দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দিল্লিতে কৃষক সমাবেশ নিয়ে রবিবার রাতেই জরুরি বৈঠক করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজেই নতুন কৃষি আইন নিয়ে কৃষকদের ‘ভুল ধারণা’ দূর করতে চাইলেন। তিনি বলেন, “আমি জানি, কয়েক দশক ধরে মিথ্যা কথা বলে কৃষকদের মনে ভুল ধারণা জন্মিয়ে দেওয়া হয়েছে।” এর পরেই তিনি বলেন, “আমি মা গঙ্গার তীরে দাঁড়িয়ে বলছি, কৃষকদের ঠকানোর কোনও উদ্দেশ্যই আমাদের নেই। আমাদের উদ্দেশ্য গঙ্গার জলের মতোই পবিত্র।”


প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন কৃষি আইনে যে খোলা বাজারের কথা বলা হয়েছে, তাতে আগেকার মাণ্ডি উঠে যাবে না। ন্যূনতম সহায়ক মূল্য পাওয়াও বন্ধ হবে না। তাঁর কথায়, “কেউ যদি ভাবে, আগের ব্যবস্থাই ভাল ছিল, কে তাঁকে আটকাচ্ছে ভাই?” নিজের কেন্দ্র বারাণসী থেকে মোদী বলেন, নতুন আইন কৃষকদের সামনে অনেক সুযোগ খুলে দেবে। তাঁরা আর্থিকভাবে আরও নিরাপদ হবেন। দেশ ও বিদেশের বাজারে সহজে নিজেদের পণ্য বেচতে পারবেন।
কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন তিনটি আইনের বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন কৃষকরা। সেই মিছিলেই কৃষকদের দিকে জলকামান, কাঁদানে গ্যাসের ব্যবহার করে হরিয়ানা পুলিশ। তারই বেশ কিছু ছবি, ভিডিও এর মধ্যেই ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।‌

অমিত শাহ দিল্লিতে বিক্ষোভরত কৃষকদের বলেছিলেন, একটি শর্তে সরকার তাঁদের সঙ্গে দ্রুত আলোচনায় বসতে পারে। তা হল, বিক্ষোভকারীরা যত্রতত্র জমায়েত করতে পারবেন না। তাঁদের দিল্লির উপকণ্ঠে বুরারি অঞ্চলে জমায়েত করতে হবে। আন্দোলনকারীরা সেই অনুরোধ রাখতে অস্বীকার করেন। এরপর রবিবার রাতেই বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডার বাড়িতে জরুরি বৈঠকে বসেন শীর্ষস্থানীয় বিজেপি নেতারা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমর।


আন্দোলনরত কৃষকরা হুমকি দিয়েছেন, তাঁরা দিল্লিতে ঢোকা-বেরোনর পাঁচটি রাস্তা বন্ধ করে দেবেন। বিজেপি নেতারা রবিবার রাতে কৃষক বিক্ষোভ নিয়েই বৈঠক করেন। আলোচনা চলে দু’ঘণ্টা।

কৃষকরা যে পাঁচটি রাস্তা বন্ধ করে দেবেন বলেছেন, তার মধ্যে আছে সোনিপত, রোহতক, জয়পুর, গাজিয়াবাদ-হাপুর এবং মথুরা। সোমবার সকালেই দিল্লি পুলিশ শহরের মানুষের কাছে আবেদন জানিয়েছে, ওই রাস্তাগুলি এড়িয়ে চলুন। কৃষকরা জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা সরকারের সঙ্গে ‘খোলা মনে’ কথা বলতে চান। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার আলোচনার পূর্বশর্ত আরোপ করেছে। সুতরাং তাঁরা বুরারিতে যাবেন না।


কৃষকদের আশঙ্কা, তাঁরা সকলে যদি বুরারিতে জড়ো হন, ওই জায়গাটি অস্থায়ী জেলখানা বানিয়ে ফেলা হবে। এর আগে দিল্লি পুলিশ শহরের পাঁচটি স্টেডিয়ামকে অস্থায়ী জেল বানানোর জন্য অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সরকারের কাছে অনুমতি চেয়েছিল। তার পর থেকেই অনেকে আশঙ্কা করছেন, বুরারিকেও অস্থায়ী জেল বানিয়ে ফেলা হতে পারে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here