সুবিধা পায়। সেই দাবি ছিল ঝুটো। এখন ভোটের আগে ঠ্যালায় পড়ে এই প্রকল্প চালু করছে।”


পর্যবেক্ষকদের অনেকেই এই ঘোষণাকে ভোটের সঙ্গে জুড়ে দেখতে চাইছেন। তাঁদের কারও কারও মতে, এই যে দুয়ারে দুয়ারে ক্যাম্প হবে। এটাও আসলে জনসংযোগের কৌশল। তবে বিমা প্রকল্প সার্বজনীন হলে এবং এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন ঠিকঠাক ভাবে হলে সাধারণ মানুষের অবশ্যই সুরাহা হওয়ার কথা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here