দেশের সময় ওযেবডেস্কঃ আজ কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো। শারদ পূর্ণিমায় এই পুজো করে থাকে বাঙালি। উমার কৈলাশ যাত্রার পরেই বাংলার সর্বত্র শুরু কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর তোড়জোড়। মূলত আশ্বিন মাসের শেষ পূর্ণিমা তিথিতে কোজাগরী লক্ষ্মীর আরাধনা করা হয়। ধনসম্পদের দেবী মা লক্ষ্মী সৌভাগ্য এবং শান্তির প্রতীক।

সৌভাগ্য অর্জনের জন্য বাংলার ঘরে ঘরে দেবীর আরাধনা করা হয়। তিথি অনুসারে চলতি বছরে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো দুদিন ব্যাপী রয়েছে। ১৯ থেকে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত এই তিথি। ১৯ তারিখ সন্ধে ৭ টা বেজে ০৩ মিনিটে শুরু হয়ে ২০ অক্টোবর রাত্রি ৮ টা বেজে ২৬ মিনিটে শেষ হবে।

তবে লক্ষ্মীদেবীর আরাধনায় কয়েকটি বিশেষ জিনিসে খেয়াল রাখতে হয়। বলা হয়, দেবী রুষ্ট হলে দুর্ভাগ্য নেমে আসে জীবনে। তাই পুজোর আগে এই নিয়মগুলো মেনে চলুন।  শাস্ত্র অনুসারে, লক্ষ্মীদেবীর আরাধনায় তুলসিপাতা ব্যবহার করতে নেই। তুলসির সঙ্গে শালগ্রাম শিলার অর্থাৎ নারায়ণের বিবাহ হয়। শ্রীলক্ষ্মীও বিষ্ণুপত্নী। তাই তাঁর আরাধনায় তুলসিপাতা ব্যবহার করলে দেবী রুষ্ট হন।

সাদা ফুল অর্পণ করবেন না। লাল ফুল দিয়ে লক্ষ্মীদেবীর পুজো করলে বাড়ির অলক্ষ্মী বিদায় হয়। পুজোর আসনেও সাদা বা কালো রঙের ব্যবহার করা চলবে না। লাল বা গোলাপি রঙের আসন রাখুন। লক্ষ্মীপুজোর প্রসাদে কখনও না বলবেন না। আরাধনার সময় ঢাক-ঢোল-কাঁসর-ঘণ্টা বাজাবেন না। অত্যধিক শব্দ পছন্দ করেন না দেবী। কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর নিয়ম অনুসারে সারা রাত জেগে দেবীর আরাধনা করতে হয়। এদিন রাতে বাড়ির দরজাও বন্ধ করতে নেই। কথিত আছে, কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর দিনে দেবী স্বর্গ থেকে মর্ত্যে আসেন এবং বাড়ি বাড়ি গিয়ে সকলকে আশীর্বাদ করেন। কিন্তু দরজা বন্ধ থাকলে সেই গৃহে প্রবেশ করতে পারেন না তিনি। 

কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর দিনে দেবী ভক্তদের ঘরে পৌঁছে তাঁদের আশীর্বাদ করেন। এই তিথিতে রাত জেগে লক্ষ্মী বন্দনা করলে প্রসন্ন হন দেবী।এমনটাই প্রচলিত ধারণা। হিন্দু পুরাণ অনুযায়ী, কে জাগরিত থেকেই ‘কোজগরী’ শব্দের উৎপত্তি। ভক্তদের বিশ্বাস, যাঁরা আজকের দিনে জেগে দেবীর আরাধনা করেন, তাঁদের ঘরে দেবী অধিষ্ঠান করেন।

বুধবার সকাল থেকেই বাজারে ভিড়ের চিত্র দেখা গিয়েছে মঙ্গলবার নাগাড়ে বৃষ্টির দরুন অনেকেই বাজারমুখী হতে পারেননি। আর তাই বুধবার পুজোর কেনাকাটা করতে বাজারে পৌঁছেছেন অনেকেই। কিছু অঞ্চলে বৃষ্টি হলেও, ছাতা হাতেই ফল কিংবা মিষ্টির দোকানে পৌঁছতে দেখা যায় তিলোত্তমার বাসিন্দাদের। যেহেতু লক্ষ্মীদেবীর ভোগে অনেকেই মাছ রাখেন, তাই মাছের বাজারেও ভিড় ছিল এদিন। ভিড় চোখে পড়েছে দশকর্মা ভান্ডারেও।

উৎসবের মরশুমে জিনিসপত্রের দাম আগুনছোঁয়া। ফলমূল থেকে শাকসবজি, মাছ, মিষ্টি সবকিছুরই দাম বেড়েছে। আসলে পেট্রলের দাম ক্রমশ বাড়তে থাকায় কাঁচা আনাজেরও মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। বিশেষত দ্রুতগতিতে বাড়ছে পেঁয়াজ এবং ভোজ্য তেলের দাম।

কলকাতা সহ দেশের একাধিক শহরে এ ক’দিনের মধ্যে বৃদ্ধি পেয়েছে পেঁয়াজ ও টমেটোর দাম। ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, নাগাড়ে পেট্রপণ্যের দাম বৃদ্ধির ফলেই ওই অবস্থা সবজির। অবশ্য শুধু তাই নয়, গত কয়েকদিন দেশজুড়ে ব্যাপক বৃষ্টি চলায় বেড়েছে পেঁয়াজ-টমেটোর দাম৷ একইসঙ্গে পারদ চড়েছে ভোজ্য তেলের দামেও। মূল্যবৃদ্ধির ক্ষেত্রে বিগত দু’টি লকডাউনের প্রভাব রয়েছে বলে দাবি বিশেষজ্ঞ মহলের।

তবে উৎসবের আমেজ গায়ে মেখে নিয়েছে বাঙালি। সোশ্যাল মিডিয়াতে ইতিমধ্যেই বাড়ির পুজোর ছবি আপলোড করতে শুরু করেছেন নেটিজেনরা। বাদ পড়েননি সেলেবরাও। আলপনা ও আম্রপল্লবে ঘট সাজিয়ে তোলা হয়েছে ইতিমধ্যেই। প্রদীপের আলোয় সাজিয়ে তোলা হয়েছে দেবীর আসন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here