দেশের সময়: –এ রাজ্যের লোকসভা ভোটের ফল বিজেপিকে বুঝিয়ে দিয়েছে রাজ্যে পালাবদলের স্রোত শুরু হয়ে গেছে।এখন থেকেই যদি ঝাঁপিয়ে পড়া যায় তবে আগামি দিনে এরাজ্যের শাসক হিসেবে তারাই ক্ষমতার চেয়ারে বসতে পারে।আর তাই বিজেপি তাদের কৌশল সাজাতে শুরু করে দিয়েছে।

মকুল রায় যেমন মনে করছেন ২০২১ এর অনেক আগেই তৃণমূলকে ভেঙে দেওয়া যাবে।বিজেপির শীর্ষ নেতারা অবশ্য মনে করছেন ভেঙে দিয়ে নয় বরং ভোটের মাধ্যমেই এ রাজ্যে ক্ষমতা দখল করতে হবে।তবে দল ভাঙানোর ক্ষেত্রে বিজেপিকে আর কৌশলী হতে হবে।সাধারণ কর্মী সমর্থকদের ভাবাবেগে আঘাত লাগতে পারে এমন কোন কাজ না করে পরিস্থিতি অনুযায়ী সবাইকে বোঝাতে হবে তৃণমূলের সংগঠনের লোকজনকে দিয়েই তৃণমূলকে আঘাত করতে হবে।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি যেমন অকপটে বলছেন,যার শীল যার নোড়া তারই ভাঙবো দাঁতের গোড়াঁ।মনিরুলকে একটু অস্বস্তিতে পড়লেও বিজেপি যে তৃণমূল ভাঙিয়ে দলে লোক নেওয়া কমাবে না তা পরিষ্কার করে দিয়েছেন দলের নেতারা।মনিরুল কান্ডের পর একটু ব্যাকফুটে থাকলেও দল ভাঙানোর খেলায় বিজেপির শীর্ষ নেতারা যে এখনও মকুল রায়কেই ভরসা করছেন দলের একটি সূত্র তা পরিষ্কার করে দিয়েছে।

সেই সুত্রেরই খবর হল সম্প্রতি দিল্লিতে বিজেপি শীর্ষ নেতাদের এক আলোচনায় মকুল রায় পরিষ্কার করে দিয়েছেন এই তৃণমূলের যাবতীয় প্রাণরস এখনই শুকিয়ে যাবে যদি শুভেন্দু অধিকারীকে তৃণমূল থেকে সরিয়ে আনা যায়।শোনা যাচ্ছে দিল্লির নেতারা নাকি শুভেন্দুকে দলে পেতে মরিয়া।তৃণমূল কংগ্রেসে মমতার পর যদি কারোর জনভিত্তি থেকে থাকে সে অবশ্যই শুভেন্দু,অত্যন্ত ডাকাবুকো এই নেতা তৃণমলের এখন একমাত্র স্তম্ভ।তাকে সরিয়ে দিতে পারলে মমতার সরকার একেবারে কাঁত হয়ে যাবে বলে বিজেপির শীর্ষ নেতারা অধিকাংশই বিশ্বাস করেন।আর তাঁদের এই বিশ্বাস জাগিয়ে দিয়েছেন মুকুল রায়।

শুভেন্দুকে দলে পেতে তাই নানা প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন বিজেপি নেতারা।মুকুল রায় এই বিষয়ে একটু ধিরে চলার নীতি নিয়ে চলতে চাইছেন।তাঁর মতে এখনই বিষয়টি নিয়ে না ঝাঁপিয়ে সব দিক বিবেচনা করে ধিরে ধিরে পরিস্থিতি তৈরি করতে যাতে শুভেন্দুও দল পাল্টাতে উ্তসাহ বোধ করে।তাছাড়া মকুল রায় মনে করছেন মমতা একেবারে শেষ বেলায় আঘাত করাই ভাল যাতে সে আর সমস্যা মোকাবিলা করার মত সময় না পায়।

তবে সুত্র বলছে অন্তত শুভেন্দুকে নিয়ে সিদ্ধান্ত ফেলে রাখতে চাইছে না বিজেপির শীর্ষ নেতারা,তারা বুঝতে চাইছেন শুভেন্দুকে দলে পাওয়া আদৌ যাবে কি না।শুভেন্দুর চাহিদাও তাঁরা বুঝে নিতে চাইছেন।শোনা যাচ্ছে কেউ কেউ এমনও বলছেন শুভেন্দুকে মুখ্যমন্ত্রী প্রোজেক্ট করে এ রাজ্যের বিধানসভা ভোটে লড়া যায় কিনা তা নিয়েও নাকি ভাবতে শুরু করেছে বিজেপির শীর্ষ নেতারা।তবে এসব কোন কথারই কোন নিশ্চয়তা পাওয়া যায় নি।প্রত্যক্ষভাবে এনিয়ে কেউ কোন কথা বলেন নি।

তবে বিজেপি শিবিরে শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে নিয়ে তুমুল আগ্রহ আছে এবং শুভেন্দু অন্য দলে গেলে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একেবারে হীনবল হয়ে পড়বেন তা বুঝেই মমতা শুভেন্দুকে এখন আগলে রাখতে চাইছেন,তাই শুভেন্দুর গুরুত্ব দলে ক্রমাগত বাড়ানো হচ্ছে,মমতা এমন একটা ভঙ্গি করছেন যেন তাঁর পড়ে শুভেন্দুই দলের হাল ধরবেন,এথচ এই কিছুদিন আগেও মমতা তাঁর ভাইপোকেই তাঁর পড়ের চেয়ারটা দেবার জন্য তৈরি হচ্ছিলেন।

অনেকে বলছেন একে বলে ঠ্যালার নাম বাবাজি।তবে শুভেন্দুর সঙ্গে কোন কথা বিজেপির তরফে হয়েছে কিনা তা নিয়ে কেউ কিছু বলতে রাজি নয়,একটা বিষয় পরিষ্কার শুভেন্দু অধিকারী আগামি দিনে এ রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে আলোচিত নাম হতে যাচ্ছেন।রাজনীতিতে কোন কিছুই অসম্ভব নয় এটা যেমন সত্যি তেমনি রাজনীতিতেই হয়তো সবকিছুই অনিশ্চিত।

মকুল রায় নামের বঙ্গের চানক্য কী ভাবছেন তার উপরই হয়তো অনেক কিছু অপেক্ষা করছে।তবে বিজেপি শিবিরে যে শুভেন্দু অধিকারী এই মুহূর্তে খুব দামি নাম তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here