দেশের সময়,কলকাতাওয়েবডেস্কঃ একটা সময়ে মনে হচ্ছিল, বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে একশো টপকাবে তো! টপকাল। তবে তা কোনওক্রমে। ক্রিকেটের নন্দনকাননে গোলাপি বলের ঐতিহাসিক টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১০৬ রানেই গুটিয়ে গেল বাংলাদেশ। আগুন ঝরানো বল করলেন ইশান্ত শর্মা, মহম্মদ শামি, উমেশ যাদবরা।

এই দশ উইকেটের মধ্যে একাই পাঁচটি উইকেট নেন ইশান্ত শর্মা। তিনটি উইকেট নেন উমেশ যাদব। আর জোড়া উইকেট যায় মহম্মদ শামির ঝুলিতে। ভারতীয় এই পেস ত্রয়ীর সামনে মুখ থুবড়ে পড়ে বাংলাদেশ।

ইডেন টেস্টে টসে জেতে বাংলাদেশ। টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মমিনুল হক। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শচীন তেন্ডুলকর থেকে সুনীল গাভাস্কার-কার্যত নক্ষত্রের হাট বসেছে ইডেনে। খেলা শুরুর অনেকটা আগেই ইডেন গার্ডেন্সের গ্যালারি কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। বহুদিন পর কলকাতা এমন ক্রিকেট উন্মাদনা দেখল।

ইডেনে ঐতিহাসিক গোলাপি বলের টেস্টের প্রথম দিনই বাংলাদেশকে দুরমুশ করল ভারত। প্রথমে বল হাতে জ্বলে উঠলেন ভারতের পেস ত্রয়ী ইশান্ত, শামি ও উমেশ। তারপর ব্যাট হাতে হাফসেঞ্চুরি করলেন বিরাট কোহলি ও চেতেশ্বর পূজারা। প্রথম দিনেই বাংলাদেশের থেকে অনেক এগিয়ে ভারত।

দিন রাতের টেস্ট টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মোমিনুল হক। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত ব্যুমেরাং হয়ে দাঁড়াল তাঁদের জন্য। আগুনে বোলিং করলেন ভারতের তিন পেসার। মাত্র ২২ ওভারেই ১০৬ রানে অলআউট হয়ে গেল বাংলাদেশ। ভারতের প্রথম বোলার হিসেবে গোলাপি বলের টেস্টে পাঁচ উইকেট নিলেন ইশান্ত। উমেশ তিনটি ও শামি দুটি উইকেট নেন। তাঁদের সামনে দাঁড়াতে পারেননি কোনও ব্যাটসম্যানই।

প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে বিপাকে পড়ে ভারতও। ওপেনার জুটি আগরওয়াল ও রোহিত শুরুতেই আউট হলে যান। তারপর পার্টনারশিপ গড়েন পূজারা ও বিরাট। ভারতের রানকে একশোর গণ্ডি পার করান এই দুই ব্যাটসম্যান। হাফসেঞ্চুরি করার পর ৫৫ রান করে আউট হন পূজারা। তারপর কোহলির সঙ্গে পার্টনারশিপ গড়েন ডেপুটি রাহাণে।

রইল এদিনের বেশ কিছু মুহুর্তের ছবি:

ইডেনের মাটিতে প্রথম ভারতীয় অধিনায়ক হিসেবে পাঁচ হাজার রান পূর্ণ করেন বিরাট। হাফসেঞ্চুরি করেন তিনি। প্রথম দিনের খেলা শেষ হওয়া পর্যন্ত তিন উইকেট হারিয়ে ১৭৪ রান ভারতের। কোহলি ৫৯ ও রাহাণে ২৩ করে ব্যাট করছেন।

প্রথম দিনেই বাংলাদেশের থেকে ৬৮ রানে এগিয়ে ভারত। দ্বিতীয় দিন এই টেস্ট ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করতে নামবেন কোহলিরা।

এদিন দুপুর বেলার বিরতিতে মাঠের মাঝে আড্ডা দিতে দিতে হরভজন সিং বলছিলেন, “দাদা সারা জীবন আমার ক্যাপ্টেন থাকবেন।” ইডেনের স্মৃতিকথা শোনাচ্ছিলেন ভাজ্জি। আর সন্ধেবেলা যখন ৪০ রানের মাথায় বিরাট কোহলি ব্যাট করছেন, তখন সৌরভ একবার প্যাভেলিয়নে এসে দাঁড়িয়েছিলেন। ‘বিরাট বিরাট’ চিৎকারের বদলে ইডেন শুনল সেই গগনভেদী ‘দাদা দাদা’ চিৎকার।

জিওফ্রে বয়কট ধারাভাষ্যে থাকলে হয়তো বলতেন, ‘দিস ইজ দ্য স্পিরিট অফ প্রিন্স অফ ক্যালকাটা!’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here