দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ ফের নন্দীগ্রামেরই প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী। প্রথম নয়, তবুও প্রথম। হলদিয়ায় জেলা শাসকের অফিসে গিয়ে নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেশ করলেন শুভেন্দু অধিকারী। এতদিন তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে এই কেন্দ্র থেকেই লড়েছেন শুভেন্দু। এই প্রথম পদ্ম পতাকায় লড়ছেন নন্দীগ্রামের প্রাক্তন বিধায়ক। একুশের ভোটের এপিসেন্টার নন্দীগ্রামে নজর গোটা রাজ্য তথা জাতীয় রাজনীতির। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর এই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীর মনোনয়ন জমা পড়ল হলদিয়া মহকুমা শাসকের দফতরে। শুক্রবারই মনোনয়ন জমা দেন সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী মীনাক্ষি মুখোপাধ্যায়ও।

এদিন হলদিয়া মঞ্জুশ্রী মোড়ে সভা করেন শুভেন্দু। সেখানে তিনি বলেন, “আগে কংগ্রেসের সঙ্গে কমিউনিস্টদের লড়াই ছিল। তারপর তৃণমূলের সঙ্গে লড়াই ছিল কমিউনিস্টদের। আর এখন ভারতীয় জনতা পার্টির সঙ্গে বাকি সবার লড়াই। নন্দীগ্রামে সিপিএমের প্রার্থী কে ঠিক করে দিয়েছে? তৃণমূল!” প্রসঙ্গত, হটস্পট নন্দীগ্রামে সিপিএম প্রার্থী করেছে যুবনেত্রী মীনাক্ষি মুখপাধ্যায়কে। তিনি কুলটির মেয়ে। এদিন তিনিও মনোনয়ন জমা দিয়েছেন।

তৃণমূল বলছে, সিপিএমের হার্মাদরাই বিজেপির ওস্তাদ হয়েছে। আসলে লড়াই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বাকি সবার। বাম-কংগ্রেস বলছে, তৃণমূল আর বিজেপির মধ্যে কোনও ফারাক নেই। ওরা হচ্ছে ‘বিজেমূল।’ বিজেপি এখন প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেসীদের দল। আর শুক্রবার মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার আগে নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী বললেন, সেখানকার সিপিএম প্রার্থী কে হবেন তা তৃণমূল ঠিক করে দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, প্রথমে জানা গিয়েছিল সংযুক্ত মোর্চার শরিক হিসেবে আব্বাসের দল আইএসএফ নন্দীগ্রামে প্রার্থী দেবে। কিন্তু পরে আব্বাসরাই বলেন, তাঁরা সেখানে লড়ছেন না, বামেরা লড়বে। দেখা যায় সিপিএম সেখানে প্রার্থী দিয়েছে। অনেকের মতে, আব্বাসরা নন্দীগ্রামে প্রার্থী দিলে সংখ্যালঘু প্রার্থী দিত। কিন্তু সিপিএম কোনও সংখ্যালঘু মুখকে দাঁড় করায়নি। তাঁদের মতে সংখ্যালঘু প্রার্থী দিলে তা তৃণমূলের ভোটে ভাগ বসাত। তা হয়নি দেখেই কেউ কেউ মনে করছেন একটা বোঝাপড়া হয়ে থাকতে পারে। যদিও বামেরা এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।

শুভেন্দু এদিন আরও বলেন, “তৃণমূলের মঞ্চে বসে রয়েছে ত্বহা সিদ্দিকি। আর আব্বাস সিদ্দিকি বসে রয়েছে সিপিএমের মঞ্চে। কিন্তু আমাদের মঞ্চে এসব কেউ নেই।” এদিনও চিটফান্ড, শিল্পে বন্ধ্যাদশা, দুর্নীতি, কয়লা-গরু পাচার নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানান এই বিজেপি নেতা। ডাক দেন, পিএম কিষান থেকে আয়ুষ্মান ভারত—সমস্ত প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বাংলায় দরকার ডবল ইঞ্জিন সরকার।


এদিন শুভেন্দুর সঙ্গে মনোনয়ন জমা দেন হলদিয়ার প্রার্থী তাপসী মণ্ডলও। তাপসী গতবার সিপিএম বিধায়ক ছিলেন। ১৯ ডিসেম্বর শুভেন্দুর সঙ্গেই তিনি যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। এবার হলদিয়াতে তাঁকে প্রার্থী করেছে গেরুয়া শিবির। এদিন শুভেন্দুর মনোনয়ন জমা দেওয়ার মিছিল ও সভায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি এবং ধর্মেন্দ্র প্রধান। ব্যাপক জমায়েতের মিছিল নিয়ে হলদিয়া মহকুমা শাসকের দফতরের উদ্দেশে মিছিল নিয়ে যান শুভেন্দু। তার আগে এদিন নন্দীগ্রামের সিংহবাহিনী মন্দিরে পুজো দেন এই বিজেপি নেতা। জানকীনাথ মন্দিরে যজ্ঞও সারেন। মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার আগে কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে শুভেন্দু বলেন, “নদীগ্রামে মাননীয়াকে হারাবই। চিন্তার কোনও কারণ নেই।”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here