দেশের সময় ওয়েবডেস্ক: বহু মানুষের জমায়েত যেখানে, করোনা সেখান থেকেই মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়ছে। বিয়ে বাড়ি, অনুষ্ঠানবাড়িগুলিই করোনার আঁতুরঘর হয়ে উঠছে, এমনই বক্তব্য নীতি আয়োগের সদস্য ডক্টর ভি কে পলের।

দেশে করোনা সংক্রমণ ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। দৈনিক সংক্রমণ ৪০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। গত চার মাসে যা রেকর্ড। সংক্রমণের হার বৃদ্ধিতে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্যমন্ত্রক। ফের লকডাউন চালু করা হবে কিনা সে নিয়ে আলোচনা চলছে। মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশের কিছু জেলায় আংশিকভাবে লকডাউন, নাইট কার্ফু শুরু হয়ে গেছে। করোনা কীভাবে এত লাগামছাড়া হয়ে গেল সে নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে পল বলেছেন, বেশিরভাগই করোনা বিধি মানছেন না। মুখে মাস্ক নেই, পারস্পরিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না রাস্তাঘাটে, দোকান-বাজারে এবং গণপরিবহনেও। এত মানুষের ভিড় থেকেই সংক্রমণ দ্রুত একজনের শরীর থেকে অন্যজনের শরীরে ছড়িয়ে পড়ছে।

পলের দাবি, আনলক পর্বে বিয়েবাড়ি বা যে কোনও অনুষ্ঠানবাড়িতে ৫০ জনের বেশি অতিথি সমাগমে রাশ টানা হয়েছিল। শেষকৃত্যেও একই নিয়ম চালু হয়েছিল। কিন্তু দেশে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলে আসার পরে এই নিয়মের তোয়াক্কাই করেননি কেউ। নাইট পার্টি, বিয়েবাড়িতে একই রকম জমায়েত হচ্ছে। পল বলছেন, বিয়েবাড়িতে গিয়ে বহু মানুষ ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন এমন খবর বারে বারেই শোনা গেছে। পাঞ্জাবে অন্তত ৩০ শতাংশ সংক্রমণ ছড়িয়েছে এই অনুষ্ঠানবাড়িগুলি থেকেই।

গত বছর নভেম্বরে দিল্লিতেও বিয়েবাড়িগুলি থেকেই সংক্রমণ ছড়িয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। নীতি আয়োগের সদস্য ভি কে পল বলছেন, দেশে এখন ৭৫-৮০ শতাংশ করোনা রোগীই উপসর্গহীন। কাজেই সংক্রমণের লক্ষণ বোঝা যাচ্ছে না। তার ওপরে বেশি মানুষের জমায়েত হলে ভাইরাস দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। কনট্যাক্ট ট্রেসিং না হলে আক্রান্তদের শণাক্ত করা মুশকিল হয়ে পড়ছে।

দিল্লিতে গতকালই রেকর্ড সংক্রমণ ধরা পড়েছে। একদিনেই আক্রান্ত ৭০০ জন। মহারাষ্ট্রে নতুন সংক্রমণ ২৫ হাজারের বেশি। বাণিজ্যনগরী মুম্বইতে একদিনে আক্রান্ত তিন হাজারের বেশি। পাঞ্জাব, কেরল, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশেও সংক্রমণের হার বেড়েই চলেছে। মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপাল, ইনদওর ও জবলপুরে আগামীকাল রাত ১০টা থেকে সোমবার ভোর ৬টা অবধি লকডাউন চালু করা হয়েছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে মহারাষ্ট্রে আগামী ৩১ মার্চ অবধি নয়া নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। বেসরকারি অফিস, থিয়েটার, প্রেক্ষাগৃহগুলিতে ৫০ শতাংশের বেশি মানুষের উপস্থিতি চলবে না। রাস্তাঘাটে মাস্ক পরা, সোশ্যাল ডিস্টেন্সিং মেনে চলা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এর অনিয়ম দেখলেই কড়া আইনি ব্যবস্থা নেবে পুলিশ। পাঞ্জাবে ৩১ মার্চ অবধি বন্ধ থাকলে স্কুল-কলেজ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here