দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ বাংলায় ভোট পরবর্তী হিংসায় যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের প্রত্যেকের পরিবারকে ২ লাখ টাকার আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷

বৃহস্পতিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বিজেপি হোক বা তৃণমূল, যে দলের নেতারাই রাজনৈতিক হিংসায় প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকের পাশে দাঁড়াবে রাজ্য সরকার।

বৃহস্পতিবার নবান্নে একটি সাংবাদিক বৈঠক করে মমতা জানালেন, মৃতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ২ লক্ষ টাক করে অর্থ সাহায্য করা হবে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, এই সাহায্য সামান্যই। তবে সাহায্য করার ক্ষেত্রে কোনও ভেদাভেদ করা হবে না। রাজনৈতিক রং বাড়তি গুরুত্ব পাবে না। মৃত ব্যক্তি বিজেপির কর্মী হোন বা সংযুক্ত মোর্চার কিংবা তৃণমূলের— প্রত্যেকের পরিবার এই সরকারি অর্থ সাহায্য পাবেন।

বৃহস্পতিবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয় সাংবাদিক বৈঠক করেন মমতা। সেখানেই রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘গত কয়েকদিনে হিংসার ঘটনা অত্যন্ত বেড়ে গিয়েছে। গত ৩ মে পর্যন্ত রাজ্যে নির্বাচনী আচরণবিধি জারি ছিল। তারপর থেকে এই ঘটনাগুলি ঘটেছে ।’’ ভোট পরবর্তী হিংসায় শীতলখুচি, মাথাভাঙা, কেতুগ্রামে গত কয়েকদিনে –

তৃণমূল কর্মীদের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। অন্যদিকে, দক্ষিণ ২৪ পরগণার সোনারপুর এবং পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে ভোট পরবর্তী হিংসায় বিজেপি কর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিজেপিও। বৃহস্পতিবারের বৈঠকে মমতা বলেন, ‘‘মোট ১৬ জন মারা গিয়েছে বলে খবর আছে আমার কাছে। এর মধ্যে কিছু বিজেপি, কিছু তৃণমূল এবং একজন সংযুক্ত মোর্চার কর্মীরও মৃত্যু হয়েছে। এঁদের প্রত্যেকের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে অর্থ সাহায্য করবে রাজ্য সরকার।’’মমতা বলেন, ‘‘এই অর্থ সাহায্য সামান্যই। তবে তা দেওয়া হবে, ধর্ম, বর্ণ এবং রাজনৈতিক দল নির্বিশেষে।’’

রাজ্যে হিংসা ছড়ানোর জন্য দায়ী বিজেপি, এদিন এমনটাই দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতির জন্য বাংলায় বন্ধ যাবতীয় মিটিং মিছিল। তা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রীরা কেন বাংলায় আসছেন? প্রশ্ন মমতার। এদিকে ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনায় বাংলা ৪ সদস্যের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এদিন ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যখন রাজ্যে টিকা শেষ হয়ে যায়, অক্সিজেন শেষ হয়ে যায়, ওষুধ শেষ হয়ে যায়, হাথরাসের মতো নৃশংস ঘটনা ঘটে তখন কোনও প্রতিনিধি দল রাজ্যে আসে না। যাঁরা বিশেষ বিমান, বিমানে রাজ্যে প্রবেশ করবেন তাঁদের প্রত্যেকের বাধ্যতামূলকভাবে করতে হবে আরটিপিসিআর টেস্ট। কেন্দ্রীয় নেতা মন্ত্রীদের ক্ষেত্রেও লাগু হবে একই নিয়ম, জানান মুখ্যমন্ত্রী।

এদিকে ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনা কড়া হাতে দমন করা জন্য আগেই প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি জানান, যে দলের কর্মীরাই হিংসার ঘটনায় যুক্ত থাকবে তাঁদের শাস্তি দেওয়া হবে। এদিকে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রত্যেক হাসপাতালে ৪০ শতাংশ বেড বৃদ্ধি করা হবে, জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, রাজ্যে অক্সিজেনের ঘাটতি মেটাতে মেডিক্যাল কলেজে তৈরি হবে অক্সিজেন প্লান্ট।

এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কোচবিহারে গুণ্ডামি একটু বেশি হচ্ছে। আর এই গুন্ডামিতে উস্কানি দিচ্ছে বিজেপি উদয়নের হাত ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এদিন রাজ্যপালকে তীব্র কটাক্ষ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘রাজ্যপালের কোনও কাজ নেই, সারাদিন টুইট করেন। ওনার সব মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া দিতে পারব না।’পাশাপাশি বিজেপি ফেক ভিডিয়ো ছড়াচ্ছে, বদনাম করার চেষ্টা করছে, জানান মমতা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here