পিয়ালী মুখার্জী, কালিম্পং: পূর্বাভাস ছিলই। দক্ষিণবঙ্গে দুর্যোগের ঘনঘটা কিছুটা কমেছে। এবার উত্তরবঙ্গ। দক্ষিণবঙ্গের মতো প্রবল বর্ষণ শুরু হয়েছে উত্তরবঙ্গেও। মঙ্গলবার আচমকা মেঘভাঙা বৃষ্টি নামে গরুবাথানে। পাশাপাশি, তিস্তা নদীর জলস্তর বেড়েছে প্রবল ভাবে। বৃষ্টির জেরে ধস নেমেছে পাহাড়ের কয়েকটি এলাকাতে। দেখুন ভিডিও:

হাওয়া অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে মঙ্গলবার বিকেল থেকে আকশ ভাঙা বৃষ্টি শুরু হয়েছে উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলায়।

ব্যাপক বৃষ্টিতে ধস নেমেছে দার্জিলিং, কালিম্পং, গরুবাথানের মত বেশ কিছু এলাকায়। পাহাড়ি রাস্তায় যান চলাচলও থমকে গিয়েছে। তা ছাড়া মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে ফুলেফেঁপে উঠেছে তিস্তা। লক গেটের উপর দিয়ে বইছে তিস্তার জল।

রিম্বিকের পালমাজুয়া ব্রিজের কাছে ধস নেমে রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কালিম্পং, লাভায় রাস্তা ভেঙেছে অনেক জায়গায়। তাকদায় একটি বাড়ি ভাঙারও খবর মিলেছে। সিকিমে ধসের জেরে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে একটি গাড়ি। পাথরের ধাক্কায় একটি গাড়ি সোজা খাদে গিয়ে পড়ে। আহত হয়েছেন যাত্রীরা। দুই দিনাজপুর, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারেও ব্যাপক বৃষ্টি শুরু হয়েছে মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, গোকে থেকে সিঙ্গল বাজার সড়কে ভূমিধস নেমেছে। এছাড়া ধোত্রে থেকে রিম্বিক সড়কের বিজনবাড়িতে একটি লোহার সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৃষ্টি কমলে মেরামতের কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। এছাড়া সুখিয়াপোখরি থেকে মানেভঞ্জনের রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সান্দাকফু ও মানেভঞ্জনে বেশ কিছু পর্যটক আটকে পড়েছেন।

উত্তরবঙ্গের অন্য জেলাগুলিতেও বৃষ্টি শুরু হয়েছে।
উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি বাড়বে বলে আগেই পূর্বাভাস দিয়েছিল আলিপুর আবহাওয়া দফতর। মঙ্গলবার বিকেল চারটে নাগাদ আচমকা মেঘভাঙা বৃষ্টি শুরু হয় জলপাইগুড়ি লাগোয়া কালিম্পঙের গরুবাথানে। বৃষ্টির তেজে তিস্তার জলস্তর বাড়তে শুরু করে। পরিস্থিতি এমন হয় যে লকগেটের উপর দিয়ে বইতে থাকে জলস্রোত।

সেচ দফতরের আধিকারিকদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। দার্জিলিং ছা়ডাও জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ারে প্রবল বৃষ্টি হচ্ছে। উত্তর সিকিমে বিকেলের দিকে তুষারপাতের খবরও মিলেছে। যার জেরে কমেছে তাপমাত্রাও। প্রবল বৃষ্টির দাপটে ত্রিবেণীর রাস্তা দিয়েও বইছে তিস্তার জল, ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর দিয়ে বইছে তিস্তা।

কালিম্পং জেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় ধস নেমেছে। শহরের ৪, ১৫, ১৮ এবং ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েকটি বাড়ি, গার্ডওয়াল এবং ফুলবাথ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ওই ধসের জেরে। উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে পুরসভা এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। কালিম্পঙের আলগারা এবং লাভার মাঝে তিন মাইল এলাকায় গাছ ভেঙে পড়ে একটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রবল বৃষ্টির জেরে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে যান চলাচল এক সময়ে বন্ধ হয়ে যায়। দার্জিলিঙেও কয়েকটি জায়গায় ধসের খবর মিলেছে। গোকে থেকে সিঙ্গল বাজার যাওয়ার রাস্তায় ধস নেমেছে। তার জেরে সুখিয়াপোখরি থেকে মানেভঞ্জন যাওয়ার রাস্তায় যান চলাচল বিপর্যস্ত।

দিনভর দফায় দফায় প্রবল বর্ষণ হয়েছে উত্তর এবং দক্ষিণ দিনাজপুরে। একই চিত্র কোচবিহারেরও। মঙ্গলবার সকাল থেকেই আকাশ ছিল মেঘলা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় বৃষ্টি। কখনও মাঝারি বৃষ্টি কখনও মুষলধারে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here