দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দু’দিন আগে হঠাৎই নবান্ন থেকে রাজভবনে চলে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নের তরফে বলা হয়েছিল সৌজন্য সাক্ষাৎ। সরকারের সঙ্গে রাজভবনের সংঘাতের আবহে সেই সৌজন্যের কথা অনেকেরই হজম হয়নি। তারপরেই জানা যায় দিল্লি যাচ্ছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। শনিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেন ধনকড়। তারপর সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “আমি মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছি, বাংলায় ’১৮-র পঞ্চায়েত আর ’১৯-এর লোকসভা হয়েছিল রক্তরঞ্জিত।১৮-র পঞ্চায়েত আর ’১৯-এর লোকসভা হয়েছিল রক্তরঞ্জিত। একুশের বিধানসভা ভোট যেন অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হয়।”
এদিন রাজ্যপাল আরও বলেন, “বাংলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক কোন জায়গায় পৌঁছেছে তার সম্পূর্ণ ছবি আমি অমিত শাহের কাছে তুলে ধরেছি।” কাকতালীয় হল, শনিবার বিকেলে যখন বর্ধমান শহরে রোড শো করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের আমলে বাংলার আইনশৃঙ্খলা, দুর্নীতি নিয়ে সরব হচ্ছেন বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা, তখন ঠিক একই সময়ে বাংলার আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে নালিশ জানালেন বাংলার সাংবিধানিক প্রধান।

যদিও এদিন রাজ্যপাল আরও একবার স্পষ্ট করে বলেছেন, “রাজনীতি নিয়ে আমার কোনও আগ্রহ নেই। প্রতিটি দল তার নিজের মতো করে তাদের কর্মসূচি করবে বহুদলীয় গণতন্ত্রে সেটাই দস্তুর। কিন্তু আমি সংবিধানের প্রতি দায়বদ্ধ। তা লঙ্ঘিত হলে আমি আমার কাজ করবই।”


বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের বহিরাগত বলা তৃণমূল কার্যত রুটিনে পরিণত করে ফেলেছে। এদিনও ব্যারাকপুরের সভা থেকে প্রবীণ তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেছেন, “রোজ বহিরাগত বিজেপির নেতারা বাংলায় এসে হনুমানের মতো হুপহাপ করে লাফিয়ে পড়ছেন।” এ ব্যাপারে রাজ্যপাল বলেন, “ভাবতে পারেন! মা ভারতীর সন্তানদের বাংলায় বহিরাগত বলা হচ্ছে। জালিয়ান ওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের পর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর নাইট উপাধি ত্যাগ করেছিলেন। তখন কি তিনি ভেবেছিলেন, তাঁরা বহিরাগত? বাংলা সংস্কৃতির মাটি। আজ সেখানে গোটা ব্যবস্থাই বিপন্ন।”

বাংলায় মানুষের মধ্যে ভয়ের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন রাজ্যপাল। সেইসঙ্গে পুলিশের রাজনীতিকরণ নিয়েও তীব্র সমালোচনা করেন রাজ্যপাল। তাঁর কথায়, “রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, চিত্ত যেথা ভয় শূন্য, উচ্চ যেথা শির। আজ বাংলার মানুষের শির লজ্জায় নত হয়ে গিয়েছে আর মনে কাজ করছে ভয়। পুলিশ ডেকে হুমকি দিয়ে বলছে, কেন আপনি কোর্টে গিয়েছেন? এটা পুলিশের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে?”


এমনিতে তৃণমূলের নেতারা প্রায়ই বলেন, ধনকড়ের রাজভবনে থাকা উচিত নয়। তাঁর বসা উচিত মুরলীধর সেন লেনে বিজেপি রাজ্য দফতরে। কেন না, রাজ্যপালের কথা আর বিজেপির সভাপতির কথার মধ্যে কোনও ফারাক নেই। তবে রাজ্যপাল এদিন বুঝিয়ে দেন, তিনি কোনও দিকে ঝোল টেনে কথা বলছেন না। যা করা উচিত তাই করছেন। হাসতে হাসতে তিনি বলেন, “আমি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ৭৫ মিনিট কথা বলেছি। এদিন গৃহমন্ত্রীর সঙ্গেও ৭৫ মিনিট কথা বলেছি!”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here