দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ দিন কয়েক আগেই শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে। তবে সেরেও উঠছিলেন বলে জানা গেছিল, শেষমেশ আর শেষরক্ষা হল না। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাত ২টো নাগাদ হার্ট অ্যাটাকে মারা গেলেন বিখ্যাত কোরিওগ্রাফার সরোজ খান। বলিউডের তো বটেই, তাঁর খ্যাতি বিশ্বজোড়া। সরোজ খানের বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। করোনায় আক্রান্ত ছিলেন না ‘মাস্টারজি’।

ইরফান খান, ঋষি কাপুরের মৃত্যু, সুশান্ত সিং রাজপুতের অকালে চলে যাওয়া, ওয়াজিদ খানের অকালমৃত্যুতে এমনিতেই বিষন্নতায় মুড়ে বলিউড। তার মধ্যে সরোজ খানের প্রয়াণ যেন অনেককেই অভিভাবকহীন করে দিল।

দিন কয়েক ধরেই কম-বেশি ভুগছিলেন বয়স্ক নৃত্যশিল্পী। ২০ জুন শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়ে তাঁর। বান্দ্রার গুরু নানক হাসপাতালে ভর্তি করা হয় সরোজ খানকে। শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকায় স্বাভাবিক ভাবেই তাঁর কোভিড-১৯ টেস্ট করা হয়। সেই টেস্টের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছিল। স্বস্তি পেয়েছিলেন সকলেই।

চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, মূলত ঠান্ডা লাগার জন্যই তাঁর শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দিয়েছিল। ২৪ জুন পরিবারের তরফে জানানো হয়, পর্যবেক্ষণে থাকলেও তাঁর অবস্থার উন্নতি হয়ছে। তাঁকে দু’-তিন মধ্যেই ছেড়ে দেওয়া হবে বলেও জানা যায়।

কিন্তু তা আর হল না। বান্দ্রার হাসপাতালেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন সরোজ খান। বৃহস্পতিবার রাতে হার্ট !টাক হয় তাঁর, আর ফেরানো গেল না। প্রায় চার দশক ধরে বলিউডের সঙ্গে জুড়ে ছিলেন তিনি। দু’হাজারেও বেশি গানে কোরিয়োগ্রাফি করেছেন। তিন বার ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ডও জিতেছিলেন। বলিউডের খুব কম শিল্পীই হয়তো রয়েছেন, যিনি একবার অন্তত সরোজজির কোরিওগ্রাফিতে কাজ কাজ করেননি।

শুধু সফল শিল্পীদের কাজ করাই নয়, একটা বড় সময় জুড়ে তাঁরই হাত ধরেই উঠে এসেছিলেন বলিউডের অনেক তারকা। কারও কারও নাচকে তো রীতিমতো ইতিহাসের পর্যায়ে পৌঁছে দিয়েছিলেন তিনি। ‘ডোলা রে’ গানের ওই অসাধারণ কোরিওগ্রাফি,  ‘ধক ধক করনে লাগা’ গানের সঙ্গে ওই অনবদ্য সাহসী স্টেপস, ‘হাওয়া হাওয়াই’ গানের সঙ্গে নতুনত্বের মিশেল– সবেতেই তাঁর শিল্পকীর্তি অক্ষয়।

গত বছরেও করণ জোহরের ছবি কলংক-এ তাঁর কোরিওগ্রাফিতে শেষ নাচটি নেচে আসমুদ্র হিমাচল হিল্লোল তুলেছেন মাধুরী দিক্ষীত।

সরোজ খানের পরিবারে রয়েছেন তাঁর স্বামী, ছেলে ও দুই মেয়ে। তাঁর ছোট মেয়ে সুকন্যা জানিয়েছেন, মায়ের করোনা টেস্ট নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছিল আগেই। তবে ঠান্ডা লেগে তাঁর শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা হচ্ছিল। তবে সম্প্রতি তিনি চিকিৎসায় অনেকটাই সুস্থ বোধ করছিলেন। আগামী দু’এক দিনের মধ্যেই তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার কথা হচ্ছিল। তার আগেই সব শেষ হয়ে গেল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here