দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ সংযুক্ত আরব আমিরশাহি থেকে অত্যাধুনিক ও মারণ ক্ষমতার কার্বাইন কেনার কথা হয়েছিল সেই ২০১৮ সালেই। পরে এই চুক্তি আর পাকাপোক্ত হয়নি। এখন বিদেশি সংস্থার থেকে অস্ত্র কেনার বদলে দেশেই যুদ্ধান্ত্র বানাতে বেশি তৎপর প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পে ইতিমধ্যেই ভারতীয় সেনার জন্য পিনাকা মিসাইল তৈরি করছে দেশেরই কয়েকটি সংস্থা। সূত্রের খবর, ভারতে বসেই কার্বাইন তৈরির ইচ্ছা প্রকাশ করেছে আমিরশাহির কারাকাল ইন্টারন্যাশনাল।

ভারতে আমিরশাহির দূতাবাসের তরফে এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। কারাকাল ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, ক্লোজ কোয়ার্টার ব্যাটেল (CQB) কার্বাইন কেনার জন্য আরব দেশের সঙ্গে যে চুক্তি হওয়ার কথা ছিল ভারতের, তাকে মেক ইন ইন্ডিয়া প্রকল্পের আওতায় আনা হোক। তাহলে ভারতে বসেই সেনাবাহিনীর জন্য কার্বাইন তৈরি করতে পারবে তারা।

কারাকালের অত্যাধুনিক কার্বাইন ব্যবহার করে অনেক দেশই। ডিফেন্স অ্যাকুইজিশন কাউন্সিল (ডিএসি)-এর তরফে জানানো হয়েছে, কারাকাল যে কার্বাইন তৈরি করে কার-৮১৬ (CAR 816)তার ২০ শতাংশ যন্ত্রপাতিই ভারতে তৈরি হয়। তবে কারাকাল প্রস্তাব দিয়েছে, তাদের বিশেষ প্রযুক্তিতে কার্বাইনের আপডেটেড ভার্সন তারা বানাতে চায় ভারতে বসেই। সংস্থার সিইও হামাদ আল আমেরি বলেছেন, জরুরি ভিত্তিতে ভারতীয় সেনার হাতে কার্বাইন তুলে দিতে চায় তারা। ভারতের বাহিনীতে কার্বাইনের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। পুরনো আমলের রাইফেল বাতিল করে অত্যাধুনিক কার্বাইন ভারতীয় সেনার শক্তি আরও বাড়াবে বলেই মত আমেরির। ৯৩ হাজার ৮৯৫টি কার্বাইন তৈরির প্রস্তাব দিয়েছে কারাকাল।

কারকালের তৈরি সিকিউবি কার্বাইন প্রযুক্তিতে অনেক এগিয়ে। ৯এমএম ব্রিটিশ স্টার্লিং আইএআই সাব মেশিন গানের বদলে এই কার্বাইন হাতে এলে ভারতীয় সেনার শক্তি আরও বাড়বে। আবু ধাবির কারাকাল ইন্টারন্যাশনালের তৈরি ক্লোড কোয়ার্টার ব্যাটল কার্বাইন হল কার ৮১৬ (CAR 816) । ২০১৫ সালে তৈরি করে আরবে এই সংস্থা। একে কারকাল সুলতানও বলে। কারকাল কার্বাইনের ব্যারেলের দৈর্ঘ্য তিন রকমের। কমপ্যাক্ট অ্যাসল্ট রাইফেল ২৬৭ এমএম, কার্বাইন ৩৬৮ এমএম ও অ্যাসল্ট রাইফেল ৪০৬ এমএম।

৩.৪ কিলোগ্রাম ওজনের এই কার্বাইন যে কোনও পরিস্থিতিতে ও পরিবেশেই ব্যবহার করা যায়। হ্যান্ডি হওয়ায় সহজে বয়ে নিয়ে যাওয়াও সম্ভব। ভারতে যে সিকিউবি কার্বাইন পাঠাচ্ছে আরব আমিরশাহি তার দৈর্ঘ্য ৮৩৩ এমএম থেকে ৯২২ এমএম। ক্যালিবার ৫.৫৬ এমএম। প্রতি মিনিটে ৭৫০ থেকে ৯০০ রাউন্ড ফায়ার করা যায় এই কার্বাইন থেকে। যার পাল্লা প্রায় ৫০০ মিটার। স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ. প্যারাট্রুপাররা এই ধরনের কার্বাইন ব্যবহার করে।

বাহিনীর হাতে এখন আছে এসএএফ কার্বাইন ২এ১। এই কার্বাইনের প্রযুক্তিও পুরনো হয়ে গেছে।  তাছাড়া জার্মানির তৈরি হেকলার অ্যান্ড কোচ এমপি৫ রয়েছে বাহিনীর হাতে। অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, ইজরায়েলের তৈরি একাধিক শক্তিশালী অ্যাসল্ট রাইফেলও রয়েছে। 

সম্প্রতি দ্বিতীয় দফায় সিগ সর অ্যাসল্ট রাইফেলের জন্য আমেরিকার দ্য স্মল আর্ম ম্যানুফ্যাকচারারের সঙ্গে চুক্তি করেছে ভারত। গত বছর ডিসেম্বরে প্রথম দফায় সিগ সর অ্যাসল্ট রাইফেল আসে নর্দার্ন কম্যান্ডের হাতে। অমেঠীর অস্ত্র কারখানায় ভারত ও রাশিয়ার যৌথ উদ্যোগে তৈরি একে-২০৩ রাইফেলও রয়েছে সেনাবাহিনীর হাতে৷

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here