দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক বিনয় মিশ্রর বাড়ি ও অফিসে গরু পাচার কাণ্ডের সূত্র ধরে শুক্রবারই তল্লাশি চালিয়েছে সিবিআই। তার উদ্দেশে লুক আউট নোটিস জারি হয়েছে। শনিবার তার প্রসঙ্গে টেনে ফের যুব তৃণমূল সভাপতির তীব্র সমালোচনা করলেন শুভেন্দু অধিকারী।


এদিন মহিষাদলের দ্বারিবেড়িয়াতে শুভেন্দুর সভা ছিল, “সেই সভায় শুভেন্দু বলেন, তোলাবাজ ভাইপো বলেছি বলে গায়ে লেগেছে। কিন্তু এই তো! আস্তে আস্তে সব বেরিয়ে পড়ছে—লালা, এনামুল, বিনয় মিশ্র”।
এখানে না থেমে শুভেন্দু বলেন, “বিনয় মিশ্র কে? যুব তৃণমূল কংগ্রেস নিয়ে তো আগেই বলেছি। লাল চুল, কানে দুল তার নাম যুব তৃণমূল। পায়ে ৮ হাজার টাকার লোত্তোর জুতো, হাতে দেড় দেড় তিন লাখের দুটো আইফোন, সঙ্গে হাতে একটা সোনার মাকড়ি, দু’হাতের আঙুলে ১৮ টা আংটি আর গলায় গরুর দড়ির মতো একটা সোনার চেন। সেই সঙ্গে রেমন্ডসের কুর্তা পাজামা, সঙ্গে হাফ কোটির ফরচুনার গাড়ি। আরেকটু বড় হলে বিএমডব্লিউ”।

শুভেন্দু যে ভাবে বার বার ভাইপো বলে নিশানা করছেন, তা নিয়ে তৃণমূলও ধারাবাহিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। গতকালও এ ব্যাপারে শুভেন্দুর পাল্টা সমালোচনা করেছিলেন প্রবীণ তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়।


আবার সৌগতবাবুকে ভাইপোর জ্যাঠামশাই বলে কটাক্ষ করছেন শুভেন্দুও। এদিনের সভায় শুভেন্দু ফের বলেন, বাংলায় ক্ষমতাচ্যূত হওয়ার পর বামেদের এখনও ভালরকম অস্তিত্ব রয়েছে। ষোলো সালের নির্বাচনে ভোটও পেয়েছে। কিন্তু ১৫ মের পর তৃণমূল থাকবে না তা নয় পরের পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী করার লোক পাবে না।

এদিন মহিষাদলে দলীয় জনসভা থেকে একাধিক ইস্যুতে মুখ খুললেন তিনি। এদিন দলীয় সভায় তার সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়।

এদিন শুভেন্দু আরও বলেন”আমার লড়াইটা ছিল বামপন্থা থেকে বিচ্যুত হয়ে যাওয়া এই লক্ষণ শেঠদের বিরুদ্ধে। বামেরা ২০১১তে হেরে গিয়ে ১৬ সাল পর্যন্ত লড়েছে। কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেধে লড়েছে। তৃণমূল এবার দ্বিতীয় হবে। এর পরে তৃণমূল পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী খুঁজে পাবে না। আমাদের কর্মীদের বিভিন্ন জায়গায় আটকানো হচ্ছে। তৃণমূল একটি কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। এটি আর রাজনৈতিক দল নেই। আমাদের কর্মচারী করে রাখা হয়েছিল। মেদিনীপুরের লোকেরা কর্মচারী হিসাবে থাকতে পারে না। একটা দলে সবাই নেতা হতে পারে না। কেউ মোর্চা, জেলা কিংবা মণ্ডলে কাজ করবেন।”

আঞ্চলিক দল না করা প্রসঙ্গে শুভেন্দু:

আঞ্চলিক দল না করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এই তোলাবাজ ভাইপো ডায়মন্ডহারবারে বলেছে আঞ্চলিক দল করিনি কেন। তার কারণ, আমি আঞ্চলিক দল করলে একটা ছোট দল হয়তো বানাতে পারতাম। সম্মানীয় কিরণময় নন্দ একটা দল গঠন করেছিলেন এখানে। প্রমোদবাবু একটা দল বানিয়েছিলেন। তার আগে সুশীলবাবুর বানিয়েছিলেন বাংলা কংগ্রেস। আমিও পারতাম। কিন্তু আমার পরে আমার পরিবারের কেউ নেতা হত। তাই আমি আঞ্চলিক দল বানায়নি। তাই আমি পৃথিবীর সবথেকে বড় রাজনৈতিক দলে যোগ দিয়েছি।”

তৃণমূলকে আক্রমণ করে শুভেন্দু বলেন, “ওরা বলছে ডিল হয়েছে। হ্যাঁ ডিল হয়েছে, বিজেপির যে সরকার হবে, সেই সরকার দেওয়ালে লিখবে বাংলার গর্ব বিদ্যাসাগর, লেখা থাকবে বাংলার গর্ব স্বামী বিবেবাকানন্দ, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। আপনি দেখেছেন কেন্দ্রীয় সরকারের আয়ুষ্মান ভারতে কত লাভ! স্বাস্থ্যসাথীতে কে লাভ পাচ্ছে! পাড়ায় পাড়ায় সমাধান নয়, ওটা পাড়ায় ভোটের প্রচার। আমি বিজেপিতে গেছি তার অন্যতম কারণ আমি চাই কলকাতা ও দিল্লিতে একই দলের সরকার থাকুক। এটা না হলে শিল্প  আসবে না, বেকার সমস্যা মিটবে না।”

সিবিআই হানা প্রসঙ্গে শুভেন্দু:

সিবিআই হানা প্রসঙ্গে শুভেন্দু কটাক্ষ করে বলেন, “আমি তোলাবাজ ভাইপো হটাও বলেছিলাম, ওনার খুব গায়ে লেগে গেছে। এইতো আসতে আসতে করে এগোচ্ছে। লালা, এনামুল, এবার বিনয় মিশ্র। কে এই বিনয় মিশ্র! পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূলের যুব কংগ্রেসে নেতা। তার ৪টে বাড়িতে সিবিআই ঢুকে পড়েছে। উনি তৃণমূলের যুব সম্পাদক, নম্বর ৭। তার সভাপতির নাম তোলাবাজ ভাইপো। চৌকাঠে চলে এসেছে, ওটা পেরলেই ঠিক হবে আমি ১৯ তারিখের মিটিংয়ে ভুল কিছু বলিনি।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here