দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ আকস্মিকভাবে প্রয়াত হলেন চিত্রসাংবাদিক রণজয় রায়। সবার মন জয় করে তাঁর পরিচিতি ছিল শুধু ‘‌‌রনি’‌ নামে। শুক্রবার দুপুরে আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসার বিশেষ সুযোগ মেলেনি। বিকেলে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন রনি। তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৭ বছর।


রনির প্রয়াণে এদিন গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক শোকবার্তায় তিনি বলেছেন, ‘বিশিষ্ট চিত্র সাংবাদিক রণজয় রায়ের (‌রনি)‌ মৃত্যুতে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। আজ কলকাতায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে। বয়স হয়েছিল ৫৭ বছর। তিনি আজকাল পত্রিকার ক্রীড়াবিভাগের সঙ্গে প্রায় ২৫ বছর যুক্ত ছিলেন। তার আগে কাজ করেছেন ভারতকথা পত্রিকায়। তাঁর মৃত্যুতে চিত্র সাংবাদিকতার জগতে বিশেষ শূন্যতার সৃষ্টি হল। আমি রণজয় রায়ের পরিবার, পরিজন ও অনুরাগীদের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি’

নয়ের দশকের শুরুতে ‘‌আজকাল’‌–‌এ যোগ দেন রনি। বিনোদন বিভাগে দীর্ঘদিন যুক্ত থাকার পর যোগ দেন ক্রীড়াবিভাগে। আমৃত্যু তিনি ক্রীড়াবিভাগের সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন। গত কয়েকমাস অসুস্থ ছিলেন। অফিসেও আসতে পারেননি। কিন্তু তার মধ্যেও ছবি তুলে পাঠাতেন অফিসে। গতবছর বিশ্বকাপ ক্রিকেট কভার করতে ইংল্যান্ড গিয়েছিলেন। অত্যন্ত ঘনিষ্ঠতা ছিল ক্রিকেট, ফুটবল, হকি, টেনিস–‌সহ আপামর ক্রীড়াজগতের সঙ্গে।

বিনোদন জগতের সঙ্গেও ছিল ব্যক্তিগত সম্পর্ক। সহকর্মীদের মধ্যে প্রবল জনপ্রিয় রনির শখ ছিল, পরিচিতদের অসতর্ক মুহূর্তের ছবি তুলে উপহার দিয়ে তাঁদের চমকে দেওয়া। 
চার বছর আগে নিঃসন্তান রনি হারিয়েছিলেন স্ত্রী পিঙ্কিকে। তারপর থেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। কাজে ডুবে গিয়ে সেই শোক ভুলে থাকার আপ্রাণ চেষ্টা করতেন। রনির বাবা বিজয় রায়ও বিনোদন জগতের খ্যাতনামা সাংবাদিক ছিলেন। সর্বক্ষণ হাসিখুশি রনি নিজগুণেই সবার অত্যন্ত প্রিয় ছিলেন। ছোট–‌বড়, সিনিয়র–‌জুনিয়র ভেদাভেদ না রেখে নিমেষের মধ্যে সবার সঙ্গে মিশে যেতেন।

রক্ত চাই, অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করতে হবে, হাসপাতালে বেডের ব্যবস্থা করতে হবে— মাঝরাতেও কেউ কোনও দরকারে রনিকে ফোন করলে তিনি পাশে দাঁড়াননি, এমন হয়নি। পেশায় চিত্রসাংবাদিক রনির নেশা ছিল পরোপকার। তাঁর আকস্মিক মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ বিনোদন, ক্রীড়া এবং সাংবাদিকজগৎ।‌ 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here