দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ এ বছরের মতো শীতের পালা শেষ — বলছেন আবহবিদেরা।
উত্তুরে বাতাস নেই। হাওয়ায় শুষ্ক ভাব থাকলেও থার্মোমিটারের পারদ ঊর্ধ্বমুখী। তা হলে কি বসন্ত এসে গিয়েছে? আবহবিদেরা বলছেন, এ বার ক্রমশ তাপমাত্রা বাড়বে। ধীরে ধীরে মিলবে দখিনা বাতাসও। বস্তুত, ফেব্রুয়ারি মাসের এই সময় থেকেই ক্রমশ তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। বসন্তের আনাগোনা শুরু হয়। এ বার অবশ্য ‘প্রেম দিবসের’ ঠিক আগেই বসন্তের হাজিরার কথা শোনা যাচ্ছে।

শেষ ‘শীতসুখ’, দিনেরবেলা শহর কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকতে পারে ৩১ ডিগ্রিরও বেশি। সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও থাকবে ১৮ ডিগ্রির উপরে, জানাচ্ছে হাওয়া অফিস।

ভ্যালেন্টাইন্স ডে, সরস্বতী পুজোর আগে বেমালুম উধাও শীত। ৩০ ডিগ্রি ছুঁয়েছে তাপমাত্রার পারদ। শীত মাত্র কয়েকদিনের অতিথি, জানাচ্ছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। শনিবার শহর কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩০.১ ডিগ্রি এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭.৭ ডিগ্রি। রবিবার আরও বেড়েছে তাপমাত্রার পারদ। এদিন শহরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩০.৪ ডিগ্রি, যা স্বাভাবিকের থেকে ২ ডিগ্রি বেশি এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৯.৬ ডিগ্রি। এদিন বাতাসে সর্বাধিক জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ছিল ৯৯ শতাংশ।.

চলতি বছর কি এখানেই শীতের যাত্রা শেষ? কী বলছে হাওয়া অফিস? আলিপুর আবহাওয়া দফতরের এক কর্তা জানান, ফেব্রুয়ারিতে শীতের সেকেন্ড ইনিংস শুরুর বড় কারণ ছিল উত্তুরে হাওয়ার অবাধ প্রবেশ। কিন্তু রাজ্যে ধীরে ধীরে উত্তুরে হাওয়ার প্রবেশ কমছে। ফলে বাড়বে তাপমাত্রা। জেলাগুলিতে আর দু-একদিন শীত অনুভূত হলেও শহর কলকাতার পারদ চড়তে শুরু করবে ধীরে ধীরে, জানান তিনি।

এদিকে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় রাজ্যে বৃষ্টিপাতের কোনও সম্ভাবনা নেই। আকাশ সামান্য মেঘলা থাকায় বজায় থাকবে আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি। বৃষ্টিপাত হতে পারে সিকিম, দার্জিলিংয়ের পার্বত্য এলাকায়।সকালের দিকে হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা থাকতে পারে দক্ষিণবঙ্গে। দিনের বেলা আকাশ থাকবে পরিষ্কার। আগামী ৭২ ঘন্টা ঘন কুয়াশার সর্তকবার্তা পঞ্জাব, হরিয়ানা, চন্ডীগড় ও দিল্লিতে। সোমবার ঘন কুয়াশা দেখা যেতে পারে দক্ষিণবঙ্গেও। আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝি সময় থেকে মধ্য ভারতে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। বৃষ্টিপাত হতে পারে সিকিম, অরুণাচল প্রদেশের সহ পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে।

সরস্বতীপুজোর দিন সকাল থেকে আকাশ থাকবে পরিষ্কার। এদিন বৃষ্টিপাতের কোনও সম্ভাবণা নেই, জানাচ্ছেন আবহাওয়াবিদরা। পুজোর দিন রাজ্যের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকতে পারে ৩০ ডিগ্রির বেশি। উল্লেখ্য, ফেব্রুয়ারির শুরুতেই একেবারে স্বমহিমায় ছিল শীত। বিগত ১০ বছরে এটাই ছিল শীতলতম ফেব্রুয়ারি। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশ কুমার দাস জানিয়েছিলেন, এই পরিস্থিতি বিরল, কিন্তু আগেও এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এর আগে ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসেও জমিয়ে শীত উপভোগ করেছিলেন বাংলার মানুষ।

এই সময়ে তাপমাত্রার হেরফেরে সর্দিকাশির প্রকোপ বাড়ে। হতে পারে জ্বরও। গত বছর করোনা আক্রমণের পর থেকে এই ধরনের রোগগুলি নিয়ে আশঙ্কা ও ভীতি বেড়েছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এ সময়ে দিনের বেলা গরম লাগলেও গভীর রাত বা ভোরে ঠান্ডা লাগে। সামান্য অসাবধানতাবশত শরীর অসুস্থ হতে পারে। তাই বিশেষ সতর্কতা প্রয়োজন। ঠান্ডা পানীয়, রাতে এসি চালানো ইত্যাদি থেকে আপাতত বিরত থাকাই শ্রেয় বলে জানাচ্ছেন তাঁরা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here