দেশের সময় ওয়েবডেস্কঃ পুজো মিটে গিয়েছে বর্ষাও বিদায় নিয়েছে, কিন্তু বিপর্যয় কাটেনি বাংলায়। প্রবল বৃষ্টিতে উত্তরবঙ্গের পরিস্থিতি ক্রমাগত খারাপ হচ্ছে। বুধবার সকালে নতুন করে দার্জিলিং জেলার ধোতরে, মানেভঞ্জন, রিমবিক, গোক, বিজনবাড়ি এলাকা থেকে ধসের খবর এসেছে। বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে বেশ কয়েকটি বাড়ি। জলে ডুবেছে জলপাইগুড়ির বহু এলাকা। সব মিলিয়ে বিপর্যস্ত জনজীবন। বুধবারও জলপাইগুড়ি, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস।

কলকাতায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস দিল আলিপুর আবহাওয়া দফতর। হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, আগামী কয়েক ঘণ্টায় কলকাতা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হুগলি, পূর্ব বর্ধমান, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, মালদা, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হবে। বৃহস্পতিবার থেকে বৃষ্টি কমবে।

করোনার পর এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে পাহাড়ে পর্যটন ব্যবসা ক্ষতির মুখে । রাস্তাঘাট থেকে নিয়ে যোগাযোগের  সমস্ত দিকগুলো বন্ধ।

ধসের কারণে শিলিগুড়ি থেকে সিকিম ও কালিম্পংয়ে যাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে গিয়েছে৷ কার্যত,যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন৷ ধসের কারণে, শিলিগুড়ি-সিকিম ও শিলিগুড়ি-কালিম্পং রুটে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে বলে শিলিগুড়ি পুলিশ জানিয়েছে৷
 


 

স্থনীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার দুপুরের পরে ২৯ মাইলের ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের কাছে বড় ধসে নামে৷ যা মেরামত করতে দীর্ঘক্ষণ সময় লাগবে৷ শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে ভারী পণ্যবাহী গাড়ি গুলিকে শিলিগুড়ি থেকে ওই দুই রুটে না এগনোর বার্তা দেওয়া হয়েছে৷ ছোট গাড়ি গুলিকে করনেশন ব্রিজ,তিস্তা ও রংপো রুটে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে৷

শুক্রবার থেকে শহরের তাপমাত্রা আরও নামার পূর্বাভাস। হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলোতে শীতের আমেজ মিলবে।

অন্য দিকে, টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত পাহাড়। সেই বৃষ্টির জল নদী দিয়ে বয়ে আসছে উত্তরবঙ্গের তরাই ও ডুয়ার্সে। ফলে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি। ফুঁসছে তিস্তা, তোর্ষা, রায়ডাক, কালজানি, ডায়না।

সোমবার রাত থেকে টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত পাহাড়। বৃষ্টির জেরে বিভিন্ন জায়গায় ধস নেমেছে। কালিম্পং এবং গ্যাংটকগামী ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের কোনও কোনও জায়গা তিস্তার জলে ভেসে গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের এলাকা ছাড়তে নিষেধ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন আশঙ্কা করছে, এ ভাবে বৃষ্টি চলতে থাকলে আরও অনেক জায়গায় ধস নামতে পারে। ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়ক, পাঙ্খাবাড়ি এবং রোহিণী রোড খোলা থাকলেও একাধিক জায়গায় ছোট ছোট ধস রয়েছে। তার প্রভাব পড়েছে সড়ক পরিবহণে।

তিস্তার জলে জলপাইগুড়ির সারদাপল্লি, সুকান্তনগর, মৌয়ামারি, চাঁপাডাঙা, নন্দনপুর, বোয়ালমারি, পাতকাটা প্রভৃতি এলাকা প্লাবিত ৷

এই সব এলাকার বাসিন্দাদের উদ্ধার করে ত্রাণশিবিরে নিয়ে আসা হয়েছে। নদীবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ময়নাগুড়ির দোমহনি ১-এর‌ বাসুসুবা গ্রাম প্লাবিত। মঙ্গলবার রাত থেকেই জলমগ্ন এলাকা পরিদর্শন করছেন জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু ও পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত। গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন তাঁরা। উদ্ধারকাজে নামানো হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে। বালির বস্তা ফেলে নদীবাঁধ রক্ষা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here