দেশের সময়,বনগাঁ: বনগাঁর পুরসভার প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার পর থেকেই এক প্রকার ঘরছাড়া পুরসভার ১২ জন কাউন্সিলর, তারা পুরসভাতেও আসছেন না। এই কারণে পুরসভার উন্নয়ন মূলক কাজ আটকে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তাদের বিরুদ্ধে নিখোঁজের অভিযোগও দায়ের করেছিলেন কিছুদিন আগে বনগাঁ পৌরসভার প্রধান শংকর আঢ‍্য ৷ বনগাঁ পুলিশ জেলার সুপারের কাছে লিখিত আকারে নিখোঁজ কাউন্সিলরের নাম করে একটি চিঠিও পাঠিয়ে ছিলেন তিনি৷

এরপরই বনগাঁর রাজনৈতিক চিত্রটা ১৮০ডিগ্রী ঘুরে যায়! তৃণমূল ছেড়ে দিল্লিতে গিয়ে মুকুল রায় এবং দেবদাস মন্ডলের হাতধরে,বিজেপিতে যোগ দেন বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক সহ বিদ্রোহী এক ডজন কাউন্সিলরএই খবর প্রচার হতেই বনগাঁয় চাঞ্চল্য ছড়ায়৷ বাড়তে থাকে উত্তেজনার পারদ৷ বনগাঁর পুরসভার প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনে,বড় ভাঙনের চেষ্টায় কোন খামতি রাখতে নারাজ বিজেপি শুরু হয় বিক্ষোভ মিছিল, পাল্টা মিছিল করে প্রতিবাদ করতে শুরু করে তৃণমূল ও৷হুঙ্কার পাল্টা হুঙ্কারে শান্ত ইছামতীর শহর বনগাঁ উত্তাল হচ্ছিল বেশ কিছুদিন ধরেই৷ পুলিশ,প্রশাসনও তীক্ষ্ণ নজর রেখেছে উভয় পক্ষের দিকেই।তারই মধ্যে বিপত্তি ! শুরু হল বোমাবাজি.. কি এমন ঘটল?

রবিবার রাত প্রায় ১:৩০ মিনিট নাগাদ বনগাঁর শিমুলতলায় ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের বাড়িতে হঠাৎই শুরু হয় বোমাবাজি,সাথে ইট বৃষ্টি,ভয়ে কাউন্সিলর এর স্ত্রী এবং পুত্র কোন ক্রমে দরজা জানাল বন্ধ করে প্রাণে বাঁচেন বলে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন কাউন্সিলর হিমাদ্রী মন্ডলের স্ত্রী চম্পা মন্ডল৷তিনি সংবাদ মাধ্যমকে জানান তাঁর স্বামী সদ্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেছে বলেই তৃণমূলের গুন্ডা বাহিনী এভাবে বোমাবাজি করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে৷

বোমাবাজির কথা জানতে পেরে সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন বিজেপির সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি দেবদাস মন্ডল, তিনি বলেন, তৃণমূল দল ত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দেবার ফলেই কাউন্সিলের বাড়িতে হামলা করেছে তৃণমূলের গুণ্ডাবাহিনী, পাশাপাশি তার আরও অভিযোগ অন্য যে কাউন্সিলররা রয়েছেন তাদেরও জীবনহানির আশঙ্কা রয়েছে,যে কোন সময় বিদ্রোহী কাউন্সিলররা খুন হয়ে যেতে পারেন বলে আশঙ্কা হচ্ছে৷সোমবার এই মর্মে এসপি অফিস ঘেরাও সহ বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে বিজেপির পক্ষ থেকে৷

সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বনগাঁ পুরসভার পুরপ্রধান শঙ্কর আঢ্য দেশের সময় ‘কে জানান তৃণমূল এই সংস্কৃতি বিশ্বাস করে না৷ এসব বিজেপির বাইক বাহিনীর কাজ যারা,রাতের অন্ধকারে বনগাঁ শহরে ঘুরছে এবং শান্ত বনগাঁকে অশান্ত করে সাধারন মানুষকে

দুর্ঘটনার মধ্যে ফেলতে চাইছে নিজেদের স্বার্থে।সম্পূর্ণ ভাবে বিজেপির চক্রান্ত রয়েছে এর পিছনে৷ যেমন ভাবে কিছুদিন আগে টোটো চালকদের কে কাজে লাগিয়েছিল কাটমানি আন্দোলনের নামে। জলের মতো পরিষ্কার হয়ে গেছে এখন ওই আন্দোলন টাও বিজেপির চক্রান্ত ছিল৷ বোমাবাজির ঘটনাটাও পুলিশ প্রশাসন দ্বায়িত্ব নিয়ে চক্রান্তের মূল পান্ডাকে ধরে সাধারন মানুষকে স্বস্তি দেবে দ্রুত।

বনগাঁর মানুষ যে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন তা খুবই স্পস্ট বোঝা যাচ্ছে দিনের বেলাতেও যশোর রোডে খুববেশি মানুষের যাতায়াত নেই৷ধুকছে ব্যাবসায়ীরাও৷ বনগাঁর প্রাণ কেন্দ্র বাটামোড় যেন শশ্মনে পরিনত হয়েছে।

দেখুন ঘটনার ভিডিও:

ছবি তুলেছেন – দীপ বিশ্বাস।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here