দেশের সময়ঃচলতি মাসেই দেশের পাঁচটি রাজ্যে বিধানসভার নির্বাচন শুরু হচ্ছে। আগাম জনমত সমীক্ষায় যে তথ্য উঠে এসেছে, তাতে রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশ তাদের হাতছাড়া হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা। এমন কি ছত্রিশগড়ের অবস্থাও অনুকুলে নয়। তার উপর রাফেল কাণ্ড থেকে সিবিআই নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিরোধীদের নাগাড়ে রাজনৈতিক আক্রমণে দিশেহারা প্রধানমন্ত্রী থেকে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। এমতাবস্থায়, আগামী লোকসভা ভোটে আসন বাড়ানোর লক্ষ্যে পশ্চিমবঙ্গকে পাখির চোখ করে এগোতে চাইছে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। ফলে, রাজ্য দলের একাংশের বিরোধিতা সত্ত্বেও মুকুল রায়কে লোকসভা নির্বাচন পরিচালনার মুখ্য দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে। দায়িত্ব পেয়েই মুকুল রায় রাজ্যের প্রতিটি বুথে সংগঠন বৃদ্ধির কাজে নজর দিয়েছন ৷ ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে রথযাত্রার কর্মসূচি সফল করতে ইতিমধ্যেই দলের রাজ্য নেতৃত্ব বৈঠক করেছেন। সম্প্রতি, মধ্যকলকাতায় কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেননের উপস্থিতিতে দু’দিন ব্যাপী সংখ্যালঘু সেলের প্রশিক্ষণ শিবির অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে সংখ্যালঘু এলাকায় কেন্দ্রীয় সরকারের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের স্বার্থে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তার প্রচার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মেননের উক্তি, ঝোপড়ি ঝোপড়ি মে যা কে খোপড়ি খোপড়ি মে ইনজেকশন দেনা হ্যায়। আসলে বিজেপি সম্পর্কে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মনে যে উৎকণ্ঠা রয়েছে, তা তাদের মহল্লায় গিয়ে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির সংখ্যালঘুদের স্বার্থে কাজের নমুনা তুলে ধরতে হবে। অর্থাৎ , একদা হিন্দুত্ববাদী বিজেপিতে সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্ককে সেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হত না। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এবার উত্তরপ্রদেশের মডেলকে বাংলায় কাজে লাগাতে চাইছে বঙ্গ বিজেপির থিংক ট্যাঙ্ক। অন্যদিকে, বুদ্ধিজীবীদের সমর্থন আদায়ে চলতি মাসেই রাজ্যের ছয়টি জায়গায় সভা করতে চলেছে দলের বুদ্ধিজীবী সেল। কলকাতা, হাওড়া, কাঁথি, ঘাটাল,বর্ধমান এবং উত্তর ২৪পরগনার বারাকপুরে৷ বুদ্ধিজীবী সেলের আহ্বায়ক পঙ্কজ রায় বলেন, রাজ্যে শিল্পের দৈন্যদশা, শিক্ষাক্ষেত্রে নৈরাজ্য, আইন-শৃঙ্খলার ক্রমা বনতি এসব নিয়েই আলোচনা হবে। ইতিমধ্যে বারাকপুরের সভায় বুদ্ধিজীবীদের দলে টানতে উদ্যোগ শুরু করে দিয়েছে সেলের সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা। আগামী লোকসভা নির্বাচনে মুকুল রায়ের নেতৃত্বে এভাবেই বিজেপি তাদের ভোট ব্যাঙ্ককে সংগঠিত করতে চলেছে। উত্তর ২৪ পরগনায় ঠাকুরবাড়ির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বকে মাথায় রেখে, উদ্বাস্ত সমস্যার সমাধানকে গুরুত্ব দিয়ে মতুয়া সম্প্রদায়ের একাংশকে নিজেদের পক্ষে আনতে অনেকটাই সফল হয়েছে জেলা নেতৃত্ব। কিছুদিন আগে বনগাঁ মহকুমায় তাদের সভায় মতুয়াদের উপস্থিতি নেতৃত্বকে অক্সিজেন জুগিয়েছে। বিজেপি এই জেলার পাঁচটি আসনের মধ্যে দমদম, বারাসত ও বনগাঁর উপর বিশেষ জোর দিচ্ছে। দমদম বা বারাসত থেকে মুকুল রায় প্রার্থী হতে পারেন। কারণ, এই জেলায় মুকুলবাবুর নিজস্ব ভিত আছে। তিনি প্রার্থী হলে, বহু তৃণমূল কর্মী ছাড়াও বাম এবং কংগ্রেসর নিচুতলার সমর্থনও জোগাড় করতে অসুবিধা হবে না, এমনই অভিমত বিজেপির জেলা নেতৃত্বের একাংশের। এককথায় আগামী লোকসভা ভোটে রাজ্যের শাসক দলকে বেগ দিতে সবরকম ভাবে রাজনৈতিক ঘুঁটি সাজাচ্ছে মুকুল রায়ের নেতৃত্বে গেরুয়া শিবির।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here