দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃবড় সাফল্য পেল এনআইএ। বাংলা এবং কেরল থেকে গ্রেফতার হয়েছে ৯ আল-কায়দা জঙ্গি। এনআইএ সূত্রে খবর, এই দুই রাজ্যে একধিকবার তল্লাশি অভিযানের পর পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ এবং কেরলের এর্নাকুলাম থেকে গ্রেফতার হয়েছে মোট ৯ জন আল-কায়দা জঙ্গি। এনআইএ জানিয়েছে, এই ৯ জঙ্গিই একটি নাশকতার পরিকল্পনায় যুক্ত ছিল।

এনআইএ-র তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে যে অনেকদিন ধরেই ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে আল-কায়দার জঙ্গিরা ছড়িয়ে পড়েছিল। ইন্টার স্টেট বা আন্তঃরাজ্য মডিউলে এই সক্রিয় সদস্যরা কাজ করত। মূল লক্ষ্য ছিল নিরীহ সাধারণ মানুষদের মেরে ফেলা। দেশের বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য জায়গায় নাশকতার পরিকল্পনা করেছিল এই জঙ্গিরা। জঙ্গি কার্যকলাপ, নাশকতার মাধ্যমে আমজনতার মনে ভয়-আতঙ্কের সৃষ্টি করাই ছিল এদের লক্ষ্য।

অনেকদিন ধরেই আল-কায়দার এই ইন্টার স্টেট মডিউলে অপারেটিভদের উপর নজর রেখেছিল ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি বা এনআইএ। পশ্চিমবঙ্গ এবং কেরলের একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালায় এনআইএ-র স্পেশ্যাল টিম। অবশেষে মুর্শিদাবাদ এবং এর্নাকুলাম থেকে গ্রেফতার হয়েছে ৯ জন। এরা কোন কোন জায়গায় কীভাবে নাশকতার ছক কষেছিল তা জানার চেষ্টায় তদন্ত শুরু করেছে এনআইএ।

প্রসঙ্গত, গত এক বছরে কেরলের একাধিক জেলা থেকে আইসিস যোগে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে তদন্ত যত এগিয়েছে দেখা গিয়েছে কেরলের বিভিন্ন জায়গায় নিজেদের চর ছড়িয়ে রেখেছে আইসিস। তাদের বেশ কয়েকজনকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদেও ক্রমাগত জঙ্গিদের আনাগোনা যে বাড়ছিল সে খবর ছিল পুলিশ-প্রশাসনের কাছে। সেই সূত্র ধরেই খাগড়াগর বিস্ফোরণ কাণ্ড-সহ অন্যান্য অনেক জঙ্গি হামলায় জড়িত সন্দেহে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন জামাত-উল-মুজাহিদিনের সদস্যরাও।

জানা গিয়েছে, আজ শনিবার সকালে বাংলা অর্থাৎ মুর্শিদাবাদ থেকে গ্রেফতার হয়েছে ৬ আল-কায়দা জঙ্গি। আর কেরলের এর্নাকুলাম থেকে গ্রেফতার হয়েছে ৩ জন। এনআইএ সূত্রে খবর, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এই ৯ জঙ্গিকে ট্রেনিং দিত পাকিস্তানে থাকা আলি-কায়দার মাথারা। নির্দেশ ছিল ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে জঙ্গি হামলা করার। নিশানায় ছিল রাজধানী শহর দিল্লি এবং সংলগ্ন এলাকাও। ধৃতদের থেকে বিভিন্ন ডিজিটাল ডিভাইস, নথিপত্র, জিহাদি সাহিত্য, ধারালো অস্ত্র, দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, স্থানীয় এলাকা থেকে বানানো শরীরে পড়ার বর্ম, ঘরে বসে বিস্ফোরক বানানোর বিভিন্ন বই এবং নথিপত্র—— এইসব কিছু উদ্ধার করা হয়েছে।

প্রাথমিক তদন্তের পর এনআইএ জানিয়েছে, জঙ্গি হামলার জন্য টাকাপয়সা জোগাড় করছিল এই ৯ জঙ্গি। এছাড়া সম্প্রতি দিল্লি যাওয়ার কথা ছিল তাদের। উদ্দেশ্য ছিল অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র এবং অন্যান্য অস্ত্রশস্ত্র জোগাড় করা। এনআইএ সূত্রে খবর যে ৯ জঙকে আজ গ্রেফতার করা হয়েছে তারা হল মুরশিদ হাসান, ইয়াকুব বিশ্বাস, মোশারফ হোসেন, নাজমুস সাকিব, আবু সুফিয়ান, মইনুল মণ্ডল, লিউ ইয়ান আহমেদ, আল মামুন কমল এবং আতিতুর থমান। এদের সকলকেই আজ আদালতে পেশ করে তাদের পুলিশই হেফাজতের আবেদন জানানো হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here