দেশের সময় ওয়েবডেস্ক : মধ্যযুগীয় বর্বরতা বললেও কম বলা হবে। পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের শিয়ালকোটে ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটল শুক্রবার। পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের শিয়ালকোটে একটি কারখানার ম্যানেজারকে জ্যান্ত জ্বালিয়ে দিয়েছে স্থানীয় কিছু যুবক। তিনি শ্রীলঙ্কার নাগরিক । তাঁর নাম প্রিয়ন্ত কুমারা। তিনি যে কারখানায় ম্যানেজারের কাজ করতেন, সেখানে তৈরি হয় পাকিস্তান টি-টোয়েন্টি দলের সরঞ্জাম ৷

তাঁকে পিটিয়ে মারার পর জ্যান্ত জ্বালিয়ে দিয়েছে উন্মত্ত জনতা। যা নিয়ে তোলপাড় পাকিস্তান।ইসলাম অবমাননার জিগির তুলে শুধু বছর ৪০-এর প্রিয়ন্তকে পিটিয়ে মারার পর জ্যান্ত জ্বালিয়ে দেওয়াই হয়নি, ওই কারখানায় কার্যত তাণ্ডব চালিয়েছে স্থানীয় যুবকরা । কারখানার অফিসে ঢুকে ভাঙচুর করা হয়েছে একাধিক কম্পিউটার। অগ্নিসংযোগের চেষ্টা হয়েছিল ওই ক্রিকেট সরঞ্জাম তৈরির কারখানার স্টোর রুমেও।

গোটা ঘটনা নিয়ে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান টুইট করে বলেছেন, আজ পাকিস্তানের জন্য লজ্জার দিন। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, যে নৃশংস ঘটনা ঘটেছে তার তদন্ত তিনি তদারকি করবেন। দ্রুততার সঙ্গে দোষীদের গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

মাঝবয়সী এই শ্রীলঙ্কার নাগরিক কর্মসূত্রে পাকিস্তানে থাকতেন। তিনি পাঞ্জাব প্রদেশের শিয়ালকোটের ওয়াজিয়াবাদের একটি কারখানায় কর্মরত ছিলেন। এদিন সকালে সেই কারখানার সামনেই ভিড় জমায় কয়েকশ যুবক। অভিযোগ, শ্রীলঙ্কার ওই ব্যক্তি ইসলামের অবমাননা করেছেন।

এরপরেই কারখানার ভিতরে ঢুকে কয়েকশ যুবক মিলে একজনে ফেলে পেটাতে থাকে। এখানেই শেষ নয়। তারপর গায়ে জ্বালানি তেল ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ছটফট করতে করতে সেখানেই মারা যান ওই ব্যক্তি।

একাধিক ফুটেজ ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, শ্রীলঙ্কার নাগরিক যখন আগুনে জ্বলতে জ্বলতে ছটফট করছেন তখন গলায় স্লোগান তুলে হাততালি দিচ্ছে যুবকের দল।পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হাসান খাওয়ার বলেছেন, “যারা এই নৃশংসতা ঘটিয়েছে তারা ইসলামের লজ্জা।” ইতিমধ্যেই ৮০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পাক পাঞ্জাবের আইজি সর্দার আলি খান বলেছেন, বাকিদের খোঁজেও তল্লাশি চালানো হচ্ছে। যে ঘটনা ঘটেছে তার কোনও ক্ষমা নেই। প্রশাসন যা করার তাই করবে।

পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হাসান খাওয়ার বলেছেন, “যারা এই নৃশংসতা ঘটিয়েছে তারা ইসলামের লজ্জা।” ইতিমধ্যেই ৮০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পাক পাঞ্জাবের আইজি সর্দার আলি খান বলেছেন, বাকিদের খোঁজেও তল্লাশি চালানো হচ্ছে। যে ঘটনা ঘটেছে তার কোনও ক্ষমা নেই। প্রশাসন যা করার তাই করবে।

কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে শ্রীলঙ্কার বিদেশমন্ত্রকও। মন্ত্রকের মুখপাত্র সুগীশ্বরা গুরুরত্ন বলেছেন, ইসলামাবাদের শ্রীলঙ্কার দূতাবাসকে বলা হয়েছে ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য সংগ্রহ করতে। বিদেশমন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, পাকিস্তান সরকার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি সুনিশ্চিত করুক। এই ঘটনা নিয়ে পাকিস্তানের মানবাধিকারকর্মী, রাজনীতিবিদ—সকলেই নিন্দা জানিয়েছেন। কেউ কেউ উদ্বেগ প্রকাশ করে লিখেছেন, আরও কত বর্বরতা আমাদের দেখতে হবে! অনেকের মতে, এই হামলা, খুনের মধ্যে দিয়ে শিয়ালকোটের ওই উন্মত্ত জনতা পাকিস্তান ক্রিকেটকেও কলঙ্কিত করেছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here