দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। আজ সকাল ১১ নাগাদ দক্ষিণ কলকাতার বেসরকারি হাসপাতাল থেকে ডিসচার্জড হওয়ার পরে অ্যাম্বুল্যান্সে করে পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়ির দিকে রওনা দিয়েছেন তিনি। সঙ্গে রয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।


হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, বাড়ি যেতে পেরে খুবই খুশি তিনি। তবে বাড়ি গেলেও এখন বাড়িতে তৈরি আইসিইউ-তেই থাকবেন তিনি। আপাতত আরও কিছুদিন হাসপাতালের মতোই আংশিক বাইপ্যাপে থাকতে হবে তাঁকে।  ওষুধপত্রও চলবে নিয়মিত। নজর দিতে হবে খাওয়াদাওয়ার দিকে। চলবে ফিজিওথেরাপি। কোনও রকম অনিয়ম বিপজ্জনক হতে পারে তাঁর পক্ষে। বিপদের কথা চিন্তা করে বাড়িতে প্রস্তুত রাখা হয়েছে পোর্টেবল ভেন্টিলেটর।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বুদ্ধবাবু যখন ৯ তারিখ দুপুরে হাসপাতালে এসেছিলেন, একেবারেই আচ্ছন্ন অবস্থায় ছিলেন তিনি। রক্তে অক্সিজেনের স্য়াচুরেশন খুবই কম ছিল। দিন সাতেকের মধ্যে দ্রুত সেরে উঠছেন তিনি, এতে চিকিৎসকদের গোটা টিম খুবই আনন্দিত বলে জানা গেছে।

আগের দিনের মতোই তাঁকে খবরের কাগজ পড়ে শোনানো হয়। পরিবারের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি। চিকিৎসকরা জানান, হাসপাতালের মতো না-হলেও, সিওপিডি-র পুরোনো রোগী ৭৬ বছর বয়সি বুদ্ধদেবের বাড়িতেই তাঁর শ্বাসের সমস্যা সামলানোর উপযোগী চিকিৎসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে। তাই হাসপাতালে রেখে দিয়ে সংক্রমণের ঝুঁকি আর নিতে চান না চিকিৎসকরা। এ দিন তাঁর অ্যান্টিবায়োটিক কোর্স ও স্টেরয়েড ইঞ্জেকশন নেওয়ার পর্ব মিটেছে। রবিবার রাতেই খুলে নেওয়া হয় ক্যাথিটার। এ দিন সেন্ট্রাল স্যালাইন লাইনও খুলে নেওয়া হয়। যদিও কিছুক্ষণ অন্তর বাইপ্যাপ ভেন্টিলেশন দেওয়ার পালা থামেনি।

আপাতত বুদ্ধবাবুর শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিকই রয়েছে। রক্তপরীক্ষার রিপোর্ট সবই সন্তোষজনক। ক্যাথিটারের প্রয়োজন হচ্ছে না। আজ সকালেই রাইলস টিউব খুলে দেওয়া হয়েছে। নরম, সুসিদ্ধ খাবার নিজেই খেতে ও হজম করতে পারছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
কর্তৃপক্ষের কথায়, “উনি খুবই ক্রিটিক্যাল কনডিশনে ছিলেন। ওঁকে খুব ভালভাবে বুঝিয়েছি আমরা। উনিও সহযোগিতা করেছেন, তাই ওঁর চিকিৎসা যা দরকার তার ১০০ শতাংশ আমরা দিতে পেরেছি। আমরা একটা টিম হয়ে কাজ করেছি। উনি আমাদের কথা দিয়েছেন, চিকিৎসকদের সব নির্দেশ মেনে চলবেন, সব নিয়ম মানবেন। আমরা খুবই খুশি ওঁর সুস্থতায়।”

বাড়িতে পৌঁছনোর পরে কীভাবে থাকবেন, কী কী নিয়ম মানতে হবে, তা ভাল করে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য বুদ্ধবাবুর সঙ্গেই বাড়ি পর্যন্ত চলছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দল। তাঁরা ভাল করে সব ব্যবস্থা দেখে নেবেন। জানা গেছে, এদিন হাসপাতালের বিল মেটানো হয়েছে বুদ্ধদেববাবুর পরিবারের তরফেই। তাঁর স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য নিজে আজ এসেছিলেন বুদ্ধবাবুকে বাড়ি ফেরাতে।

গত বুধবার মারাত্মক শ্বাসকষ্ট নিয়ে উডল্যান্ডসে ভর্তি হন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়া ও কার্বন ডাই-অক্সাইডের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় তাঁকে বাইপ্যাপ থেকে মেকানিক্যাল ভেন্টিলেশনে দিতে হয়েছিল। শুক্রবার অবস্থার উন্নতি হওয়ায় ফের তাঁকে বাইপ্যাপ ভেন্টিলেশনে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here