দেশের সময়: মতুয়া ভোট নিজেদের দখলে রাখতে বিজেপিকে যে বারবার ঠাকুরবাড়ির চাপের মুখে পড়তে হচ্ছে, তা আবারও প্রমাণিত হলো।

দিন দুই আগেই মতুয়া মহা কর্মকর্তা তথা বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর এর বাবা মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর বিজেপি নেতৃত্বের উপরে ক্ষোভ উগরে দিয়ে একপ্রকার বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন। আর তার পরেই মঙ্গলবার বিজেপি নেতৃত্বের প্রকাশ করা আরেকদফা প্রার্থী তালিকায় মঞ্জুল কৃষ্ণের বড় ছেলে সুব্রত ঠাকুরের নাম গাইঘাটা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী হিসেবে প্রকাশিত হলো।

এর আগে শান্তনু ঠাকুর নিজেই দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন। আর তার পরেই বারাসত সাংগঠনিক জেলা থেকে বনগাঁকে আলাদা করে নতুন সাংগঠনিক জেলা হিসেবে বনগাঁ কে ঘোষণার পাশাপাশি শান্তনুর পছন্দের ব্যক্তিকে নতুন সাংগঠনিক জেলার সভাপতি করেছিল বিজেপি।

এই ভাবেই বারেবারে দলের ওপর চাপ সৃষ্টি করে ঠাকুরবাড়ির একাংশ নিজেদের দাবি আদায় করে নিচ্ছে বলে অভিমত রাজনৈতিক মহলের।

রবিবার নিজের বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠক করে মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর অভিযোগ করেন যে, বিজেপি নেতৃত্বের কাছে ৩০ টি আসনে মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষকে প্রার্থী করার আবেদন জানানো হয়েছিল। কিন্তু দল একটি আসনেও মতুয়াদের প্রার্থী করেনি। এই পরিস্থিতিতে মতুয়ারা কাকে ভোট দেবেন, তার দায়িত্ব সারা ভারত মতুয়া মহাসংঘ নেবে না। এই ঘটনার পর মঙ্গলবার বিজেপির প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পরে দেখা গেল, গাইঘাটা বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী করেছে মঞ্জুল কৃষ্ণের বড় ছেলে সুব্রত ঠাকুরকে।

আর তার পরপরই শান্তনু ঠাকুর সাংবাদিক বৈঠক করে ঘোষনা করেন যে, বাবা মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর রবিবার যে বক্তব্য পেশ করেছিলেন, তা তিনি নির্দিষ্ট তথ্য ছাড়াই বলেছিলেন। আসলে বিজেপি মোট আটটি আসনে মতুয়াদের প্রার্থী করেছে। শান্তনুর এই সাংবাদিক বৈঠক এর প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক মহলের ধারণা, পরিবারের সদস্যকে প্রার্থী করার উদ্দেশ্যেই মঞ্জুলকৃষ্ণ রবিবার সাংবাদিক বৈঠক করে দলকে চাপে রাখতে দলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন।

উল্লেখ্য, এর আগে শান্তনু ঠাকুর নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন অর্থাৎ সিএএ কার্যকরী করার নামে বিজেপি নেতৃত্বকে চাপ দিতে দলের বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুলতে শুরু করেন। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, আসলে বিশেষ উদ্দেশ্যে শান্তনু ঠাকুর এই বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন। এই ঘটনার পরপরই দেখা যায়, বারাসত সাংগঠনিক জেলা থেকে বনগাঁ লোকসভার অন্তর্গত ৭টি অঞ্চলকে আলাদা করে বিজেপি নতুন বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা আলাদাভাবে গঠন করে। সেখানে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পান শান্তনু ঘনিষ্ঠ মনস্পতি দেব।

এর থেকেই রাজনৈতিক মহলের ধারণা, নিজেদের দাবি আদায় করতে ঠাকুরবাড়ির একাংশ (মঞ্জুল পন্থী) বারবার বিজেপি নেতৃত্বের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। আর বিজেপি মতুয়া ভোট নিজেদের পক্ষে টানতে এই চাপের কাছে বারবার নতিস্বীকার করছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here