দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ করোনা পরিস্থিতিতে অমানবিকতার সাক্ষী হল ক্যানিং। করোনা সন্দেহে মৃত্যু হওয়ার পরে ১৭ ঘণ্টা ধরে ঘরের মেঝেতে পড়ে রইল ৪৫ বছরের এক ব্যক্তির দেহ। অভিযোগ, দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও মৃতদেহ সৎকার করতে এগিয়ে আসেননি কেউ। অসহায় স্ত্রী-পুত্র-কন্যারা কান্নাকাটি করলেও সাড়া তো মেলেইনি, উল্টে করোনা সন্দেহে মৃতের পরিবারকেই একঘরে করে দেয় গ্রামবাসীরা। শেষমেশ সমাধান মিলল পুলিশ-প্রশাসনের হস্তক্ষেপে।

সোমবার এই ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ক্যানিং থানার ইটখোলা গ্রামপঞ্চায়েতের গোলাবাড়ি বাজার সংলগ্ন গ্রামে। স্থানীয় সূত্রের খবর, মৃত ওই ব্যক্তির নাম সঞ্জীব নস্কর। স্ত্রী সৌরভী নস্কর, তিন মেয়ে, এক ছেলে ও মাকে নিয়ে থাকতেন তিনি। কলকাতায় এক বেসরকারি সংস্থায় সিকিউরিটি গার্ডের কাজ করতেন।

জানা গেছে, বেশ কিছু দিন ধরেই টাইফয়েড ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন সঞ্জীববাবু। কলকাতার মুকুন্দপুর এলাকার একটি নার্সিং হোমে চিকিৎসাও চলছিল তাঁর। দিন কয়েক আগে একটু সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে আসেন তিনি। তবে ক্যানিংয়েরই এক চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা করাচ্ছিলেন তার পর থেকে।

কিন্তু রবিবার গভীর রাতে, সাড়ে তিনটে নাগাদ বাড়িতেই হঠাৎ মারা যান সঞ্জীব। এই মৃত্যুর কথা চাউর হতেই গ্রামবাসীরা সন্দেহ করেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। ফলে মৃত্যুর পরেও সৎকারের জন্য প্রতিবেশীরা কেউ এগিয়ে আসেননি। পরিবারের জ্ঞাতি সদস্যরাও একঘরে করে দেন তাঁদের।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন ক্যানিং ১-এর বিডিও নিলাদ্রীশেখর দে, ক্যানিং থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক অমিত কুমার হাতি, ইটখোলা গ্রামপঞ্চায়েত প্রধান খতিব সর্দার। বিশাল পুলিশ বাহিনীও হাজির হয় ঘটনাস্থলে। তাঁরা গ্রামবাসীদের এবং মৃতের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে দেহটি সৎকারের জন্য সব ব্যবস্থা করে দেন। শেষমেশ সোমবার রাতে দেহটি গাড়ি করে নিয়ে যাওয়া হয় বারুইপুর কীর্তিনখোলা শশ্মানে।

স্থানীয় ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক শ্যামল মণ্ডল বলেন, সঞ্জীব নস্করের মৃত্যু করোনায় হয়নি। গ্রামবাসীরা অযথা করোনা সন্দেহ করলে এমন ঘটনা ঘটে। তবে বিষয়টি পুলিশ, প্রশাসন, আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হয়েছে। সৎকারও হয়েছে দেহ। মৃতের পরিবারের পাশে সরকার সবসময় আছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here