দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বাংলা, বাঙালি, বাংলার সংস্কৃতি– এই বিষয়গুলো বেশ কিছুদিন ধরেই একটু বেশিই চর্চায় ফিরেছে। চায়ের দোকানের আড্ডা ছেড়ে রাজনীতির অঙ্গনে পর্যন্ত উঠে এসেছে গত কয়েক দিনে। যেন বাঙালিয়ানা বজায় রাখার এক অলিখিত প্রতিযোগিতায় নেমেছেন জনপ্রতিনিধিরা। অথচ সকলের চোখের সামনেই যে বাংলা এবং বাঙালির ঐতিহ্য নানা ভাবে লুণ্ঠিত হচ্ছে, তার প্রমাণ ভূরিভূরি। সম্প্রতি সামনে এল, ব্যারাকপুর স্টেশন রোড সংলগ্ন এলাকায় কথাসাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িটির করুণ দশা। শুধু করুণ নয়, অভিযোগ, সে বাড়ি আজ রীতিমতো সঙ্কটে।

বিষয়টি সামনে এসেছে বিভূতিভূষণবাবুর পুত্রবধূ, তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী মিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে। ওই পোস্টে তিনি দাবি করেছেন, ব্যারাকপুর স্টেশনের কাছে সুকান্ত সদনের পিছনে ‘আরণ্যক’ নামে তাঁদের যে পৈতৃক বাড়িটি রয়েছে, তার গা ঘেঁষে একটি শপিং মল নির্মাণ হওয়ার কারণে ভাঙা পড়েছে আরণ্যকের পেছন দিকের খানিকটা অংশ। পৌরসভার চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি প্রতিকারের আশ্বাস দিলেও তা হয়নি। মিত্রা দেবী প্রশ্ন তুলেছেন, “জানি না কী অপরাধ করেছি। তবে কি ভদ্র মানুষদের দিন ফুরাল?”

তিনি আরও লিখেছেন, “এখন যা অবস্থা তাতে দোতলার অংশ যে কোনও দিন ভেঙে পড়ে মৃত্যু অনিবার্য। বিভূতিভূষণের ব্যবহার করা অনেক মূল্যবান জিনিস ওই কাজের জন্য নষ্ট হয়েছে। জানি না আর কী কী ক্ষতি হবে।”

মিত্রাদেবীর এই পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। নেটিজেনরা প্রশ্ন তুলেছেন, বাংলা সাহিত্যের অন্যতম স্তম্ভের বাড়িটি রক্ষা করার দায়িত্ব প্রশাসন পালন করতে পারছে না কেন!

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=2834601440112512&id=100006880504238

তারাদাসের মৃত্যুর পরে তাঁর স্ত্রী মিত্রা রয়েছেন সেখানেই। তিনি জানিয়েছেন, বাড়িটির একতলায় একটি সংগ্রহশালা রয়েছে, যেখানে রাখা রয়েছে বিভূতিভূষণের শাল, জামা, হুঁকো, সুটকেস, পাণ্ডুলিপি ও ডায়েরি। অথচ শপিংমল নির্মাণের দৌরাত্ম্যে সেখানে জল ঢুকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে অমূল্য সব নথি। আজ নয়, আড়াই বছর ধরেই চলছে এই অত্যাচার।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তাঁরাও এই ঐতিহাসিক বাড়ির ক্ষতি করে কোনও নির্মাণ কাজ হোক– তাতে বাধা দিয়েছিলেন প্রথম থেকে। কিন্তু কোনও আপত্তিই শোনা হয়নি। পুরসভার তরফেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলেই অভিযোগ। এ বিষয়ে ব্যারাকপুর পুরসভার বক্তব্য পাওয়া গেলে এই প্রতিবেদনে আপডেট করা হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here